Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

গাজলে ধরা পড়েনি কেউই

মালদহের গাজলে মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরেও অধরা মুল অভিযুক্তরা। তাছাড়া ওই নির্যাতিতাকে সালিশির পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকেও চিহ্নিত করা যায়নি। তাই পুলিশের প্রতি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন নির্যাতিতা মহিলা ও তাঁর আইনজীবী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৫ ০৩:০৩
Share: Save:

মালদহের গাজলে মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরেও অধরা মুল অভিযুক্তরা। তাছাড়া ওই নির্যাতিতাকে সালিশির পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকেও চিহ্নিত করা যায়নি। তাই পুলিশের প্রতি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন নির্যাতিতা মহিলা ও তাঁর আইনজীবী।

নির্যাতিতার আইনজীবী দেবাশিস সরকারের ক্ষোভ, ‘‘পুলিশ এখনও পর্যন্ত একজন অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। এ ছাড়া যে অফিসার প্রথমে ওই মহিলার অভিযোগ নেয়নি, তাঁকেও চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ একেবারে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।’’ ওই মহিলাও দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে যাঁরা এমন কাজ করেছে, আমি তাদের শাস্তি চাই। পুলিশ গ্রামে আসলেও অভিযুক্তদের ধরতে পারেনি। আমরা চাই পুলিশ তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করুক। আর আমার অভিযোগ যে অফিসার নেননি, তাঁরও যেন শাস্তি হয়।’’ মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের খোঁজে গ্রামে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। খুব শ্রীঘই তাদের গ্রেফতার করা হবে। মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষাও করা হবে। অভিযোগ না নেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সমস্ত বিষয়ই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

প্রসঙ্গত, ১০ মে গাজলের এক মহিলাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গ্রামের একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে চার জন মিলে পরপর ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। আরও দুই অভিযুক্ত ওই মহিলার বৃদ্ধা মায়ের গলায় হাঁসুয়া ধরে ছিল বলে অভিযোগ। পরে মহিলা একাই বাড়ি ফিরে আসেন। ঘটনার পরের দিন ১১ মে দুপুর বেলা গাজল থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে এক পুলিশ অফিসার ওই মহিলার অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ। উপরন্তু, ওই অফিসার ঘটনাটি সালিশি করে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শও দেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রামের মাতব্বরদের নিয়ে সালিশিও বসেছিল। তবে অভিযুক্তকরা না আসায় সালিশি সভা ভেস্তে গিয়েছিল। অবশেষে শনিবার সকালে ওই মহিলা ও তাঁর পরিবারের লোকেরা ফের গাজল থানায় অভিযোগ জানাতে আসেন। তাঁরা মোট ছ’জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে গণধর্ষণের মামলা রুজু করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ছ’জন যুবকই ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছ’জনই গ্রামবাসীদের সঙ্গে নানান কারণে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। ফলে তাদের সঙ্গে কেউ বচসায় জড়াতে চাননা।

অভিযুক্তেরা প্রথমে গ্রামেই থাকলেও, ঘটনাটি নিয়ে শোরগোল পড়তেই তারা গ্রামছাড়া হয়ে গিয়েছে। এ দিন সকালে গ্রামে গিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। পুলিশ জানিয়েছে, আজ সোমবার ওই মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে। তবে সালিশি সভা বসানোর অভিযুক্ত মোড়ল সুকদেব মণ্ডল গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁকে ফোন করা হলেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE