আর জি কর-কাণ্ডে দোষীদের শাস্তি ও মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বালুরঘাটে বিজেপির প্রতিবাদ মিছিল। নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে কোচবিহার আসনেই শুধু জয় পেয়েছিল তৃণমূল। আর জি কর-কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির দাবিতে শনিবার সেই কোচবিহার শহরে পথে নামল তারা। রাজ্যের শাসক দলের দাবি, ওই মিছিলে শহর থেকে গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ শামিল হন। তবে পুলিশের হিসাবে, সেই সংখ্যা পঞ্চাশ হাজারের আশপাশে ছিল। উত্তরবঙ্গে শুধু কোচবিহারেই কেন এমন কর্মসূচি করল তৃণমূল, তা নিয়ে চর্চা ছড়িয়েছে। বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচনে জয় পেলেও, ভোটের নিরিখে শহরে পিছিয়ে পড়েছিল রাজ্যের শাসক দল। ভোট-ব্যাঙ্ক ‘মেরামতেই’ তাদের এমন পদক্ষেপ। তবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা দলের রাজ্য সহ-সভাপতি উদয়ন গুহের বক্তব্য, ‘‘এ দিনের মিছিলে শহরের মানুষও ছিলেন। গ্রামের মানুষ বেশি ছিলেন।’’
শহরের রাসমেলা মাঠে এ দিন আর জি কর-কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির দাবিতে জমায়েতের স্থান ঠিক করেছিল তৃণমূল। মঞ্চও বাঁধা হয়েছিল। মিছিল শুরুর আগেই মঞ্চ ও লাগোয়া রাস্তা কার্যত জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বিকেল ৪টে নাগাদ শুরু হয়ে ঘণ্টা দেড়েক বাদে শেষ হয় মিছিল।
শহরের সাগরদিঘি পাড় থেকে সুনীতি রোড— যে পথেই মিছিল এগিয়েছে, সেখানেই ছিল উপচে পড়া ভিড়। যার জেরে, জেলার বিভিন্ন রুটে নিত্যযাত্রীরা সমস্যায় পড়েন বলে অভিযোগ।
বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, ‘‘আর জি কর-কাণ্ডের পরে গ্রাম থেকে শহর, কোনও এলাকার মানুষই এখন রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে নেই। শহরে লোকসভা ভোটে পিছিয়ে পড়েছিল তৃণমূল। তাই এমন কথা বলা হচ্ছে।’’ সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, ‘‘মানুষ তৃণমূল সরকারের কাছেই জবাব চাইছেন। তা-ই মিছিল করেও তৃণমূলের কোনও লাভ হবে না।’’
তৃণমূল সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বলেন, ‘‘ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। তার প্রতিবাদেই আমাদের মিছিল।’’ প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে কোচবিহারে নার্সকে ধর্ষণ ও খুনের মামলার নতুন করে তদন্ত শুরু করা হোক।’’ মিছিলের পরে জমায়েতে জেলা তৃণমূলে সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, দলের জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণও বক্তব্য রাখেন। এ দিনের মিছিলে উপস্থিত ছিলেন পার্থপ্রতিম রায়, পরেশ অধিকারীও।
এ দিন মিছিলের পরে উদয়ন নিশানা করেন সিবিআইকে। বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ ওই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এক জনকে গ্রেফতার করেছিল। সিবিআই ১১ দিন তদন্তের পরেও আর কাউকে ধরতে পারেনি। ওদের কাছে গাদা গাদা মামলা পড়ে। তদন্ত ধীরে চালিয়ে সিপিএম-বিজেপিকে সুযোগ করে দিতে চায় সিবিআই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy