Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সম্প্রীতিতেই ‘আলবিদা জুমা’

রাত পোহালেই ইদ। তাই রমজানের মাসের শেষ রোজার গুরুত্ব অনেক বেশি। কিন্তু মানুষের জীবন বাঁচাতে যে রোজা উত্সর্গ করা যায় তা দেখালেন ইসলামপুরের মেলামাঠের বাসিন্দা রানা খান। রোজা ভেঙেই রক্ত দিলেন ক্যান্সার আক্রান্ত এক যুবককে। শুক্রবার তাই এই প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অনেকেই।

রোজা ভেঙে। নিজস্ব চিত্র

রোজা ভেঙে। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ পাল ও অনুপরতন মোহান্ত
ইসলামপুর ও বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৮ ০৩:৪৪
Share: Save:

রাত পোহালেই ইদ। তাই রমজানের মাসের শেষ রোজার গুরুত্ব অনেক বেশি। কিন্তু মানুষের জীবন বাঁচাতে যে রোজা উত্সর্গ করা যায় তা দেখালেন ইসলামপুরের মেলামাঠের বাসিন্দা রানা খান। রোজা ভেঙেই রক্ত দিলেন ক্যান্সার আক্রান্ত এক যুবককে। শুক্রবার তাই এই প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অনেকেই।

রোজার শেষ দিনটি পরিচিত ‘আলবিদা জুমা’ বলে। নিয়ম করে আগের প্রতিটি রোজাই রেখেছিলেন রানা। এ দিনও রোজা ছিল তার। নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় স্থানীয় এক যুবকের ফোন পান রানা। জানতে পারেন ক্যান্সার আক্রান্ত যুবকটির রক্তের প্রয়োজন। নামাজ পড়ে বাড়িও যান নি তিনি। সোজা পৌঁছে যান হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। তাঁকে দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন ইসলামপুরের বুধুগছের ক্যান্সার আক্রান্ত করণ আলির পরিবারের লোকেরা। রানার কথায়, ‘‘আমার একটি দিন উৎসর্গ করায় কেউ যদি বাঁচে, তাহলে এটাই সব থেকে বড় পাওনা। এক মৌলবীর কাছে বলেছিলাম বিষয়টি। তিনি বলেন, আগে মানুষ, পরে রোজা।’’

জানা গিয়েছে, মাস পাঁচেক আগেই ব্লাড ক্যান্সার ধরা পরে ইসলামপুরের বুধুগছের করণ আলির। তবে আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় বাড়ির জমি বেচে চলছিল চিকিৎসা। চিকিত্সকেরা জানিয়েছেন, এক বোতল রক্ত পেলেও আরও এক বোতল রক্তের জন্য হিমসিম খাচ্ছিল পরিবারের লোকেরা। অসুস্থ করণের বাবা মহম্মদ কফিলুদ্দিন বলেন, ‘‘রক্ত পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। উপরওয়ালার অশেষ কৃপা যে ওঁনাকে পেয়েছি।’’ খবর, এই প্রথম নয়, আগেও নিজের বিয়ের অনুষ্ঠানে রক্ত দান শিবিরের আয়োজন করেছিলেন মার্কেটিং এর কর্মচারি রানা।

অন্য দিকে, তীব্র দাবদাহকে উপেক্ষা করে ইদের শেষ প্রস্তুতিতে মাতল দক্ষিণ দিনাজপুরও। বালুরঘাটে রমজানের শেষ দিন আয়োজিত হয় বিশেষ নামাজ। পতিরামের জামে মসজিদে ইফতারের আয়োজন করেন বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি প্রবীর রায়। সহযোগিতায় ছিল দক্ষিণপাড়ার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। অনুষ্ঠানে সামিল মুজিবর রহমান, মাজিদুর সর্দারেরা বলেন, ‘‘বরাবর আমরা উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে ইদ পালন করি।’’ প্রবীরের কথায়, ‘‘ছোট থেকে দেখেছি সবাই মিলে মেলবন্ধনে দুর্গাপুজোর মতই ইদ সমান ভাবে পালিত হয়। এই অনুষ্ঠান থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখব কি করে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE