Advertisement
E-Paper

হাতে হাতে ঘুরছে আধুনিক অস্ত্রও

রাজ্যের শাসক দল নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতেই অস্ত্রে রাশ টানেনি বলে অভিযোগ। অভিযোগ, শাসক দলের চাপেই ওই অস্ত্র উদ্ধারে কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছে না পুলিশও।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ০৭:৩০
ক্ষোভে: ছাত্র গুলিবিদ্ধ হওয়ার জেরে বাসে ভাঙচুর। নিজস্ব চিত্র

ক্ষোভে: ছাত্র গুলিবিদ্ধ হওয়ার জেরে বাসে ভাঙচুর। নিজস্ব চিত্র

কলেজ ছাত্র থেকে যুব তৃণমূলের কর্মী, এমনকী গ্রামের বাসিন্দারের একাংশের হাতেও অস্ত্র ঘুরছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার দিনের বেলা প্রকাশ্যে এক কলেজ ছাত্র গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে ওই অভিযোগ নিয়ে সরব হয়ে উঠেছে বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, একসময় দাগি অপরাধীদের হাতে অস্ত্র থাকত, এখন সেই অস্ত্র হাতে হাতে ঘুরছে। দাবি, তাদের হাতে নাইনএমএম থেকে শুরু করে সেভেন পয়েন্ট সিক্স এমএম পিস্তল রয়েছে।

রাজ্যের শাসক দল নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতেই অস্ত্রে রাশ টানেনি বলে অভিযোগ। অভিযোগ, শাসক দলের চাপেই ওই অস্ত্র উদ্ধারে কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছে না পুলিশও। বিজেপির দাবি, সিতাইয়ে যে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, তা কিছুই নয়। পঞ্চায়েত-নির্বাচনের সময় থেকে ঘনঘন গুলি-বোমা চলেছে। খুনের অভিযোগ থেকে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ঘটনায় ব্যবহার করা অস্ত্রের হদিশ করতে পারেনি পুলিশ।

দু’দিন আগেই সিতাই থেকে ৪টি ওয়ানশটার, ৫টি গুলি, ৬টি ধারালো অস্ত্র, ২৫টি তির, কাটাপাথর, দেশি বোমা এবং ১৮টি বাইক উদ্ধার হয়। ওই ঘটনায় যে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁরা প্রত্যেকেই এলাকায় যুব তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন নুর মহম্মদ প্রামাণিক। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “আরও কোথাও অস্ত্র রয়েছে কি না, দেখা হচ্ছে।”

পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, সিতাইয়ের ঘটনায় রাজনীতি নেই। কিন্তু বিরোধীদের দাবি, এ দিন কোচবিহারে কলেজ ছাত্রকে গুলি করার পিছনেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দ্বন্দ্ব রয়েছে বলে অভিযোগ। কোচবিহার কলেজের কয়েকজন প্রাক্তন ছাত্র ওই ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ। তাঁরা প্রত্যেকেই টিএমসিপি-র কর্মী। গুলিবিদ্ধ মাজিদ আনসারি টিএমসিপি-র কলেজ ছাত্র সংগঠনের নেতা।

বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর হাতেই প্রচুর অস্ত্র রয়েছে। গীতালদহ, ওকরাবাড়ি, মাতালহাট, ভেটাগুড়ি, পুটিমারি থেকে শুরু করে নাজিরহাট, নয়ারহাট সহ কোচবিহার শহর এবং সংলগ্ন এলাকার একাধিক জায়গায় সেই অস্ত্র মজুত রয়েছে। গীতালদহে পঞ্চায়েত ভোটের সময়কালে ১ জনকে খুন করা হয়। ২ জন তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হন।

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিল রঞ্জন রায় বলেন, “কোথায় কার বাড়িতে অস্ত্র মজুত রয়েছে পুলিশ জানবে না, এটা হয় না। আসলে শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকাতেই তাঁদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে।” বিরোধীদের আরও অভিযোগ, সীমান্তের দাগি অপরাধীরা তৃণমূলের আশ্রয়ে রয়েছে। ভোটের সময় তাদের ব্যবহার করে তৃণমূল। বাকি সময়ে অস্ত্র হাতে গোটা সীমান্তে দাপিয়ে বেড়ায় ওই অপরাধীরা।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেন, “বিজেপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাদের মদতেই কিছু অপরাধী এলাকায় অপরাধ সংগঠিত করতে চাইছে। তারাই অস্ত্র মজুত করেছে। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে চাইছে। একটা বড় ষড়যন্ত্র হচ্ছে। পুলিশকে আমরা তা জানিয়েছি।” জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, তারা তৎপরই রয়েছে। গত তিন মাসে ২৫টি আগ্নেয়াস্ত্র জেলায় উদ্ধার হয়েছে। ৫০ জনের বেশি গ্রেফতার হয়েছে।

Cooch Behar Bus Miscreants
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy