গায়ের জোরে চলছে পুকুর ভরাট। নিজস্ব চিত্র।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত ধূপগুড়ি বাজার। আগুন নিভে যাওয়ার পরেও কয়েক ঘণ্টা ধরে সেই ছাই থেকে ধোঁয়া বেরতে দেখা গিয়েছে। শহরে জলের অভাবেই নাকি আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে দীর্ঘক্ষণ সময় লাগে। কারণ একের পর এক জলাশয় বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের চোখের সামনে। তাও যেন প্রশাসনের কোনও হুঁশ নেই। এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের।
কাছাকাছি কোনও জলাশয় নেই। তাই ধূপগুড়ি বাজারের আগুন নেভাতে অনেক দূর থেকে জল আনতে হয়েছে দমকলকে। কারণ, আশপাশের যে সব জলাশয় ছিল তা বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। এই অভিযোগ শুধু দমকল বা সাধারণ মানুষের নয়, মন্ত্রী থেকে অনেক প্রশাসনিক আধিকারিকও একই কথা বলছেন। কিন্তু সমাধান কোথায়?
ধূপগুড়ি পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে গেলেই দেখা যাবে, কত দ্রুত একটি জলাশয় বুজিয়ে ফেলার কাজ চলছে। স্থানীয় বাসিন্দা অনিকেত বসাক জানিয়েছেন, গত বর্ষাতেও তাঁরা এই জলাশয়ে মাছ ধরেছেন। আর এখন জলাশয়টির অস্তিত্বই বিলীন হওয়ার পথে। কিন্তু প্রশাসনের নাকের ডগায় এই সব কাজকর্ম চললেও কেউ যেন দেখতেই পাচ্ছেন না।
এই জলাশয়টির মালিক বিজয় দাস অভিযোগ করেছেন, পুকুর ভরাট করার পিছনে রয়েছেন কাউন্সিলর সুজাতা সরকার ও তাঁর স্বামী মনোজ ওরফে ভন্ডেল দেও। বিজয় নাকি বারা বার কাউন্সিলর বা পুরসভার কর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছেন। কাজের কাজ তো কিছু হয়ইনি, উল্টে জলাশয় ভরাটের কাজে বাধা দেওয়ায় তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রাতের অন্ধকারে ভরিয়ে ফেলা হচ্ছে তাঁর জলাশয়। আর এই কাজে যুক্ত আছে রাজু গোপ, সঞ্জয় গোপ, তপন সাহা নামে এলাকার কিছু যুবক।
অনিকেত জানিয়েছেন, ধূপগুড়ির রবীন্দ্রনগরে একটি বড় জলাশয় ছিল। যেখানে প্রচুর শামুকখোল পাখি আসত। এমনকি এলাকার মানুষ মাছ ধরতেন। কিন্তু ২ মাস ধরে এই জলাশয়টিকে ভরিয়ে ফেলা হচ্ছে।
ধূপগুড়িতে ভস্মীভূত বাজার পরিদর্শনে এসে মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানান, তিনি শুনেছেন এখানে নাকি অবৈধ ভাবে জলাশয় বুজিয়ে ফেলার কাজ চলছে। শহরে এ ভাবে জলাশয় ভরাট একদমই বরদাস্ত করা হবে না। তিনি পুরসভার চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন শহরের কোথাও যেন জলাশয় ভরাট না করা হয়। যারা এই কাজ করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ বিষয়ে ধূপগুড়ি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশকুমার সিংহ বলেন, “মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ শুক্রবার যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা পালন করা হবে। জলাশয় ভরাট করা হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে পুরসভা। আপনাদের মাধ্যমে খবর পেলাম। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy