Advertisement
E-Paper

দেহ গেল কোথায়, চলছে খোঁজ

শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় বারবার স্বামীর অত্যাচারের কথা জানিয়েছেন সুমনা। ২৫ বছরের বিবাহিত জীবন হলেও মণীন্দ্রকে তিনি ভালবেসেছেন বলে সুমনা জানিয়েছেন, দাবি পুলিশের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৯ ০৫:৫৫
তল্লাশি: পিন্টুর দেহ খুঁজতে ক্যানালে চলছে তল্লাশি। নিজস্ব চিত্র

তল্লাশি: পিন্টুর দেহ খুঁজতে ক্যানালে চলছে তল্লাশি। নিজস্ব চিত্র

টানা জেরা চলছে পিন্টু ভৌমিক অন্তর্ধান রহস্যে অভিযুক্ত পিন্টুর স্ত্রী সুমনা ও তাঁদের বন্ধু মণীন্দ্র সিংহের। মাটিগাড়া থানায় রাখা হয়েছে মণীন্দ্রকে আর সুমনা রয়েছেন মহিলা থানায়।

শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় বারবার স্বামীর অত্যাচারের কথা জানিয়েছেন সুমনা। ২৫ বছরের বিবাহিত জীবন হলেও মণীন্দ্রকে তিনি ভালবেসেছেন বলে সুমনা জানিয়েছেন, দাবি পুলিশের। এই সম্পর্কের বয়স বছর পাঁচেকের বেশি বলেও পুলিশকে জানিয়েছেন সুমনা। অন্যদিকে জেরার মুখে মণীন্দ্র বারবার ফেঁসে যাওয়ার দাবি করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পিণ্টুকে মারার জন্য তাঁর কোনও পরিকল্পনা ছিল না বলেই জানিয়েছে মণীন্দ্র। সুমনা পিন্টুর মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত না করলে তিনি কোনওভাবে সেখান থেকে বেরিয়ে যেতেন বলে জানিয়েছেন মণীন্দ্র। পুলিশের কথায়, মণীন্দ্র জানিয়েছেন সুমনার কথায় তিনি দেহ সরান।

এ দিকে শনিবারের জেরায় কী ভাবে পিন্টুর দেহ সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মণীন্দ্র। পুলিশ জানিয়েছে, তিনতলা বাড়ির পিছন দিয়ে পিন্টুর দেহ নামানোর পরে অনেকটা ঘুরপথে ক্যানালের রাস্তায় পৌঁছেছিলেন মণীন্দ্র। পুলিশ সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের লাগোয়া মেডিক্যাল মোড় থেকে চটহাট, রাঙাপানি হয়ে ফুলবাড়ি মোড়ের দিকে না গিয়ে ব্যারাজের পাশের কাঁচা রাস্তা দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছন মণীন্দ্র। কারণ ফুলবাড়ি মোড়ের কাছে টোলপ্লাজায় সিসিটিভি থাকে। রাতে ওই এলাকায় পুলিশের নাকাচেকিং থাকে। গাড়ির পিছনের আসনে দেহ রেখে ঘুরপথে ফুলবাড়ি বাজারে পৌঁছে মণীন্দ্র আমবাড়ি ক্যানালের রাস্তা ধরেন বলে অফিসারেরা জানাচ্ছেন।

রাতের সুনসান ক্যানালের একটি গলির ধারে গাড়ি থেকে দেহটি জলে ফেলে ঘণ্টাখানেক পরে বাড়ি ফেরেন মণীন্দ্র। বৃহস্পতিবার ক্যানালের যে জায়গায় দেহ ফেলার কথা বলেছিলেন মণীন্দ্র, শনিবার সেই দাবি থেকে সরে এসে অন্য জায়গার কথা বলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেই জায়গায় নরম মাটিতে পায়ের ছাপ, কোনও কিছু ঘষে নিয়ে যাওয়ার কিছু নমুনা পেয়েছে পুলিশ। তেমনই, দেহ লোপাটের সময় মণীন্দ্রের সঙ্গে আরও কেউ ছিল কি না জানার চেষ্টা চলছে।

এ দিন দিনভর রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলার টিমের কর্মীদের ক্যানালে নামিয়ে, স্পিডবোট দিয়ে তল্লাশি করেও পিন্টুর দেহের কোনও হদিশ মেলেনি। ক্যানালের দু’টি গেট এ দিন বন্ধ করায় জল নামতে শুরু করেছে। শিলিগুড়ি কমিশনারেটের এক ডিসি বলেন, ‘‘আজ, রবিবার ভোর থেকে ফের তল্লাশি শুরু হবে।’’

তদন্তকারীরা জেনেছেন, মণীন্দ্র ও সুমনার সম্পর্কে মাঝে অবনতি হয়েছিল। সুমনার এক আত্মীয় একসময় মেডিক্যালে কর্মরত ছিলেন। তাঁর হাত ধরেই পিন্টুর ঠিকাদারি, খাবার সরবরাহের ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে। সুমনার নামেও ব্যবসা রয়েছে পিন্টুর। ওষুধের সরবরাহকারী মণীন্দ্র সেখানেও ঢুকতে চেয়েছিলেন। ওই ব্যবসা নিয়ে আদালতে একটি মামলা রয়েছে। একসময় পিন্টু, সুমনার ব্যবসার বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর সঙ্গে মেলামেশা শুরু করেছিলেন মণীন্দ্র। পরে আলোচনা করে পরিস্থিতি কিছুটা ঠিক হয়। তাই ব্যবসায়িক কোনও শত্রুতার জেরে ঘটনাটি ঘটেছে কি না সেই দিকও পুলিশ খতিয়ে দেখা শুরু করেছে।

৬ মে বাড়িতে স্ত্রী সুমনার সঙ্গে মণীন্দ্রকে ক্ষোভে, রাগে ফেটে পড়েন পিন্টু। কথা কাটাকাটির মাঝে সুমনা স্বামীর মাথায় আঘাত করেন বলে অভিযোগ। ছ’ঘণ্টা পরে ওই দিন রাতেই প্লাস্টিকে মুড়িয়ে দেহ লোপাটের পরে স্বামীর নামে মিসিং ডায়েরি করেন সুমনা। চারদিনের মাথায় পিন্টুর পরিবারের অভিযোগে ভিত্তিতে সুমনা ও মণীন্দ্রকে পুলিশ ধরে। সিসিটিভি ফুটেজ, জেরায় পিন্টুকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা

উঠে আসে।

Crime Murder Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy