Advertisement
১১ মে ২০২৪

মাকে বলার সাহস পাচ্ছিলেন না কেউ

যদিও তখনও তাঁকে জানানো হয়নি, ছেলে বিপ্লব মারা গিয়েছে। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০৮:১৫
Share: Save:

কয়েক ঘণ্টায় যেন বাড়ির ছবিটা বদলে গিয়েছে। শুক্রবার বিকেলেও সবাই মিলে বৌভাতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। শনিবার সকালে সেই বাড়িতেই কান্নার রোল। লোকজন, চেনা-অচেনা মানুষের ভিড় দেখে উদ্বিগ্ন মাকে বারবার বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমার ছেলেটা ঠিক আছে তো?” বৌভাতের অনুষ্ঠানে ছেলের সঙ্গেই ডাউয়াগুড়িতে গিয়েছিলেন মা রমাদবী। রাতে ছেলে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই ডুকরে কাঁদছিলেন তিনি। শনিবার সকালে বাড়ি ভর্তি লোক দেখে তাদের সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তিনি। যদিও তখনও তাঁকে জানানো হয়নি, ছেলে বিপ্লব মারা গিয়েছে।

পরিবারের লোকেরা জানান, ছেলে অন্ত প্রাণ রমাদেবীর। তিন মেয়ের পর একমাত্র ছেলে। তাই সাহস করে কেউ তাঁকে বিপ্লবের মৃত্যুর খবর জানাতে পারেননি।

কোচবিহারের উত্তর খাগরাবাড়ি এলাকায় রমাদেবীদের বাড়ি। স্বামী পৃথ্বীশ দেবনাথ ট্রেনে হকারি করেন। তিন মেয়ে, এক ছেলেকে নিয়ে তাদের টানাটানির সংসার। একই এলাকার বাসিন্দা তাঁদের এক আত্মীয়ার বিয়ে নিয়ে সবাই কয়েক দিন আনন্দে মেতেছিলেন। তার মধ্যেই এমন ঘটনা যেন বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো এল। রমাদেবী বলেন, “ছেলেটার থায়ালাসেমিয়ার সমস্যা আছে। মাঝে মধ্যেই রক্ত দিতে হত। ১৮ বছর পূর্ণ হলে ঠিক হবে বলে এক চিকিৎসক আশ্বাস দিয়েছেন। সেই মতো ঈশ্বরের কাছে রোজ প্রার্থনা করি। দেখুন ওরই গুলি লাগল।” এক আত্মীয় ধীরেন দাস বলেন, “বুকে কান্না চেয়ে আছি। বিপ্লবের মায়ের সামনে যেতে পারছি না। কী উত্তর দেব।”

যার বিয়েতে ওই ঘটনা, সেই পাত্র সঞ্জয় দাস বলেন, “গুলির শব্দ পেয়েছি। কে গুলি করেছে জানি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Firing Courage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE