Advertisement
E-Paper

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে প্রথম জনসভায় কী বললেন মৌসম?

দলবদলের পরে ঘরের মাঠে প্রথম সভা। সেখানে দাঁড়িয়ে মৌসম বেনজির নুর প্রশংসা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপি-বিরোধিতার।

জয়ন্ত সেন

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:০৯
পয়লা: তৃণমূলে যোগদানের পর প্রথম জনসভায় মৌসম নুর। মালদহে বুধবার। ছবি: তথাগত সেন শর্মা

পয়লা: তৃণমূলে যোগদানের পর প্রথম জনসভায় মৌসম নুর। মালদহে বুধবার। ছবি: তথাগত সেন শর্মা

দলবদলের পরে ঘরের মাঠে প্রথম সভা। সেখানে দাঁড়িয়ে মৌসম বেনজির নুর প্রশংসা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপি-বিরোধিতার। সমালোচনা করলেন কংগ্রেসের তৃণমূল-বিরোধিতার। আর বরকত গনিখান চৌধুরীর নাম নিলেন মোট একবার।

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে সদ্য মঙ্গলবার মালদহে এসেছেন মৌসম। ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই জনসভা। তা-ও আবার নিত্যানন্দপুরের যে মাঠে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ সভা করেছিলেন, সেখানেই।

এই পাল্টা সভামঞ্চে মমতার বিরাট ফ্লেক্সের সামনে দাঁড়িয়ে বিজেপি-বিরোধিতাকেই নিজের কাজের পক্ষে যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করেন মৌসম। তিনি বলেন, ‘‘আমি কংগ্রেস পরিবারের মেয়ে। দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেস করছি। লোকসভা ভোটে আমি তৃণমূলের সঙ্গে জোট চেয়েছিলাম। দিল্লি গিয়ে বারবার অনুরোধ করি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। তাঁরা বুঝেওছিলেন। তাই তাঁরা মহাজোটকে সমর্থন করেন। কিন্তু প্রদেশ নেতৃত্ব এ কথাটা বুঝতে পারছেন না কেন, জানি না।’’ তাঁর কথায়, ২০০৯, ২০১১ সালে জোট হয়েছিল। ২০১৬-এ সিপিএমের সঙ্গেও জোট হয়। তা হলে এখন বিজেপিকে আটকাতে জোট হবে না কেন? তিনি বলেন, ‘‘এটাই প্রশ্ন ছিল আমার। এ কারণেই তৃণমূলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ তাৎপর্যপূর্ণ হল, মৌসমের মামা, দক্ষিণ মালদহের সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরীও (ডালু) তৃণমূলের সঙ্গে জোটের জন্য সওয়াল করছেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূলে যাবেন না।

মৌসমের কথায়, ‘‘বিজেপিকে আটকাতে পারে একমাত্র তৃণমূলই। দলনেত্রী ধর্মনিরপেক্ষ মনোভাব নিয়ে যেভাবে উন্নয়ন করেছেন সেই উন্নয়নের জোয়ারে বিজেপি কুপোকাত হবে।’’

তবে এ দিনের সভায় ৮ মিনিটের বক্তব্যে মৌসম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে একাধিকবার জয়ধ্বনি করলেও এবং তৃণমূল সরকারের উন্নয়নের তালিকা তুলে ধরলেও, যে পরিবারের তিনি সদস্য, সেই বরকত গনিখানের নাম একবারই মাত্র মুখে এনেছেন।

এই সভা থেকে কংগ্রেসিদের তৃণমূলে আসার ডাক দিলেন মৌসম। তাঁর সুর ধরেই তৃণমূলের মালদহ জেলা পর্যবেক্ষক তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপিকে রুখতে মৌসমের পথ অনুসরণ করুন এই জেলায়।’’ বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে জানান, কোটি কোটি টাকা খরচ করে এই মাঠে বিজেপি শুধু মালদহ জেলাই নয়, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, শিলিগুড়ি, পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ডের পাকুড় বা বিহারের কাটিহার ও পূর্ণিয়া থেকে লোক এনে মাঠ ভরিয়েছে। তাঁরা শুধু মালদহ জেলার ১২টি বিধানসভা এলাকা ও মুর্শিদাবাদ জেলার ফরাক্কা ও সামশেরগঞ্জ বিধানসভা এলাকা, উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার, দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরের একাংশ থেকে লোক এনেছেন। বিজেপিকে সে দিনের সভার চেয়ে দশ গোলে হারিয়েছেন বলেও দাবি করেন। যদিও পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, দু’দিনের ভিড়ই তুল্যমূল্য। প্রকাশ্যে পুলিশ কোনও সংখ্যা জানাতে চায়নি। তবে স্থানীয় মানুষজনের বক্তব্য, অমিতের থেকে এ দিনের সভায় কিছু বেশি লোক হয়েছে।

পরিবহণমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট ঘোষণার অনেক আগেই উত্তর মালদহ আসনের জন্য মৌসম নুরকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তাঁকে এবং দক্ষিণ মালদহ আসনের দলীয় প্রার্থীদের জেতানোর দায়িত্ব সকলের।’’ মালদহ জেলা কংগ্রেসকে ‘সাইনবোর্ড’ আখ্যা দিয়ে, কংগ্রেসকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি জানান, তারা এই মাঠ ভরিয়ে দেখাক।

মৌসমের অভিযোগের জবাবে এ দিন প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্র আবার বলেন, ‘‘তৃণমূলের সঙ্গে জোট করব না বুঝতে পেরেই মৌসম দল ছেড়েছেন। এতে বিজেপিরই সুবিধা। উনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।’’

Meeting Mausam Noor TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy