Advertisement
০৪ মে ২০২৪

পরিচারিকাকে মারধরে ধৃত শঙ্করের ভাই

অনিমেশ ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য তৃণমূলে যোগদানকারী অরুণ চন্দের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০৩:০০
Share: Save:

পরিচারিকার চোখে ব্লিচিং পাউডার ছোড়ার অভিযোগে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রাক্তন সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তীর ভাইকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার গভীর রাতে রায়গঞ্জ শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লি এলাকার বাড়ি থেকে অনিমেশ চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি রায়গঞ্জের একটি ঠিকাদার সংস্থার সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, মারধর-সহ একাধিক জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে। মঙ্গলবার সকালে রায়গঞ্জ জেলা আদালতে নিয়ে যাওয়ার আগে রায়গঞ্জ থানার লকআপে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনিমেশ। পুলিশ তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ লকআপে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা শুরু করায়। ফলে এ দিন তাঁকে আদালতে তোলা যায়নি। অনিমেশ ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য তৃণমূলে যোগদানকারী অরুণ চন্দের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। সুস্থ হলে তাঁকে আদালতে তোলা হবে। বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি শঙ্করের দাবি, তিনি রায়গঞ্জের সোনাডাঙ্গি এলাকায় আলাদা বাড়ি করে বসবাস করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পারিবারিক বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। তবে যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’’

ওই আদিবাসী পরিচারিকার নাম স্বপ্না নাগবংশী। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ওই তরুণীর বাড়ি রায়গঞ্জের উত্তর গোয়ালপাড়া এলাকায়। তাঁর দাবি, ‘‘গত প্রায় একযুগ ধরে তিনি শঙ্করের পৈতৃক বাড়িতে থেকে তাঁর প্রতিবন্ধী বোন মাধবী চক্রবর্তীর দেখাশোনা করেন।’’ তাঁর অভিযোগ, পারিবারিক বিবাদের জেরে গত ১৭ মার্চ অনিমেশ ও তাঁর স্ত্রী বেদতীর্থা মাধবী ও তাঁর মা সন্ধ্যা চক্রবর্তীকে গালাগালি করেন। এরপর অভিযুক্তরা তাঁদেরকে মারধরের চেষ্টা করেন। সেইসময় স্বপ্না মাধবী ও সন্ধ্যাকে অভিযুক্তদের মারধরের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য রুখে দাঁড়ান। তখনই অনিমেশ তাঁর চোখে ব্লিচিং পাউডার ছোড়েন। সেইসময় বেদতীর্থা স্বপ্নাকে সম্প্রদায় তুলে গালাগালি করে তাঁর চোখ নষ্ট করে দেওয়ার জন্য অনিমেশকে প্ররোচিত করেন। ওই ঘটনার প্রতিবেশিরা স্বপ্নাকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরদিন তিনি রায়গঞ্জ মহিলা থানায় অনিমেশ ও তাঁর স্ত্রী বেদতীর্থার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

যদিও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অরুণবাবুর পাল্টা দাবি, অনিমেশ ও তাঁর স্ত্রী বেদতীর্থাকে বিনাদোষে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। অনিমেশ তাঁকে জানিয়েছেন, ওইদিন পারিবারিক বিবাদের জেরে ওই পরিচারিকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে বেদতীর্থার উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করেন। সেইসময় অনিমেশ বাড়ির সামনের একটি নিকাশি নালায় ব্লিচিং পাউডার ছড়াচ্ছিলেন। স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে অনিমেশের হাতে থাকা ব্লিচিং পাউডার ওই পরিচারিকার শরীরে গিয়ে পড়ে। ওই ঘটনার পর অনিমেশ তাঁর দিদি, মা ও ওই পরিচারিকার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। যদিও পুলিশ সুপার অরুণের ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Domestic Worker Roygunge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE