বন্ধ করতোয়া সেতু।নিজস্ব চিত্র
হায়দারপাড়ার বাসিন্দা অনুপ দাস। বৃহস্পতিবার সকালে গাড়ি নিয়ে রাজগঞ্জের জুগনুভিটা যাচ্ছিলেন কাজে। সাহুডাঙির আগে জানতে পারেন, করতোয়া সেতুর সংস্কারের জন্য শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি যাওয়ার বিকল্প রাস্তা বন্ধ। ঘুরপথে শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ির দিকে যেতে হবে। অগত্যা গাড়ি ঘুরিয়ে তাই করলেন অনুপবাবু। শুধু অনুপবাবু নয়, সকাল থেকে ৩১-ডি জাতীয় সড়কের বদলে ওই রাস্তা দিয়ে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির মধ্যে যাতায়াত করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন বহু ছোট গাড়ির চালক ও যাত্রীরা।
ওই রাস্তায় ঢুকে পড়া চালকদের ঘুরপথে হাতিমোড়, ফুলবাড়ি মোড়, ভুটকি হয়ে কয়েক কিলোমিটার বেশি ঘুরে যাতায়াত করতে হয়েছে। চালকদের অভিযোগ, এ দিন থেকে যে রাস্তাটি বন্ধ করা হবে তা ঠিকঠাক প্রচার করা হয়নি। আবার সংস্কারের পর কবে সেতুটি চালু হবে তাও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়নি। পূর্ত দফতরের অফিসারেরা জানান, বর্ষার আগে কাজ শেষ করার চেষ্টা করা হবে। সেতুটির স্তম্ভ, বিম, বেয়ারিং-সহ বিভিন্ন অংশে সমস্যা দেখা দিয়েছে। নিচের অংশে ফাটলও রয়েছে। বড় গাড়ি, ট্রাক অনেকদিন আগেই ওঠা বন্ধ করা হয়েছে। এ বার দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ছোট গাড়ি, পিকআপ ভ্যান চলাচলও বন্ধ করা হল। রাস্তাটি যে বন্ধ হবে তা এলাকার বাসিন্দাদের জানানোও হয়েছিল।
রাজগঞ্জের তৃণমূলের বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, ‘‘সেতুটির খুব খারাপ অবস্থা জানিয়ে রাস্তা বন্ধের কথা বলেছিল। কিন্তু তার জন্য কয়েকদিন আগে থেকে প্রচারের দরকার ছিল। তা হয়নি বলে শুনছি।’’ খগেশ্বরবাবু জানান, প্রশাসনের অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
জাতীয় সড়ক দিয়ে শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ির মধ্যে যাতায়াত ছাড়াও আমবাড়ি হয়ে রন্ধামালি দিয়ে নতুন চওড়া রাস্তায় যাতায়াত করা যায়। জাতীয় সড়কে যানজট, ট্রাকের লাইন থাকায় প্রতিদিনই জাতীয় সড়ক এড়িয়ে চালকরা বিকল্প রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করেন। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক রচনা ভকত মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেতুটি বন্ধ করার নির্দেশ দেন। এ দিন ভোরে সেতুটি বাঁশ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। বাইক, স্কুটিকে অবশ্য আপাতত ছাড় দেওয়া হয়েছে। এলাকা দিয়ে যাওয়া গাড়ি নিয়ে যাওয়া রমেশ্বর বর্মন, সিপাই রায়, গণি মাহাত’রা জানান, এ রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন মালপত্র, শাক সব্জি-সহ অন্য কিছু ছোট গাড়ি যায়। ঘুরপথে গেলে সময় ও টাকা বেশি লাগবে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত ২১ জানুয়ারি সমীক্ষার পর পূর্ত দফতরের জলপাইগুড়ির হাইওয়ে ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার জেলাশাসককে সেতুটি বন্ধ করার ব্যবস্থা করতে বলেন। তার পরে জেলাশাসক বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রশাসন, পুলিশকে জানান। জেলাশাসক বলেন, ‘‘যে কোনও সময় বড় বিপদ হতে পারে। তাই আর ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। ডাইভারশনটি যাতে তাড়াতাড়ি হয় তা দেখা হচ্ছে। সেতু সংস্কারের কাজও শুরু হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy