Advertisement
১৮ মে ২০২৪

প্রায় দু’লক্ষ টাকা জালনোট সহ ধৃত

জাল নোট কারবারের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ফেরার পথে আক্রান্ত হলেন পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের গাড়ি লক্ষ করে ইঁট পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের কালিয়াচক থানার মহব্বতপুর গ্রামে। পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা গাড়ি থেকে নেমে তাড়া করলে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৬ ০২:১৯
Share: Save:

জাল নোট কারবারের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ফেরার পথে আক্রান্ত হলেন পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের গাড়ি লক্ষ করে ইঁট পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের কালিয়াচক থানার মহব্বতপুর গ্রামে। পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা গাড়ি থেকে নেমে তাড়া করলে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার পরিপেক্ষিতে গোলাপগঞ্জ ফাঁড়িতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম অসেফ আলি। তিনি গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ির মহব্বতপুর গ্রামেরই বাসিন্দা। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ১ লক্ষ ৯২ হাজার ৫০০ টাকার জাল নোট। রবিবার ধৃতকে হেফাজতে চেয়ে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করেছে পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, জালনোট সমেত এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাতের অন্ধকারে কিছু দুষ্কৃতী পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের লক্ষ করে ইট পাথর ছোড়ে। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের খোঁজে গ্রামে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

কালিয়াচক থানার গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ির মহব্বতপুর গ্রাম জালনোট পাচারের অন্যতম করিডর। ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের ধারে এই গ্রামটি অবস্থিত। সীমান্ত লাগোয়া এই গ্রামকেই জালনোট পাচারের করিডর হিসেবে ব্যবহার করে কারবারীরা। পুলিশ ও বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, অতি সহজেই এই সীমান্ত কেন্দ্র দিয়ে জালনোট পাচার করা যায়। তারকাঁটার বেড়ার ওপার থেকে জালনোটের প্যাকেট ফেলা দেওয়া হয় এপারে। পরে কারবারীরা সেই নোটগুলি উদ্ধার করে বাজারে ছড়িয়ে দেয়।

নির্বাচন ঘোষণা হতেই মালদহ জেলায় আসে ১৬ কোম্পানির কেন্দ্রীয় বাহিনী। সেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে পুলিশ জালনোট ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে জেলা জুড়ে। এদিন গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে হানা দেয় মহব্বতপুর গ্রামে। ওই গ্রামের বাসিন্দা অসেফ আলির বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করে ওই জালনোট। পুলিশ জানিয়েছে, ১৫৭টি হাজার ও ৭১টি ৫০০ টাকার নোট রয়েছে। অসেফ আলির বাড়ির ছাদ থেকে ওই নোট গুলি উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অসেফ আলি এলাকায় দিন মজুর হিসেবে পরিচিত। তাঁর এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। প্রত্যেকেই গোলাপগঞ্জ হাই স্কুলে পড়াশোনা করে। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা অসেফকে গ্রেফতার করে গাড়িতে তুলে নেয়। সেই সময় জনা চল্লিশের এক দুষ্কৃতী দল পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের গাড়ি লক্ষ করে ইট পাথর ছোড়ে বলে অভিযোগ। পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা গাড়ি থেকে নেমে তাড়া করলে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ জানিয়েছে, রাতের অন্ধকারে হামলা চালায় কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। নাম না করে গোলাপগঞ্জ ফাঁড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ।

এ দিনের ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা মুখ খুলতে চাননি। দুপুরে অসেফকে পাঁচ দিনের হেফাজতে চেয়ে জেলা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক দু’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। অসেফকে ফাঁসানো হয়েছে বলে আদালতে দাবি করেন তার আইনজীবী সুদীপ্ত গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের গ্রেফতার করতে না করে পুলিশ নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার করছে। আমার মক্কেলকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’’ এই বিষয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তথা প্রধান তৃণমূলের মতিউর রহমান বলেন, ‘‘শুনেছি পুলিশ জাল নোট সমেত আমাদের গ্রামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। রাতে গোলমালও হয়েছিল বলে শুনেছি। আর ওই ব্যক্তি জালনোট কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিল কি না তা আমরা জানতাম না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Malda fake currency
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE