উচ্ছ্বাস: বরফে হুটোপুটি পর্যটকদের। নিজস্ব চিত্র
মা-বাবার হাত ধরে খুদে। পাশাপাশি হাত ধরে তরুণ-তরুণী। সবারই লক্ষ্য এক। ছুঁয়ে দেখা বরফ।
শুক্রবার বিকেলে বরফ পড়ার খবর শোনার পর থেকে সকলে যেন প্রহর গুনছিলেন। শনিবার সকাল হতেই তাই সকলে বেরিয়ে পড়েছেন লাভা-রিশপের দিকে। সেই দলে পর্যটক যেমন কম নয়, তেমনই ডুয়ার্সের স্থানীয় বাসিন্দারাও শনিবার গাড়ি ভাড়া করেই ছুট দিয়েছেন লাভার রাস্তায়। কিন্তু শুক্রবারের মেঘলা আবহাওয়া কেটে গিয়ে শনিবার সকাল থেকে লাভা জুড়ে ঝকঝক করছে রোদ। আর তা দেখেই বরফ বুঝি আর দেখা হল না ভেবে যখন মুষড়ে পড়েছেন সকলে, তখনই ত্রাতার ভূমিকায় এগিয়ে এলেন লাভার স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী এবং গাড়ির চালকেরা। ছ’মাইলের পথ দিয়ে রিশপের দিকে উঠলেই বরফ রয়েছে বলেও জানিয়ে দেন তাঁরাই। সেই পথ ধরেই চলল ভিড়।
খাড়াই পাহাড় দিয়ে ঘেরা পাথুরে পথ দিয়ে লাফাতে লাফাতে গাড়ি একের পর এক উঠে গিয়েছে বরফের আশায়। অন্য সময় এমন রাস্তায় খানিক আতঙ্কেই থাকেন পর্যটকেরা। এ দিন অবশ্য উদ্বেগের লেশমাত্রও ছিল না। রাস্তার ধারে চাপ চাপ বরফ দেখে তখন নবীন-প্রবীণ সকল পর্যটকদের মধ্যেই যেন আবার শৈশব জেগে উঠেছে। বরফ জমে থাকায় গাড়ি আর উঠছে না। হাঁটতে গিয়ে বারবার বরফের পিছল পথে পড়ে যাচ্ছেন অনেকেই, আবার উঠছেন। কিন্তু মুখ থেকে হাসি যাচ্ছে না। জীবনে এমন অভিজ্ঞতা আর কোনওদিন কোথাও হবে না বলেই জানালেন কলকাতা থেকে আসা চিকিৎসক অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়। জলপাইগুড়ির সোনাউল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিতাই লস্কর শুক্রবার রাতে টিভিতে বরফ পড়ার খবর দেখেই লাভাতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। তিনি বলেন, “জীবনে বরফ দেখার সৌভাগ্য হয় নি, তাও জেলার কাছের এলাকা রিশপে যে বরফ পেয়ে যাব তা ভাবতেই পারি নি।”
বরফের টানে পর্যটকদের ঢল নামায় খুশি হোটেল মালিকরাও। লাভার হোটেল মালিক সুরজিৎ পাত্র, বরুণ দন্ডপাটেরা বলেন, ‘‘আমাদেরও ইচ্ছে করছে দু’পা ফেলে রিশপের পাইন বনের ধারে বরফ কুড়োতে, কিন্তু লাভাতে নেমেই আগে পর্যটকদের প্রাতরাশ আর তারপর দুপুরের খাবার জোগাড়ের ব্যস্ততা এতটাই যে আমাদের কোনও ফুরসত নেই। একদিনের বরফ ব্যবসায় নতুন গতি এনে দিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy