E-Paper

আট বছরে দু’বার ধর্ষিত, অভিযুক্ত একই

বৃহস্পতিবার সন্ধেয় দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি এলাকায় সেই বিবাহিত আদিবাসী যুবক ওই যুবতীকে ফের ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। শুক্রবার বছর ছাব্বিশের অভিযুক্তকে ধরেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৫ ০৬:৩১
বিচারক ধৃতকে ছ’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

বিচারক ধৃতকে ছ’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। —প্রতীকী চিত্র।

আট বছরের মধ্যে দু’বার ধর্ষিত এক আদিবাসী মেয়ে। অভিযুক্তও এক। প্রতিবেশী যুবক। যুবতী ‘মানসিক রোগে ভুগছেন’ বলে বাড়ির লোকের দাবি। আগের ধর্ষণের মামলাটি চলছে এবং তাতে অভিযুক্ত যুবক জামিনে মুক্ত ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি এলাকায় সেই বিবাহিত আদিবাসী যুবক ওই যুবতীকে ফের ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। শুক্রবার বছর ছাব্বিশের অভিযুক্তকে ধরেছে পুলিশ। ধর্ষণের অভিযোগ মানেনি অভিযুক্ত ও তার পরিবার। তবে ঘটনার খোঁজ নিচ্ছে রাজ্য মহিলা কমিশন।

জেলার পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তল বলেন, ‘‘ওই মেয়েটি আগেও ধর্ষিত হয়েছিলেন। তখনও এই যুবককে ধরা হয়েছিল। আদালতে সে মামলা চলছে।’’ জেলা পুলিশের অন্যতম এসডিপিও দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বছর-বাইশের ওই যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগে ধৃতকে আদালত থেকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘নির্যাতিতা’ অবিবাহিত, বাবার কাছে থাকেন।বিশেষ ভাবে সক্ষম হিসাবে ভাতা পান তিনি। বৃহস্পতিবার সন্ধের পরে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তিনি ঘর থেকে বেরোলে, ওই যুবক তাঁর মুখ চেপে ধরে পাশের ঝোপে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পুলিশ আদালতে হাজির করালে বিচারক ধৃতকে ছ’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

যদিও অভিযুক্তের স্ত্রী ও পড়শিদের একাংশের দাবি, যে সময়ে ধর্ষণের কথা বলা হয়েছে, তখন ওই যুবক জমিতে কাজ করছিল। অভিযুক্তের স্ত্রী বলেন, ‘‘জমিতে জল নেওয়া নিয়ে ওই পরিবারের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল। তাই আমার স্বামীকে ফাঁসিয়েছে। আমিও পুলিশে যাব।’’ জমিতে জল নেওয়া সংক্রান্ত কোনও বিবাদের অভিযোগ মানেননি ‘নির্যাতিতার’ বাবা। তাঁর দাবি, ‘‘মেয়ের যখন ১৪ বছর বয়স, তখন ওই ছেলেটাই মেয়েকে ধর্ষণ করেছিল।’’

ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোরও শুরু হয়েছে। জেলার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘ধর্ষণের ঘটনায় কয়েক মাসের মধ্যে অভিযুক্তের ফাঁসি দিয়ে দেন বলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন। সেটা যে মিথ্যে, তা প্রমাণিত হয়ে গেল।’’ আর‌এসপির জেলা সম্পাদক সুচেতা বিশ্বাস বলেন, ‘‘রাজ্যে নারীরা সুরক্ষিত নন। আইনের শাসন নেই। তাই এক বার ধর্ষিত হওয়ার পরেও, ফের মেয়েটিকে ধর্ষিত হতে হল।’’ পক্ষান্তরে, জেলা তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘‘পুলিশ অভিযুক্তকে ধরে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে। পুরো বিষয়টির দ্রুত খোঁজ নেব।’’

রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ও বিশদে এ ব্যাপারে খবর নেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় প্রতিনিধি দল গিয়ে পরিদর্শন করে। এ ক্ষেত্রেও তা হবে। একটা মামলা চলছে। তার পরেও অভিযুক্তের এতটা সাহস কী করে হল, বুঝতে পারছি না!’’ ‘নির্যাতিতার’ বাবার আক্ষেপ, ‘‘আগের ঘটনার জন্য মেয়ে বিয়ে করতে চায়নি। তার এখনও বিচার হল না! ছেলেটা শাস্তি পেলে এমন ঘটত না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rape case police custody

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy