Advertisement
E-Paper

সানাইবাদক নেই, থেমে নহবত

এমনকী এ বার রাসেও পুরানো ঐতিহ্য মেনে মদনমোহন মন্দিরে নহবত বাজবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কারণ, পাওয়া যাচ্ছে না সানাইবাদক। দেবোত্তর ট্রাস্টের কর্তারা অবশ্য জানাচ্ছেন, হাতে সময় বেশি নেই।

অরিন্দম সাহা

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:১০
অবহেলায়: নহবতের অপেক্ষায় পড়ে বাদ্যযন্ত্র। নিজস্ব চিত্র

অবহেলায়: নহবতের অপেক্ষায় পড়ে বাদ্যযন্ত্র। নিজস্ব চিত্র

ধুলোর স্তূপ জমেছে বাদ্যযন্ত্রে। মেঝেয় পড়ে রয়েছে যন্ত্রাংশ। রাজাদের আরাধ্য দেবতা মদনমোহনদেবের ঘুম ভাঙাতে প্রায় এক মাস ধরেই শতাব্দী প্রাচীন মন্দিরে বাজছে না নহবতের সুর। এমনকী এ বার রাসেও পুরানো ঐতিহ্য মেনে মদনমোহন মন্দিরে নহবত বাজবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

কারণ, পাওয়া যাচ্ছে না সানাইবাদক। দেবোত্তর ট্রাস্টের কর্তারা অবশ্য জানাচ্ছেন, হাতে সময় বেশি নেই। তা-ও রাসের আগে নহবতের সুর ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বারাণসীতে সানাইবাদকের খোঁজ পেতে যোগাযোগ শুরু হয়েছে।

দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি তথা কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি। সাধ্য মতো চেষ্টাও হচ্ছে।” কোচবিহার সদরের মহকুমাশাসক তথা বোর্ডের সদস্য অরুন্ধতী দে বলেন, “সানাইবাদকের জন্য বারাণসীতে যোগাযোগ করা হচ্ছে।” বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, সানাই, নাকাড়া, জুড়ি, করতালের মিলিত বাদ্যযন্ত্রেই ওঠে নহবতের সুর। রাজাদের আমল থেকেই এই সুর জড়িয়ে রয়েছে মন্দিরের সঙ্গে।

বৈরাগী দিঘির পাড়ে মদনমোহন মন্দিরে ঢোকার মুখে নহবতখানার জন্য নির্দিষ্ট ঘরও সে সময় তৈরি করা হয়। সেখানেই ভোর থেকে সন্ধে পর্যন্ত তিন দফায় চার শিল্পী মিলে একসঙ্গে নহবতের সুর তুলতেন। বিগ্রহের ঘুম ভাঙত, সন্ধ্যারতিও হত। তাঁদের মধ্যে সানাইবাদক ছিলেন খোদ বারাণসীর। মহারাজাদের উদ্যোগে প্রথম এই শহরে আসেন তাঁরা। বছর দুয়েক আগে সেই শিল্পী হরিশঙ্কর বিনবংশীর মৃত্যু হয়, অবসর নেন ‘সুরদার’ অন্য এক কর্মীও। তখন থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। মাঝে কিছুদিন নহবত বন্ধও ছিল। তারপরে অবশ্য হরিশঙ্করবাবুর এক ছেলে প্রদীপ বিনবংশীকে বারাণসী থেকে মাসিক চুক্তিতে সানাই বাজানোর জন্য আনা হয়। বছর খানেক চলছিলও ঠিকঠাক। গত সেপ্টেম্বরে পুজোর আগে থেকে তিনি আর আসছেন না। তাই সুরও উঠছে না সানাইয়ে।

প্রদীপবাবুর ভাই অজয় বিনবংশী ওই নহবতের নাকাড়া বাদক ছিলেন। এখন তিনি ভক্তদের জুতো পাহারার দায়িত্বে। অজয়বাবু বলেন, “যা বেতন দিত তাতে ভাইয়ের সংসার চলছিল না।” ট্রাস্টের এক কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “সানাই বাজানোয় দক্ষ বারাণসীর শিল্পীরাই। সেটাই সমস্যা।” ৩ নভেম্বর রাস উৎসব শুরুর আগে হয়তো সমস্যার সমাধান হবে, সেই আশাতেই রয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।

Shehnai Nahabat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy