Advertisement
E-Paper

রাতভর বৃষ্টিতে ভাসল শহর, ক্ষুব্ধ বাসিন্দা

বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের সর্বত্র পরিকল্পিত নিকাশি পরিকাঠামো নেই। যে সব নর্দমা আছে সেগুলিও ঠিকঠাক রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে না। নর্দমায় আবর্জনা, প্লাস্টিক জমে থাকা জল উপচে ভেসে গিয়েছে বহু রাস্তা।

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৭ ০১:৪১
ভোগান্তি: আলিপুরদুয়ারে বৃহস্পতিবার। ছবি: নারায়ণ দে

ভোগান্তি: আলিপুরদুয়ারে বৃহস্পতিবার। ছবি: নারায়ণ দে

নদী ভরায় আতঙ্ক

রাতভর বৃষ্টিতে জলবন্দি আলিপুরদুয়ারের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টির জেরে কালজানি, রায়ডাক ১ ও সংকোশ নদীতে জারি হয়েছে হলুদ সংকেত। বাসিন্দাদের আশঙ্কা নদীর জল না নামলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে তাঁদের। আলিপুরদুয়ারের পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টির জেরে শহর ও সংলগ্ন ভোলারডাবরির জল শহরের স্লুইসগেট দিয়ে বের হতে পারছে না। কারণ গেট খুলে দিলে উল্টে নদীর জল ঢুকবে শহরে।

গত ২৪ ঘণ্টায় আলিপুরদুয়ারে ২৫৫ দশমিক ২০ মিলিমিটার ও হাসিমারা এলাকায় ৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ের বৃষ্টির জেরে নদীর জল বাড়ছে। পুরসভার চেয়ারম্যান আশিস দত্ত জানান, শহরের ৫,৬,৮.৯,১৫,১৬,১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন। স্লুইসগেটগুলি পুরনো হওয়ায় সমস্যা বাড়ছে। সাতটি পাম্প চালিয়ে শহরের জমা জল কালজানি নদীতে ফেলা হচ্ছে। নদীর জল বাড়ায় চর এলাকায় বসবাসকারীরাও জলবন্দি। তাছাড়া দ্বীপচর ও আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের পূর্ব কাঁঠাল বাড়ি এলাকার বেশ কিছু এলাকাও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

নিকাশি বেহাল

রাজ্য থেকে পুরসভায় ক্ষমতার হাত বদল হলেও শহরের বেহাল নিকাশির হাল ফেরেনি, এমনটাই অভিযোগ তুফানগঞ্জের মানুষের। বুধবার রাতভর তুফানগঞ্জে ১৯১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তার জেরে শহরের লম্বাপাড়া, বাজার রোড, বিডিও অফিস রোড, হাসপাতাল রোড, নেতাজি স্কুল মোড়, ধরের মোড়, ইলেকট্রিক অফিস মোড় ও সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন রাস্তা, বাড়িতে হাঁটু জল দাঁড়িয়ে যায়। নিউটাউনে বহু রাস্তাও জলের নিচে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের সর্বত্র পরিকল্পিত নিকাশি পরিকাঠামো নেই। যে সব নর্দমা আছে সেগুলিও ঠিকঠাক রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে না। নর্দমায় আবর্জনা, প্লাস্টিক জমে থাকা জল উপচে ভেসে গিয়েছে বহু রাস্তা। নিয়মিত নর্দমা সাফাই হলে ওই সমস্যা এড়ানো যেত।

কোন নদীতে কী সর্তকতা


কালজানি হলুদ


রায়ডাক ১ হলুদ


সঙ্কোশ হলুদ


মানসাই হলুদ

জল বাড়ছে

তিস্তা, জলঢাকা, তোর্সা, করলা, মহানন্দা, ফুলহার

বেহাল নিকাশির দায় নিতে অবশ্য রাজি নয় সিপিএম-তৃণমূল কোন শিবিরই। পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান অনন্ত বর্মার দাবি, “এখন নিকাশি ব্যবস্থার আমূল উন্নয়ন হয়েছে। প্রচুর বৃষ্টির জন্য কিছু এলাকায় জল জমলেও তা দ্রুত নেমে গিয়েছে। জাতীয় সড়ক সংস্কারের জন্য বিস্তীর্ণ এলাকার নর্দমার মুখ মাটিতে আটকে না থাকলে আরও কম সময়ে রাস্তার জল নেমে যেত।” প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তমসের আলি বলেন, “নিকাশির উন্নয়নে যা কাজ সে সব বাম আমলেই হয়েছে। এখন রক্ষণাবেক্ষণ নেই, নতুন পরিকল্পনা নেই। তাই সমস্যা বাড়ছে।”

জলমগ্ন জলপাইগুড়ি

এক রাতের বৃষ্টিতে জলমগ্ন জলপাইগুড়ি শহরও৷ প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়ি জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ময়নাগুড়িতে৷ সেখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৫৫ মিলিমিটার৷ জলপাইগুড়িতে এ দিন সকাল পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১২৮.৭ মিলিমিটার৷ জলপাইগুড়ি শহরের কংগ্রেস পাড়া, মহামায়া পাড়া, পশ্চিম কংগ্রেস পাড়া, অশোক নগর, বঙ্কিম সরণী, কদমতলার একাংশ, আনন্দ পাড়া, নিউটাউন পাড়া প্রভৃতি এলাকায় জল জমে যায়৷ ওই সব এলাকার বেশিরভাগ রাস্তাই জলের নীচে যায়৷ কংগ্রেস পাড়া এলাকার বাসিন্দা হরি দত্ত বলেন, ‘‘জানি না কতদিন এই দুর্ভোগের মধ্যে থাকতে হবে৷’’

এই পরিস্থিতির জন্য বিরোধীরা অবশ্য জলপাইগুড়ি পুরসভাকেই দায়ী করেছেন৷ সিপিএম কাউন্সিলার প্রদীপ দে বলেন, ‘‘গত এক বছরে জলপাইগুড়ির নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়নে কোনও কাজ করেনি পুরসভা৷ যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে৷’’ তবে পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, ‘‘ বুধবার রাত থেকে যে পরিমাণ বৃষ্টি জলপাইগুড়িতে হয়েছে, আগে হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হোত৷ কিন্তু এখন জল অনেক কম জমছে৷’’ এরই মধ্যে ক্রান্তির দক্ষিণ চ্যাংমারি এলাকায় তিস্তা নদীর ভাঙন বড় আকার নিয়েছে৷ গত কয়েকদিনে প্রচুর জমি নদী গর্ভে চলে গিয়েছে।

Rain Heavy Rainfall Water Logging জলপাইগুড়ি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy