উত্তরবঙ্গের ইসলামপুর থেকে চিকিৎসক হতে চেয়ে কলকাতা এসেছিলেন এত তরুণ। কিন্তু ভর্তির হাজারও জটিলতায় শেষে আবেদন ফর্মটি পূরণ করতে পারলেন না নাহিদ আলম। গোটা ঘটনায় বিস্মিত কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু তাঁর পর্যবেক্ষণে বললেন, ‘‘কোনও অদৃশ্য হাত বারবার দরিদ্রদের বিরুদ্ধে কাজ করছে। সিস্টেমের মধ্যে থাকা সেই লোকগুলোই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’’
আদালত সূত্রের খবর, উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর মহকুমার গোয়ালপোখরের বাসিন্দা নাহিদ এ বছর ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা ‘নিট’-এ উত্তীর্ণ হয়ে বজবজের জগন্নাথ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন। রাজ্যের অনুমোদিত বেসরকারি কলেজেটিতে ভর্তির ও পড়াশোনার জন্য মোট ২৫ লক্ষ টাকা ধার্য ছিল। ফর্মে কলেজে টাকা জমা দেওয়ার কথা থাকায় বজবজে আসেন তিনি। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন টাকা জমা দিতে হবে এসএসকেএম হাসপাতালে। বজবজ থেকে কলকাতায় এসে দশ লক্ষ টাকা জমা দিতে গিয়ে জানতে পারেন কোনও চেক নেওয়া হবে না। শুধু ড্রাফটের মাধ্যমে পুরো ২৫ লক্ষ টাকাই দিতে হবে।
আরও পড়ুন:
এককালীন ওই টাকা সঙ্গে সঙ্গে জোগাড় করতে না পারায় তাকে ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এর পর হাই কোর্টে মামলা করেন নাহিদ। তাঁর বাবা তাহির গোয়ালপোখরের কৃষক। নিজের জমি আর বাড়ি বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করার জন্য ব্যাঙ্কের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেখানে দু’দিন পরে তাঁকে বাকি টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁর আবেদনে কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ। এই মামলায় বিচারপতি বসুর পর্যবেক্ষণ, ‘‘চাষির বাড়ির ছেলের স্বপ্ন এভাবে নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। আগামী দিনে এই ছাত্র দেশের নামকরা চিকিৎসক হতে পারেন। সিস্টেমে সাহায্যের আশ্বাস থাকলেও কয়েকজনের জন্য সেটা সম্ভব হয় না।’’ বৃহস্পতিবার রায় দেবেন বিচারপতি বসু । তার মধ্যে ড্রাফটের কাগজপত্র-সহ যাবতীয় নথি জমা দিতে মামলাকারীকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।