দ্রুত ও সঠিক বিচার দিতে বিচার ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করে তোলার উপর জোর দিলেন রাজ্যের মানবাধিকার কমিশনের অস্থায়ী চেয়ারপার্সন নপরাজিত মুখোপাধ্যায়। শনিবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশের উদ্যোগে বালুরঘাটে সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা ও সুষ্ঠু তদন্ত নিয়ে একটি আলোচনা সভা আয়োজিত হয়। সেখানে তিনি জানান, মামলার উন্নত তদন্ত ও তদন্তকারীর সঙ্গে বিচার প্রক্রিয়ায় যুক্ত সরকারি আইনজীবীর সমন্বয় সাধনই বিচারপ্রার্থীকে ন্যায় বিচার পৌঁছে দিতে পারে।
তিনি জানান, ভারতে বছরে মামলাগুলিতে অপরাধীর সাজার হার মাত্র ১৫-১৮ শতাংশ। ফলে সাধারণ মানুষ ন্যায় বিচার পাচ্ছেন না। এতে সমাজের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলে জানান তিনি। অথচ আদালতে বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে পুলিশি তদন্তের যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘‘তদন্তকারীর সঠিক এবং সত্যনিষ্ঠ তদন্তের উপর মামলায় প্রকৃত অপরাধীর সাজা নির্ভর করে।’’ সঠিক অপরাধ জেনেও তথ্য প্রমাণের খামতি থাকলে আদালত নিরুপায় হয়ে পড়ায় অপরাধী ছাড়া পেয়ে যায় বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে জেলা পুলিশের তদন্তে ঘাটতি ও গাফিলতির বিষয়ের কথা বলেছেন বালুরঘাট আদালতের বিচরক কাইজার আলম।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, ম্যাকিনটস বার্নের চেয়ারম্যান পেশায় আইনজীবি শঙ্কর চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, ‘‘মামলায় অভিযোগ দায়েরের বিষয়টিকে প্রথম গুরুত্ব দিতে হবে।’’ প্রয়োজনে থানার আইসি বা ওসিকে এফআইআর লেখার দায়িত্ব নিতে হবে বলে তাঁর মত। বিভিন্ন অপরাধের মামলায় কী ভাবে ধাপে ধাপে তদন্তকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, সুদীর্ঘ আদালত জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে উদাহরণ দিয়ে শঙ্করবাবু তা তুলে ধরেন। সুষ্ঠ বিচার প্রক্রিয়ার জন্য তদন্তকারী ও সরকারি আইনজীবির সমন্বয়ের প্রয়োজনের কথা বলেন বালুরঘাট আদালতের সরকারি আইনজীবী সুভাষ চাকী। দক্ষিণ দিনাজপুরে আদালতে এই মুহূর্তে ২৮,০০০ মামলা ঝুলে রয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। লোক আদালতকে আরও কার্যকরী করে মামলাগুলি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য নপরাজিতবাবু পরামর্শ দিয়েছেন।
সাংসদ অর্পিতা ঘোষ জানান, পুলিশের প্রতি এখনও সাধারণ মানুষের ভীতি রয়েছে। থানায় গিয়ে ঠিকঠাক অভিযোগ লেখার মতো জ্ঞান ও ধারণা তাঁদের থাকে না। এই ক্ষেত্রে সরকারি আইনি সহায়তা সম্পর্কে সকলকে জানানো এবং পুলিশের আন্তরিক ভূমিকার দিকে সাংসদ আলোকপাত করেন। জেলাশাসক সঞ্জয় বসু এবং পুলিশ সুপার প্রসুন বন্দ্যোপাধ্যয় ঘাটতি দূর করে আইন ও বিচার ব্যবস্থাকে আরও জনকল্যাণমুখী করে তোলার জন্য উদ্যোগ নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।