বিবাহ বহির্ভূত সর্ম্পকের প্রতিবাদ করায় অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর পেটে লাথি মেরে গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হবিবপুর থানার জগজ্জীবনপুর গ্রামে। আক্রান্ত নিরুপমা হালদার আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন মালদহ মেডিক্যালে। রবিবার সকালে থানায় অভিযুক্ত স্বামী সমর হালদার ও তার মা-ভাইয়ের নামে লিখিত অভিযোগ করা হয়। এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তল্লাশি চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জগজ্জীবনপুরের বাসিন্দা অমিয় বিশ্বাসের মেয়ে নিরুপমা নিজেই পছন্দ করে বছর খানেক আগে বিয়ে করেন প্রতিবেশী সমরকে। সে নিজেদের জমিতেই চাষবাস করে। ভাই ও মাকে নিয়ে সংসার। অভিযোগ, বিয়ের তিন মাস পর নিরুপমা জানতে পারেন পাশের গ্রামের এক মহিলার সঙ্গে সমরের সর্ম্পক রয়েছে। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর বিবাদ লেগেই থাকত। ছ’মাস আগে অন্তঃসত্ত্বা হন নিরুপমা। তার পর থেকেই সমর গর্ভপাত করার জন্য তাঁকে চাপ দিতেন বলে অভিযোগ। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় চলত অত্যাচার। অভিযোগ, তাঁর শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয় একাধিক বার। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাপের বাড়ি চলে যান নিরুপমা। দু’পরিবারের মধ্যে আলোচনার পর ফের শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন ওই তরুণী।
সমরের বিবাহবহির্ভূত সর্ম্পক নিয়ে এ দিন ফের বচসা শুরু হলে নিরুপমাকে মারধর করা হয়। পেটে লাথি মেরে তাঁকে বাড়ির সামনে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে তাঁকে নিয়ে যান স্থানীয় আরএন রায় গ্রামীণ হাসপাতালে। প্রচণ্ড রক্তপাত হওয়ায় রাতেই তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় মালদহ মেডিক্যালে। মেডিক্যাল কলেজের স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ মলয় সরকার জানান, অস্ত্রোপচার করা হলেও গর্ভস্থ শিশুটিকে বাঁচানো যায়নি। প্রচণ্ড রক্তপাত হওয়ায় নিরুপমার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
নিরুপমার মা সরস্বতী হালদার বলেন, ‘‘জামাই এমন কাণ্ড ঘটাবে তা আমরা কখনও ভাবিনি। পুলিশ উপযুক্ত শাস্তি দিক।’’ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।