Advertisement
০৬ মে ২০২৪

খুনে জড়িত নিহতের সঙ্গীই

একদলে থেকে আরেক দলের হয়ে গোপনে কাজ করার ঘটনা সিনেমার প্লটে আকছার দেখা যায়। এ বার শিলিগুড়ির জমি ব্যবসায়ী সত্যেন প্রসাদের খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে তেমনই তথ্য পেল পুলিশ। এর ভিত্তিতেই নিহতের এক সঙ্গীকেই খুনে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৬
Share: Save:

একদলে থেকে আরেক দলের হয়ে গোপনে কাজ করার ঘটনা সিনেমার প্লটে আকছার দেখা যায়। এ বার শিলিগুড়ির জমি ব্যবসায়ী সত্যেন প্রসাদের খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে তেমনই তথ্য পেল পুলিশ।

এর ভিত্তিতেই নিহতের এক সঙ্গীকেই খুনে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হল। ধরা পড়লেন ঘটনাস্থল, বাংলা-বিহার সীমানার হোটেলটির মালিকও। গত শনিবার রাতে চেকরমাড়ির হোটেলটিতে গুলি করে খুন করা হয় সত্যেনকে। রবিবার টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর দুইজনকে গ্রেফতার করে খড়িবাড়ি থানার পুলিশ। সোমবার তাদের শিলিগুড়ি আদালতে তুলে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। খুনের ঘটনার মূল অভিযুক্ত বিজেপি নেতা হরেন্দ্র যাদব-সহ চার জনের খোঁজ এখনও মেলেনি।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম বিনোদ গুপ্ত এবং বিশ্বনাথ রায়। বিনোদের বাড়ি ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রিনপার্ক এলাকায়। তিনিই দীর্ঘদিন ধরে সত্যেনের সঙ্গী ছিলেন। বিশ্বনাথ হাইয়ের ধারের হোটেলটির মালিক। খড়িবাড়ির চেকরমারি এলাকায় তার বাড়ি। দার্জিলিং জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘অভিযোগে এদের নাম না থাকলেও তদন্তে ভিত্তিতে এদের ধরা হয়। মূল অভিযুক্ত-সহ আরও কয়েকজন গাড়ি নিয়ে বিহারে পালিয়েছে। আমরা তাদের ধরার চেষ্টা করছি।’’

তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, সত্যেন শুক্রবার বিহারের গোপালগঞ্জে বাবা-মা’র সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় সঙ্গে বিনোদ গুপ্ত আর আরেকজনকে নিয়ে যান। একদিন সেখানে থাকার পর শনিবার তারা শিলিগুড়ি ফিরছিলেন। রাস্তায় বহু পুরানো পরিচিত বিশ্বনাথবাবুর হোটেলে খাবার খেতে দাঁড়ান। বাড়িতে ফোন করে পুরনো জায়গায় খেয়ে আসছেন বলেও জানিয়ে দেন। সেই টেলিফোনের অনেক আগে থেকেই অভিযুক্তরা এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন বলে অভিযোগ। এক দফায় সাদা স্করপিও নিয়ে হোটেলে গিয়ে দু’জন খাবার খেয়ে আরও দুই জনের খাবার নিয়ে যান। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সত্যেন হোটেলে ঢুকেই তারাও সামনে চলে আসেন। প্রথমে বচসা ফের হোটেলের ভিতরে-বাইরে চলে গুলি।

মোবাইল-সহ একাধিক তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের দাবি, বিনোদই সমস্ত খবর পাচার করছিলেন। পুরসভার ভোটের আগে দুটি গোষ্ঠী একযোগে জমির কারবার করলেও পরে আলাদা হয়। বিনোদ সত্যেনের সঙ্গে থাকলেও আদতে অন্যপক্ষের হয়েই কাজ করছিলেন বলে অভিযোগ।

ঘটনার ২০ মিনিটের মধ্যে পুলিশ হোটেলে পৌঁছালেও রক্তের দাগ-সহ সমস্ত তথ্য প্রমাণ বিশ্বনাথ জল দিয়ে ধুইয়ে দেওয়া ব্যবস্থা করেন বলে অভিযোগ। প্রথমে কোনও পক্ষইকেই চিনি না বললেও কর্মীদের জেরায় সামনে আসে, সত্যেন, হরেন্দ্রর হোটেল মালিকের বিশেষ পরিচিত। ইচ্ছা হলে রাতবিরাতে হোটেলের রান্নাঘরে নিজেরা ঢুকেও খাবার তৈরি করতেন।

সত্যেনের দাদা কানাইয়া প্রসাদ বলেন, ‘‘বিনোদের নাম শুনে বিশ্বাসই হয়নি। মানুষ টাকার জন্য কী না করে। আমরা চাই সব অভিযুক্তের কড়া শাস্তি হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE