ফাইল চিত্র।
সবাই একটু আতঙ্কেই ছিলেন। মোড়ে মোড়ে পুলিশের টহলদারি চলছিল। হাসপাতালের প্রায় চারদিকেই ঘিরে রেখেছিলে পুলিশ ও সিভিক কর্মীরা। রাত বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে চাপ কমতে থাকে সবার। রোগীদেরও পড়তে হয়নি কোনও সমস্যায়। শনিবার কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমন চিত্র হলেও আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ছবিটা উল্টো। বাজিতে কান ঝালাপালা হল রোগীদের। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ রোগীর আত্মীয় থেকে চিকিৎসক সকলেই।
কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজের বাইরেও শহরের পাশে একটি কোভিড হাসপাতাল রয়েছে। সেখানে অনেকেই চিকিৎসাধীন। শহরের মধ্যে একাধিক নার্সিংহোম। তার মধ্যে একটিতে কোভিড চিকিৎসা হয়। সেখানেও বেশ কয়েকজন করোনা রোগী রয়েছেন। চিকিৎসকরা বারবার জানিয়েছেন, বাজি করোনা রোগীদের জন্য বিপদ ডেকে আনবে। এই অবস্থায় সবাই উদ্বেগে রয়েছেন। কোচবিহার মেডিক্যালের রোগী-চিকিৎসকদের একটি অংশ প্রত্যেক বছর অভিযোগ করেন, কীভাবে রাতভর অসুবিধেয় পড়তে হয়েছে। এ বার মেল ওয়ার্ডের এক রোগী বলেন, ‘‘আমার রাতে ঘুম কম হয়। তাই একটি-দুটি আওয়াজ পেয়েছি। এ ছাড়া অন্যদিনের মতোই রাত কাটিয়েছি।’’ রোগীর আত্মীয়দের একজন অমল বর্মণ জানান, হাসপাতালের ওয়েটিং রুমেই তিনি রাতে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘মাইকের আওয়াজ পেয়েছি। বাজি ফাটারও কয়েকটি পেয়েছি। তাতে অসুবিধে হয়নি।’’ হাসপাতালের সুপার রাজীব প্রসাদ বলেন, "এবারে বাজির আওয়াজ বা ধোঁয়া কোনওটি তেমন ভাবে পাইনি।’’
শনিবার, কালীপুজোয় সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত বাজির শব্দে নাজেহাল হতে হল আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন হাসপাতালের রোগীদের। অভিযোগ, তপসিখাতার কোভিড হাসপাতালের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন হাসপাতালের আশপাশেও বাজি ফাটে। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশকে পর্যন্ত খবর দিতে হয় জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আলিপুরদুয়ার শহর সমেত জেলার বিভিন্ন প্রান্তে দেদারে পুড়েছে আতশবাজি। ফেটেছে শব্দবাজি। তপসিখাতার কোভিড হাসপাতালের আশপাশের একাধিক এলাকা থেকেও শব্দবাজি ফাটানোর আওয়াজ আসে।
সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় জেলা হাসপাতালের রোগীদের। এক রোগীর আত্মীয় নিরঞ্জন সরকারের কথায়, ‘‘সন্ধে হতে না হতেই হাসপাতালের আশপাশ থেকে যে হারে শব্দবাজি ফাটছিল, তাতে করে আমাদের টেকাই দায় হয়ে গিয়েছিল।’’ জেলা হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘‘সেজন্যই বাধ্য হয়ে প্রথমে স্থানীয় ফাঁড়ি ও তারপর আলিপুরদুয়ার থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ হস্তক্ষেপ করার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।’’ যদিও বিষয়টি নিয়ে অবশ্য কোনও কথা বলতে চাননি জেলার পুলিশকর্তারা। (তথ্যঃ নমিতেশ ঘোষ ও পার্থ চক্রবর্তী)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy