শোক: মা, স্ত্রী ও পুত্রের মৃত্যুর খবর শোনার পরে ভেঙে পড়েছেন শঙ্করবাবু। নিজস্ব চিত্র
বাড়িতেই রয়েছে নলকূপ। সেই নলকূপ থেকে জল না ভরায় তুমুল বচসা বাধে শাশুড়ি-বৌমার মধ্যে। তারপরেই আচমকা দু’বছরের শিশুকে নিয়ে নিজের ঘরে ঢুকে গায়ে আগুন দিয়ে এক যুবতী আত্মহত্যা করলেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, বৌমা ও নাতির মৃত্যুর পরেই অন্য ঘরে গিয়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন শাশুড়িও।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হবিবপুর থানার ঋষিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণনগর গ্রামে। একই পরিবারের এক শিশু সহ দুই মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় বাগরুদ্ধ গ্রামবাসীরা। পুলিশ গিয়ে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে, নিরূপা দাস (৩০) ও তাঁর দু’বছরের ছেলে অর্ণব এবং শ্রমতী দাসের (৭০) মৃত্যু হয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে।”
এ দিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ টিউবওয়েল থেকে জল ভরাকে কেন্দ্র করে শাশুড়ি শ্রমতীর সঙ্গে তুমুল বচসা শুরু হয় নিরূপার। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শ্রমতীদেবী নিরূপাকে জল ভরতে বলেন। সেই সময় নিরূপা তাঁর ছেলেকে খাওয়াচ্ছিলেন। তাই শাশুড়িকে জল দিতে পারেননি। তা নিয়েই শুরু হয় বচসা। এরপরেই নিজের ছেলেকে নিয়ে ঘরে ঢুকে যান নিরূপা। অভিযোগ, গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে কোলে ছেলে নিয়েই আত্মহত্যা করেন তিনি। ঘটনায় ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে ছুটে আসেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখেন মা ও ছেলের অগ্নিগ্বগ্ধ মৃতদেহ বিছানায় পড়ে রয়েছে।
এরপরেই আচমকা অপর ঘরে ঢুকে পড়েন শ্রমতীদেবী। তিনিও গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আত্মহত্যা করেন বলে দাবি গ্রামবাসীদের। সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না শঙ্করবাবু।
বছর চারেক আগে মুর্শিদাবাদের অর্জুনপুর গ্রামের বাসিন্দা নিরূপার সঙ্গে বিয়ে হয় মালদহের ঋষিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা শঙ্কর দাসের। তিনি গ্রামে গ্রামে চকোলেট, বিস্কুট ফেরি করেন। তাঁদের একটি দু’বছরের ছেলে রয়েছে। অভিযোগ, সংসারের কাজ নিয়ে নিরুপার সঙ্গে তাঁর শাশুড়ি শ্রমতীদেবীর কাজিয়া রোজকার হয়ে উঠেছিল। বছর খানেক আগে ছ’মাসের জন্য বাড়ি ছেড়ে চলে যান তাঁরা। আর্থিক কারণে ফের নিজের বাড়িতে ফিরে আসে শঙ্কর। জানা গিয়েছে, শঙ্করের বাবা দীর্ঘদিন আগেই মারা যান। তাঁদের দুভাই এর মধ্যে একজন মুখ বধির। বছর ২০ আগে পারিবারিক অশান্তির কারনে শঙ্করের বৌদিও আত্মহত্যা করে মারা যান। ঘটনার পর থেকেই অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন শঙ্করবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy