আলোচনা: রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
গোলমাল সামাল দিতে হাসপাতাল ক্যাম্পাসেই গড়ে তোলা হচ্ছে পুলিশ ফাঁড়ি। একজন করে এসআই, এএসআই-সহ ফাঁড়িতে থাকবেন ১০ জন কনস্টেবল। বৃহস্পতিবার দুপুরে রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসে স্থায়ী ফাঁড়ির ঘোষণা করল জেলা পুলিশ। পাশাপাশি, হাসপাতালের বহির্বিভাগ এবং অন্তঃবিভাগেও বাড়ানো হচ্ছে নিরাপত্তা। এমনকি, হাসপাতালের ওয়ার্ড এবং বহির্বিভাগে অবাধ প্রবেশ রুখতে গেটগুলিতেও বাড়তি নজরদারি চালানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে।
সম্প্রতি, এনআরএস-কাণ্ডের পর রাজ্য জুড়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। মালদহ মেডিক্যালেও জুনিয়র ডাক্তাররা টানা কর্মবিরতি পালন করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছিলেন তাঁরা। এনআরএসের মতো মালদহ মেডিক্যালেও একাধিকবার আক্রান্ত হতে হয়েছে চিকিৎসক, নার্স, নিরাপত্তারক্ষীদের। এমনকি, হাসপাতালে ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটেছে। শুধু মারধর, ভাঙচুরই নয়। হাসপাতালের অন্তঃবিভাগ থেকে একাধিকবার ঘটেছে শিশু চুরির মতো ঘটনা। এছাড়া চুরি, কেপমারি, মাদক খাইয়ে লুঠের মতো ঘটনা যেন রোজকার ঘটনা এই হাসপাতালে। ফলে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে রোগীর আত্মীয়দের পাশাপাশি চিকিৎসকদের একাংশের মধ্যেই ছিল প্রশ্ন। তাই এ দিনের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে জোর দেওয়া হয় নিরাপত্তার উপরেই। সমিতির চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া, এই হাসপাতালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায়, সহ অধ্যক্ষ অমিতকুমার দাঁ এবং অন্যান্য চিকিৎসক, নার্স এবং দু’জন জুনিয়র চিকিৎসকও।
বৈঠক সূত্রে জানা গিয়েছে, জুনিয়র এবং সিনিয়র চিকিৎসকেরা বৈঠকে নিরাপত্তা আরও বাড়ানোর দাবি জানান। এমনকি. হাসপাতাল ক্যাম্পাস পুলিশি টহলদারি আরও বাড়ানোর দাবি জানানো হয়। এরপরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, হাসপাতাল ক্যাম্পাসে একটি স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি থাকবে। অফিসার এবং ন’জন পুলিশকর্মী থাকবেন ফাঁড়িতে। বিচারাধীন চিকিৎসারত বন্দিদের জন্য সেলেও ছ’জন পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকবেন। ডিএসপি বিপুল মজুমদারকে হাসপাতালের নোডাল অফিসার করা হয়েছে। হাসপাতাল জুড়ে ৯৬টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সেই সিসি ক্যামেরার মনিটরিং করবে হাসপাতালের ফাঁড়ির পুলিশ। ইতিমধ্যে, হাসপাতাল জুড়েই হোর্ডিং ঝোলানো হয়েছে। সেখানে হাসপাতালের চিকিৎসক ও অন্য কর্মীদের নিগ্রহের ঘটনায় শাস্তির ধারা উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর কর্তব্যরত পুলিশ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নম্বর দেওয়া ফেস্টুন ঝোলানো হবে। জেলাশাসক জানান, হাসপাতালে অ্যালার্ম পদ্ধতি চালু করা হবে। বেআইনি প্রবেশ রুখতে গেট নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানান, পর্যাপ্ত মহিলা পুলিশকর্মী, সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হবে হাসপাতালে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজায় খুশি হাসপাতালের চিকিৎসক মহল। সুপার অমিত বলেন, ‘‘হাসপাতালের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীও বাড়ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে হাসপাতালে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy