Advertisement
E-Paper

কাল্টুকে লাথি, থানায় হাজির বধূ

প্রাণের কাল্টুকে লাথি। তা দেখে কি আর চুপ থাকা যায়! রীতিমতো তেড়ে গিয়ে পড়শির সঙ্গে ঝগড়া শুরু করে দেন বধূ। ঝগড়া করেও ফয়সালা হল না। সটান থানায় হাজির তিনি। ঝাঁঝিয়ে উঠলেন, ‘‘একটা অভিযোগ রয়েছে। থানায় ডায়েরি করতে এসেছি।’’ কিন্তু কার হয়ে? কোলে থাকা ছ’মাসের সারমেয় শিশুর দিয়ে দেখিয়ে বললেন, ‘এর। এ আমার কাল্টু।’’ সব দেখে শুনে হকচকিয়ে গেলেন কোতোয়ালি থানার পুলিশ অফিসারেরা। পরে অবশ্য লিখিত অভিযোগও হল। তদন্তের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিল পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০৩:০৪
কাল্টুকে কোলে নিয়ে থানায় দূর্বাদেবী। ছবি: সন্দীপ পাল।

কাল্টুকে কোলে নিয়ে থানায় দূর্বাদেবী। ছবি: সন্দীপ পাল।

প্রাণের কাল্টুকে লাথি। তা দেখে কি আর চুপ থাকা যায়! রীতিমতো তেড়ে গিয়ে পড়শির সঙ্গে ঝগড়া শুরু করে দেন বধূ।

ঝগড়া করেও ফয়সালা হল না। সটান থানায় হাজির তিনি। ঝাঁঝিয়ে উঠলেন, ‘‘একটা অভিযোগ রয়েছে। থানায় ডায়েরি করতে এসেছি।’’ কিন্তু কার হয়ে? কোলে থাকা ছ’মাসের সারমেয় শিশুর দিয়ে দেখিয়ে বললেন, ‘এর। এ আমার কাল্টু।’’ সব দেখে শুনে হকচকিয়ে গেলেন কোতোয়ালি থানার পুলিশ অফিসারেরা। পরে অবশ্য লিখিত অভিযোগও হল। তদন্তের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিল পুলিশ।

বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি শহরের স্টেশন রোড সংলগ্ন একটি বহুতলের ঘটনা। ওই বহুতলের বাসিন্দা দূর্বা ঘোষের কুকুর কাল্টুর থাকার জায়গা নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত। দূর্বাদেবী জানালেন, এক মাস বয়সের পর কুকুরকে বহুতলের নীচের গ্যারাজ ঘরের পাশে রেখে বড় করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওকে একেবারে নিজের সন্তানের মতো বড় করেছি। চিকিৎসক দেখিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়া আছে। দিনভর ঘুমিয়ে কাটায়। রাতে ঘেউ ঘেউ ডাক ছেড়ে পাহারা দেয়।’’

দূর্বাদেবীর অভিযোগ, কোনও অন্যায় না করলেও বহুতলের সম্পাদক দেবাশিস লালা অকারণে তাঁর কাল্টুকে লাথি মারেন। তিনি ওকে চেন দিয়ে বেঁধে রাখলেও দেবাশিসবাবু কাল্টুকে খুলে বৃষ্টির মধ্যে বাইরে বের করে দেন। পরপর কয়েকদিন ওই ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবাদও করেছেন দূর্বাদেবী। কিন্তু ওই ব্যক্তি কর্ণপাত করেননি। নিরুপায় হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।

তাঁর একমাত্র দাবি, ‘‘কাল্টুর থাকার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।’’ এ দিন দুপুরে টোটো গাড়িতে করে কাল্টুকে তুলে সোজা থানায় চলে যান দূর্বাদেবী। তাঁর অভিযোগ শুনে কোতোয়ালি থানার পুলিশ কর্তাদের মাথায় হাত পড়ে। থানার আইসি আশিস রায় বলেন, “ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু বলার নেই।” পুলিশ কর্তার আশ্বাসে বধূ বাড়িতে ফিরে যান।

যদিও দেবাশিসবাবু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “মোটেও মারধর করা হয়নি। কুকুরকে চেন দিয়ে ঘরে বেঁধে রাখার প্রতিবাদ করা হয় মাত্র। বহুতলের নীচে কেউ গেলে কুকুর গায়ে লাফিয়ে ওঠে। এটা কতদিন মেনে নেওয়া সম্ভব? তাই বলা হয়েছে কুকুরটিকে অন্য কোনও নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হোক।”

এ দিন পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার আগে গত ৩০ এপ্রিল কাল্টুর উপরে নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে শহরের ‘সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অব ক্রুয়েলটি টু অ্যানিমেলস’ সংস্থার দ্বারস্থ হন ওই বধূ। তিনদিন পরে কুকুরের সমস্যা নিয়ে ওই সংস্থার দ্বারস্থ হন দেবাশিসবাবুও। ওই সংস্থার কোষাধ্যক্ষ চিকিৎসক গৌতম ঘোষ বলেন, “দুই তরফের বক্তব্য শুনে ঘটনার তদন্ত করা হয়েছে। বধূ যে কুকুরটির পরিচর্যা করেন সেটা ঠিক। এ দিকে বহুতলের নীচে কেউ গেলে কুকুরটি গায়ে লাফিয়ে ওঠে এমন অভিযোগও মিলেছে। ওই পরিস্থিতিতে ভাবা হয়েছে কুকুরটিকে বধূ তাঁর নিজের ঘরে রেখে পুষতে পারেন। না হলে তৃতীয় কোনও ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া যেতে পারে।”

jalpaiguri housewife neighbour pet dog jalpaiguri police station housewife lodged complain pet dog baby dog kaltu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy