খুন করে দেহ বাড়িতে পুঁতে দেওয়ার ঘটনায় ধৃত মহিলার স্বামীকেও গ্রেফতার করল পুলিশ। দু’দিন আগে মালদহের ব্যবসায়ী সাদ্দাম নাদাবকে খুনের ঘটনায় মৌমিতা হাসান নাদাবকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এ বার ওই ঘটনায় মৌমিতার স্বামী রহমান নাদাবকেও গ্রেফতার করা হল। খুনের ১৭ দিন পরে গ্রেফতার করা হল তাঁকে। ওই খুনের নেপথ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের পাশাপাশি, টাকার জন্য হুমকি-সহ বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।
মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপ যাদব জানান, ধৃতদের জেরায় উঠে এসেছে, নিহতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল অভিযুক্ত মহিলার। অভিযুক্ত দম্পতির থেকে একটি দোকানঘর ভাড়া নিয়েছিলেন সাদ্দাম। ২০২২ সাল থেকে ওই দোকানটি চালাচ্ছিলেন তিনি। কিছু দিন পরে মৌমিতার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাঁর। তা নিয়ে মৌমিতার স্বামীর রহমানের সঙ্গে বিবাদ চলছিল বলেও তদন্তে উঠে এসেছে। এই অবস্থায় গত জানুয়ারি থেকে সাদ্দামকে ওই দোকানটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন দম্পতি। গত এপ্রিলে দোকানটি বন্ধ করিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশি জেরায় ধৃতেরা দাবি করেন, দোকানটি বন্ধ করিয়ে দেওয়ার পরে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রসঙ্গ টেনে সাদ্দামকে হুমকি দিত দম্পতি। টাকা চেয়েও হুমকি দিতেন তিনি। এই অবস্থায় সাদ্দামকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা। তবে এলাকায় খুন করলে তাঁদের দিকেই সন্দেহ যেত পুলিশের। তা অনুমান করেই পার্শ্ববর্তী জেলা দক্ষিণ দিনাজপুরে নিজের বাপের বাড়িতে সাদ্দামকে ডেকে পাঠান মৌমিতা। পুলিশ সুপার জানান, গত ১৬ মে মৌমিতা দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে নিজের বাড়িতে চলে যান। তার পরে ১৮ মে ডেকে পাঠান সাদ্দামকে। সেখানেই ধারালো কোনও বস্তু দিয়ে সাদ্দামকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ।
বস্তুত, গত ১৮ মে থেকে নিখোঁজ ছিলেন সাদ্দাম। তাঁর পরিবারের তরফে ইংরেজবাজার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। কিন্তু অনেক খুঁজেও যুবকের হদিস পাচ্ছিলেন না তদন্তকারীরা। শেষে গত সোমবার তপনের বাড়ি থেকে সাদ্দামের দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, দেহটি একটি বাড়িতে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। তার পর সেই দেওয়ালে প্লাস্টারও করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
পুলিশি জেরায় মহিলা দাবি করতে থাকেন, তিনি একাই ওই খুন করেছেন। তবে সাদ্দামের দেহ যে অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে, তা এক জন মহিলার কাজ নয় বলেই ধারণা পুলিশের। পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার দিন মৌমিতার স্বামী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে তাঁর কী ভূমিকা ছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ধৃতদের মোবাইল নম্বরও খতিয়ে দেখছেন পুলিশকর্মীরা। এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছেন কি না, তা-ও তদন্তের আওতায় রয়েছে।