Advertisement
E-Paper

ভক্তিনগর কাণ্ড নিয়ে তদন্তের দাবি জোরালো

তৃণমূল নেতাদের মাথায় রেখে ভক্তিনগর থানার কালীপুজো কমিটির কাজকর্ম নিয়ে তদন্তের দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে পুলিশ ও শাসক দলের অন্দরেই। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের শীর্ষ কর্তাদের একাংশের কাছে ওই কমিটি, কোথা থেকে এবং কী ভাবে চাঁদা আদায় করেছে, তা নিয়ে কিছু তথ্য পৌঁছেছে।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৬ ০২:১৭

তৃণমূল নেতাদের মাথায় রেখে ভক্তিনগর থানার কালীপুজো কমিটির কাজকর্ম নিয়ে তদন্তের দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে পুলিশ ও শাসক দলের অন্দরেই। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের শীর্ষ কর্তাদের একাংশের কাছে ওই কমিটি, কোথা থেকে এবং কী ভাবে চাঁদা আদায় করেছে, তা নিয়ে কিছু তথ্য পৌঁছেছে।

সেই সঙ্গে যে দু’জন নেতা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক হয়েছেন, সেই সৌমিত্র কুণ্ডু ও জয়ন্ত মৌলিকের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে তৃণমূলের একাধিক নেতা প্রদেশ দফতরে বার্তা পাঠিয়েছেন। প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা জানান, ভাসা ভাসা কিছু অভিযোগ তাঁদের কাছেও পৌঁছেছে। তাই দলের তরফে প্রাথমিক খোঁজখবর শুরু হয়েছে। তৃণমূলের কাউন্সিলর ও ভক্তিনগর এলাকার আরেকটি ক্লাবের সদস্যদের কয়েকজনের কাছ থেকেও ওই ব্যাপারে কিছু অভিযোগ পৌঁছেছে প্রদেশ দফতরে।

তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে তদন্ত হবে কি না, সেই প্রসঙ্গে পুলিশের কোনও কর্তা কিংবা তৃণমূলের ওই প্রদেশ নেতা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের প্রথম সারির এক অফিসার জানান, যে হেতু বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরেও রয়েছে, তাই যথা সময়ে সঠিক পদক্ষেপ করা হবে। প্রদেশ তৃণমূলের এক নেতা জানান, তাঁরা আরও কিছু স্পষ্ট তথ্য সংগ্রহের পরেই দলের শীর্ষস্তরের অনুমতি সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন।

বিতর্কের সূত্রপাত সৌমিত্রবাবু ওরফে সদা ও জয়ন্তবাবুকে ভক্তিনগর থানার কালীপুজো কমিটির মাথায় বসানো নিয়ে। তা নিয়ে বিরোধীরা তো বটেই, পুলিশ ও শাসক দলের অনেকেই নানা প্রশ্ন তোলেন। সাধারণত, থানার কালীপুজো কমিটি পুলিশের পরিবারের লোকজন কিংবা স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়েই হয়ে থাকে। আড়াল থেকে অনেকেই সহযোগিতা করেন। কিন্তু, সরাসরি দু’জন নেতার নাম কার্ডে ছাপিয়ে চাঁদা তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের অনেকেই।

শিলিগুড়ির মেয়র তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটা নিয়ে বিশদে তদন্ত হওয়া দরকার। কারণ, নেতা-পুলিশ জোটবন্ধনের প্রেক্ষাপট ও উদ্দেশ্য কি তা বুঝতে কারও অসুবিধে হয় না। আশা করব, রাজ্য সরকার তদন্ত করবে। আমিও কিছু অভিযোগ, তথ্য পেয়েছি। পরের বিধানসভা অধিবেশনে যাওয়ার সময়ে তা নিয়ে যথা স্থানে জমা দেব।’’

তবে সদাবাবু ও জয়ন্তবাবু দুজনেই দাবি করেছেন, তাঁদের নাম কমিটিতে থাকলেও চাঁদা আদায় কিংবা সরাসরি পুজোর কোনও আয়োজনে তাঁরা যোগ দেননি। জয়ন্তবাবু বলেন, ‘‘আমি তো বেশ কিছু দিন শিলিগুড়িতেই ছিলাম না। সবে ফিরেছি। ওই কমিটির হয়ে কোনও কাজ করিনি।’’

সদাবাবু আগেই জানিয়েছেন, তিনি খোলা মনেই থানার পুজো কমিটির সভাপতি হওয়ার প্রস্তাব মেনেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কোনও চাঁদা তোলার মধ্যে ছিলাম না। এসবই রটনা।’’

কিন্তু, পুলিশের একাংশ একান্তে কিন্তু মানছেন ভক্তিনগর এলাকায় থানার পুজোর জন্য চাঁদা আদায় নিয়ে ব্যবসায়ীদের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি, চাঁদার জুলুমের অভিযোগে তৃণমূলের এক নেতাকে গ্রেফতারের পরে নবান্ন থেকে নির্দেশ পেয়ে সেই পুজোর আয়োজন বন্ধ করে দেয় শিলিগুড়ির পুলিশ। পুলিশের একাধিক কর্তা জানান, খোদ মুখ্যমন্ত্রী যেখানে নির্দেশ দিয়েছেন কড়া পদক্ষেপ করার জন্য, সেখানে ভক্তিনগর থানার পুজো কমিটিতে থাকা এক নেতা তাঁদের ফোন করে ওই পুজো যাতে হয়, সেই ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কমিশনারেটের কয়েকজন অফিসার জানান, সে জন্যই কার ভূমিকা, কি তা সঠিক ভাবে জানতে বিশদে তদন্ত দরকার হয়ে পড়েছে।

Investigation Kali Puja Bhakti Nagar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy