নোট বাতিল নিয়ে ‘মন্ত্রী’ আন্দোলনে ব্যস্ত থাকবেন। তার জেরেই এ বার বাতিল হল বন দফতরের একাধিক কর্মসূচি। ওই তালিকায় দফতরের আধিকারিক থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে বনবস্তি এলাকার বাসিন্দাদের রান্নার গ্যাস সংযোগ-সহ যাবতীয় উপকরণ বিলির উদ্যোগও।
বন প্রশাসনের অন্দরের খবর, ৮-১১ জানুয়ারি ওই কর্মসূচিগুলির দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়েছিল। প্রতিটি কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকবার কথা ছিল বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মনেরও। অভিযোগ, শেষ মূহূর্তে তিনি দলের কর্মসূচিতে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন জানার পরেই আধিকারিকেরা তারিখ বদলের সিদ্ধান্ত নেন। বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “৯-১১ জানুয়ারি দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশে নোট বাতিল নিয়ে অন্য সব এলাকার সঙ্গে মাথাভাঙাতেও কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিরাও ব্যস্ত থাকবেন। তাই আপাতত কিছু কর্মসূচির তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে নতুন তারিখ জানানো হবে।”
বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, আজ রবিবার ৮ জানুয়ারি, ডুয়ার্সের রাজাভাতখাওয়ায় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার দফতরের আধিকারিক, কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করার কথা ছিল বনমন্ত্রীর। এ জন্য প্রস্তুতিও এগিয়েছিল। কাল সোমবার উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকের সূচি ছিল বিনয়বাবুর। বৈকুণ্ঠপুর ডিভিসনের বোদাগঞ্জে ওই বৈঠকের জন্য অনেককে ফোনে আগাম আমন্ত্রণও জানান হয়। দফতরের এক আধিকারিক জানান, মূলত বন্যপ্রাণ ও জঙ্গল রক্ষা নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সহযোগিতা শুধু নয়, ব্যাপক প্রচারেও জোর দেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। সেই লক্ষ্যেই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। একই কারণে ১১ জানুয়ারি ডুয়ার্সের বক্সায় বনবস্তি এলাকার বাসিন্দাদের রান্নার গ্যাস সংযোগ, সামগ্রী বিলির তারিখও পিছিয়ে দিতে হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো আলোচনা করে নতুন তারিখ হবে।
দল সূত্রের খবর, ৯-১১ জানুয়ারি নোট বাতিল নিয়ে কর্মসূচির নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্ব। ওই নির্দেশ পালনেই বনমন্ত্রী নিজের খাসতালুক মাথাভাঙার নজরুল মঞ্চের সামনে টানা আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অবস্থান, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ চলবে। মাথাভাঙা মহকুমার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে গড়ে এক হাজার সমর্থক রোজ থাকবেন। তাদের যাতায়াতের ব্যবস্থা, খাবার থেকে পানীয় জলের ব্যবস্থাও রাখার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সব নিজের হাতে করতে চাইছেন বিনয়বাবু। রবিবার প্রস্তুতি বৈঠক ডেকেছেন। তাই এদিন সরকারি বৈঠক বাতিল হয়েছে। বন প্রশাসনের অন্দরে অবশ্য এ নিয়ে চাপা গুঞ্জন রয়েছে বলেই খবর। কর্মী, আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকলেও আগাম ডাকা সরকারি বৈঠক বাতিল করা কাঙ্খিত নয়। এতে দফতরের স্বাভাবিক কাজকর্মের ওপরেও খানিকটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বার আশঙ্কাও থেকে যায়।