Advertisement
E-Paper

সাইবার পাঠ শিলিগুড়ি পুলিশের

অষ্টম শ্রেণির শুভম ভৌমিকের জি-মেল অ্যাকাউন্টটি ক’দিন আগেই হ্যাক হয়েছিল। শুভমের কাছে সেই হ্যাকিং মেসেজও এসেছিল। এক আত্মীয়ের পরামর্শে অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয় করে শুভম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৬ ০২:১২

অষ্টম শ্রেণির শুভম ভৌমিকের জি-মেল অ্যাকাউন্টটি ক’দিন আগেই হ্যাক হয়েছিল। শুভমের কাছে সেই হ্যাকিং মেসেজও এসেছিল। এক আত্মীয়ের পরামর্শে অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয় করে শুভম।

দশম শ্রেণির প্রিয়ম ডাব্রিয়ালের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর ছবি দিয়ে ভুয়ো ফেসবুক খোলা হয়েছিল। যা শুনে ক’দিন আতঙ্কে ছিল প্রিয়ম। বারবার নজর রাখছিল নিজের অ্যাকাউন্টে। কিন্তু ঠিক কী করলে সাইবার অপরাধীদের হাত থেকে দূরে থাকা যায়, তার ধারণা পুরোপুরি স্পষ্ট ছিল না শুভম, প্রিয়মদের। তেমনিই, সোশ্যাল সাইট থেকে ছবি চুরি, সার্চ ইঞ্জিনগুলি কতটা ভরসার বা অনলাইন শপিং কী সুরক্ষিত- এমনই হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল সপ্তম শ্রেণির কল্পিতা চৌধুরী, প্রতীক রায় বা সুমন দত্তদের কিশোর মনে।

প্রশ্নগুলি মনেই থেকে যেত, যদি না শিলিগুড়ি পুলিশের একটি বিরাট দল বুধবার দুপুরে তাদের স্কুলে পৌঁছাতো। ঘণ্টা খানেকের স্পেশাল ক্লাস। তাতেই অনেক কিছুই ওদের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেল। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সাইবার ক্রাইম নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এ দিন থেকে শুরু হল পুলিশের প্রচার অভিযান। সাইবার ক্রাইমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর অচিন্ত্য গুপ্ত সহ গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারদের তত্ত্বাবধানে ওই ওয়ার্কশপ শুরু হয়েছে।

এ দিন পরপর হিলকার্ট রোড লাগোয়া ডক্টর রাজেন্দ্রপ্রসাদ গার্লস হাই স্কুল এবং নবগ্রামের সেন্ট জোশেফস স্কুলে (ভক্তিনগর) ওয়ার্কশপ হয়েছে। প্রথম স্কুলটিতে সিপি চেলিং সিমিক লেপচা উপস্থিত থেকে ছাত্রীদের সাইবার ক্রাইম সম্পর্কিত নানা খুঁটিনাটি বোঝান। সিপি বলেন, ‘‘প্রতিদিন সমাজে যত অপরাধ হচ্ছে, তার বেশিরভাগে প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। স্মার্ট ফোন থেকে ইন্টারনেট, সোসাল সাইট নেটওয়ার্ক সাইট সব আছে। স্কুল পর্যায় থেকেই ছেলেমেয়েদের খারাপ-ভালটা বোঝানো জরুরি হয়ে পড়েছে।’’

স্কুলের নবম থেকে একাদশ শ্রেণির ছাত্রীরা কর্মশালায় অংশ নেয়। প্রধান শিক্ষিকা সঞ্চিতা দেবনাথ বলেন, ‘‘আমাদের স্কুল শহরের স্পর্শকাতর এলাকায়। রেল লাইন, বস্তি, বাণিজ্যিক এলাকা রয়েছে। মেয়েদের বেশি করে এসব নিয়ে সর্তক থাকাটা খুবই জরুরি।’’

খাকি পোশাক, কোমরে রিভলবার বা হাতে ম্যানপ্যাক দুরে রেখে বুধবার দুপুরের ‘পুলিশ অ্যাঙ্কেল’রা একটু অন্যরকম ছিলেন। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের অডিটোরিয়ামে নিচে চেয়ারে বসিয়ে মঞ্চে তাঁরাই বসলেন। রীতিমত প্রজেক্টর, ল্যাপটপ, বই নিয়ে ক্লাসের ঢঙে ‘সাইবার ক্রাইম’ নিয়ে কয়েকশ ছাত্রছাত্রীকে বোঝালেন বিশ্বজোড়া জালের (ইন্টারনেট) নানা সুফল-কুফল। সোসাল সাইটে নজর চালিয়ে প্রাক্তন প্রেমিকার ছেলেকে অপহরণ, ব্যাঙ্ক অফিসার পরিচয় দিয়ে তথ্য হাতিয়ে টাকা লোপাটের মত বিভিন্ন মামলার উদাহরণ, গল্প আকারেও শোনালেন।

সেন্ট জোশেফ স্কুলের প্রিন্সিপাল সিস্টার ম্যারি বললেন, ‘‘আজকের দুনিয়ায় সাইবার ক্রাইম ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পুলিশ এসব নিয়েই কাজ করে। তাই ওদের মুখ থেকেই ছেলেমেয়েরা সতর্কবার্তা, করণীয় বিষয়গুলি শোনাটা খুবই কার্যকরী।’’ অনুষ্ঠানে শিলিগুড়ি ডিসি (ডিডি) সুনীল যাদব মাইক হাতে ছাত্রছাত্রীদের নানা প্রশ্নের উত্তরও দেন।

কমিশনারেটের সাইবার ক্রাইম থানার অফিসারেরা জানান, প্রশ্নোত্তর পর্বে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড নিয়মিত বদলানো, সাইবার ক্যাফেতে সাবধানে কাজ করা, কাজের পর অ্যাকাউন্ট লগআউট করা, সোসাল সাইটে তথ্য, ছবি ও টেলিফোন নম্বর পরিচিত সার্কেলের মধ্যে রাখা, নিরাপদ সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করা, ডাউনলোড বুঝে শুনে করা, ফ্রি ইন্টারনেট ডাটা বা সফটওয়্যারের প্রলোভনে পা না দেওয়া, প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট এড়িয়ে চলা-সহ একাধিক বিষয়ে ছেলেমেয়েদের বোঝানো হয়েছে।

Police Workshop cyber crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy