Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ভাড়াটে খুনি দিয়েই হত্যা ভালুকায়, সন্দেহ

মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ভালুকায় বৃদ্ধাকে গুলি করে খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। রবিবার রাতে এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে তাকে ধরা হলেও বাকিদের হদিশ পায়নি পুলিশ।

ভালুকায় তদন্তে পুলিশ সুপার। —নিজস্ব চিত্র।

ভালুকায় তদন্তে পুলিশ সুপার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৫ ০১:৩৮
Share: Save:

মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ভালুকায় বৃদ্ধাকে গুলি করে খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। রবিবার রাতে এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে তাকে ধরা হলেও বাকিদের হদিশ পায়নি পুলিশ। ওই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১০ জনের নামে অভিযোগ করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে ওই ঘটনায় জড়িয়ে গিয়েছে একটি দৈনিকের সাংবাদিকের নামও। ওই সাংবাদিক অভিযুক্ত এক তৃণমূল নেতার দাদা। সাংবাদিকের নাম খুনের ঘটনায় জড়িয়ে যাওয়ায় তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্কও।

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণমন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘প্রকৃত দোষীরাই যাতে সাজা পায় এবং একজন নিরীহকেও যাতে হেনস্থা না হতে হয়, পুলিশ সুপারকে তা দেখতে বলেছি। কেন ওই ঘটনায় এক সাংবাদিকের নাম জড়িয়ে গেল তা-ও পুলিশকে দেখতে বলা হয়েছে।’’ পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুরো বিষয়টিই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রকৃত অপরাধীদের কাউকে ছাড়া হবে না।’’ গত রবিবারের ওই খুনের ঘটনার পর এদিন ওই এলাকায় নিজেই তদন্তে যান জেলার পুলিশসুপার। পুলিশের দাবি, যে ভাবে বৃদ্ধাকে খুন করা হয়েছে তা পাকা হাতের কাজ। পাশাপাশি, যারাই ষড়যন্ত্র করে থাকুক, ভাড়াটে খুনি দিয়েই খুন করানো হয়েছে বলে ধারণাও দৃঢ় হচ্ছে পুলিশের।

হরিশ্চন্দ্রপুরের ভালুকা পালপাড়ায় ভালুকা-রতুয়া রাজ্য সড়কের পাশে জমি দখলে রাখতে রাত পাহারা দেওয়ার জন্য প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া একটি ঘর থেকে রবিবার সকালে ক্ষুদু মন্ডল (৭২) নামে ওই বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর বুকে গুলি করে খুন করা হয়। খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রথমে ১৯ জনের নামে পুলিশে অভিযোগ জানান মৃতার ছেলে মন্টু মন্ডল। পরে ১০ জনের নামে অভিযোগ জানানো হয়।

অভিযুক্তদের তালিকায় সিপিএমের স্থানীয় তিন কর্মীর পাশাপাশি ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বিবেক সাহারও নাম রয়েছে। বিবেকবাবুর সাংবাদিক দাদা মালদহে থাকেন। তাঁর নামও রয়েছে সন্দেহভাজনদের তালিকায়। রাতেই বিবেকবাবুকে ধরতে তাঁর বাড়ি যায় পুলিশ। ওই সাংবাদিকের তালাবন্ধ ঘরেও হানা দেয় পুলিশ। কিন্তু তাঁদের কাউকেই পাওয়া যায়নি।

তবে বিবেকবাবু এদিনও দাবি করেন, ‘‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। পুলিশ তদন্ত করলেই সব বেরিয়ে আসবে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সিআইডি তদন্ত চেয়ে চিঠি পাঠাচ্ছি। এমনকি মন্টুবাবুই জমির দখল নিতে ষড়যন্ত্র করেছেন কি না, তা নিয়েও আমাদের সন্দেহ রয়েছে।’’ যদিও মন্টুবাবু এদিন বলেন, ‘‘জমি দখল করতে না পেরে ওরা মাকে খুন করে এখন আমাকেই ফাঁসানোর চক্রান্ত করছে।’’

হরিশ্চন্দ্রপুরের ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক তজমুল হোসেন বলেন, ‘‘যে ভাবে বারবার অভিযুক্তদের নামের তালিকা পাল্টানো হয়েছে বলে শুনেছি, তাতে সন্দেহ হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই ঘটনার তদন্ত সিআইডি-কে দিয়ে করানো হোক। তা হলেই প্রকৃত সত্য সামনে আসবে।’’ উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নুরও বলেন, ‘‘নিরীহ কাউকে ফাঁসানোর চেষ্টা হলে আমরা চুপ করে বসে থাকব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

murder malda harischandrapur police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE