E-Paper

বইমেলায় মধ্যরাতে জলসা, দাপট শব্দের

যেখানে রাত দশটার পরে লাউডস্পিকার বাজানোর কথা নয়। সেখানে সরকারি অনুষ্ঠানে রাস্তার মোড়ে মাইক লাগিয়ে তারস্বরে গান বাজল কার নির্দেশে, উঠেছে প্রশ্ন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৪২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বইয়ের স্টলগুলি ঝাঁপ ফেলেছে আগেই। ক্রেতা-পাঠকেরাও অনেকেই ফিরেছেন। তখন রাত এগারোটা বেজে ৫ মিনিট। মঞ্চে আলোর রোশনাই ঠিকরে পড়ছে। গায়িকা গাইছেন হালফিলের জনপ্রিয় গান, “মন মানে না, মন মানে না....।” দর্শকাসনে গানের তালে তালে কোমর দোলাচ্ছেন, হাততালি দিচ্ছেন যুবক-যুবতী থেকে মধ্যবয়সীরা। গান শেষ হল, তখন রাত এগারোটা পনেরো, গায়িকা ধরলেন আরও এক জনপ্রিয় গান, “ও মধু, আই লভ ইউ...।” ফের উৎসাহে ফেটে পড়লেন দর্শকেরা। মঙ্গলবার মধ্যরাত ছুঁয়ে এমনই আসর জলপাইগুড়ি জেলা বইমেলায়। তা নিয়ে বাঁধল বিতর্ক। উঠল শব্দবিধি ভঙ্গের অভিযোগ।

যেখানে রাত দশটার পরে লাউডস্পিকার বাজানোর কথা নয়। সেখানে সরকারি অনুষ্ঠানে রাস্তার মোড়ে মাইক লাগিয়ে তারস্বরে গান বাজল কার নির্দেশে, উঠেছে প্রশ্ন। বিতর্ক তৈরি হয়েছে বইমেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বাছাই এবং সময় নিয়েও। পাঠকদের কেউ কেউ প্রশ্ন করলেন, “বইয়ের দোকান সব বন্ধ হয়ে গেল, তার পরে কাদের জন্য অনুষ্ঠান চলল বইমেলায়। বইয়ের দোকান বন্ধ হওয়ার পরে কারা এলেন বইমেলায়?”

জলপাইগুড়ি শহরের ফণীন্দ্রদেব স্কুলের খেলার মাঠে বইমেলার আয়োজন হয়েছে। মেলায় রয়েছে বড় বড় আধুনিক সাউন্ডবক্স। মেলার বাইরে বহুদূর পর্যন্ত রাস্তায় লাউডস্পিকার বাঁধা। অভিযোগ, মঙ্গলবার শীতের রাতের নিস্তব্ধতা চিরে দিয়েছিল সেই সব সাউন্ডবক্সের শব্দ। এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দার কথায়, “বহু বছর ধরে এখানে মেলা হয়। কোনও দিন রাত জেগে এমন জলসা শুনিনি। মানে জলসার দাপটে রাত জাগতে বাধ্য হয়েছি।”

বইমেলা নিয়েও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু জলপাইগুড়ির পুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায়। জলপাইগুড়ি শহরে আয়োজিত বইমেলার সহকারী আয়োজক জলপাইগুড়ি পুরসভা। পুরপ্রধান সৈকত বইমেলার কার্যকরী সম্পাদক। বইমেলা কমিটির সঙ্গে যুক্ত একাংশের দাবি, সাংস্কৃতিক মঞ্চে সৈকতের নির্দেশ ছাড়া মাইকও চালু হয় না। যদিও সৈকত বলেন, “কোথায় সাড়ে এগারোটা? সাড়ে দশটা পর্যন্ত অনুষ্ঠান হয়েছে। বই এবং সংস্কৃতি পরিপূরক। বইতেই তো গান লেখা থাকে। মানুষ কী আনন্দ করবে না!”

বিরক্ত বই বিক্রেতারাও। বুধবার মেলার শেষ দিন দুপুর দেড়টায় মেলায় গিয়ে দেখা গেল তখনও মঞ্চে প্রস্তুতি চলছে। নানা বাদ্যযন্ত্র থেকে শব্দ ঠিকরে বেরোচ্ছে। এক প্রকাশক বললেন, “মঙ্গলবার রাতে আমরা দশটার মধ্যে স্টল বন্ধ করে চলে গিয়েছি। এখন দুপুর থেকে আবার তারস্বরে শব্দ হচ্ছে। এক হাত দূর থেকে পাঠকদের প্রশ্নও শুনতে পাচ্ছি না।” জলপাইগুড়ির জেলা গ্রন্থাগারিক তথা মেলার সম্পাদক ইমরান শেখ বলেন, “সাংস্কৃতিক কমিটিকে বলা হয়েছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Loud Music book fair Jalpaiguri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy