Advertisement
E-Paper

নাকার নামে কি তোলা, উঠছে প্রশ্ন

মাত্র তিন সপ্তাহ আগেই নাকা তল্লাশির সময় মালদহের বৈষ্ণবনগরে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল এক পুলিশ আধিকারিকের। বৈষ্ণবনগরের পর এ বার একইভাবে দুর্ঘটনা ঘটল কালিয়াচকের নওদা যদুপুরে। মৃত্যু হল দুই চামড়া ব্যবসায়ীর। আহত হয়েছেন আরও এক যুবক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৬
অবরোধ: দুর্ঘটনার পরে জাতীয় সড়কে ক্ষোভ বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র

অবরোধ: দুর্ঘটনার পরে জাতীয় সড়কে ক্ষোভ বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র

মাত্র তিন সপ্তাহ আগেই নাকা তল্লাশির সময় মালদহের বৈষ্ণবনগরে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল এক পুলিশ আধিকারিকের। বৈষ্ণবনগরের পর এ বার একইভাবে দুর্ঘটনা ঘটল কালিয়াচকের নওদা যদুপুরে। মৃত্যু হল দুই চামড়া ব্যবসায়ীর। আহত হয়েছেন আরও এক যুবক। আর দুটি দুর্ঘটনাই ঘটেছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। ফলে পুলিশের নাকা তল্লাশির ধরণ নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এমনকী, নাকা তল্লাশির নামে পুলিশের বিরুদ্ধে তোলাবাজিরও অভিযোগ তুলেছেন সাধারণ মানুষ। অভিযোগ, তল্লাশির নামে তোলাবাজি চালায় পুলিশের একাংশ। তাই ঝুঁকি নিয়ে কখনও গভীর রাতে, আবার কখনও ভোরে অন্ধকার এলাকা গুলিতে নাকা তল্লাশিতে নামে। যার জন্যই দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে জেলায়। যদিও তল্লাশির নামে তোলাবাজির অভিযোগ মানতে নারাজ পুলিশ আধিকারিকেরা।

গত, ১০ ডিসেম্বর রাত ১২টা নাগাদ বৈষ্ণবনগর থানার ১৭ মাইল এলাকা। জাতীয় সড়কে এসআই রাম চন্দ্র কুমারের নেতৃত্বে চলছিল নাকা তল্লাশি। সেই সময় ফরাক্কা গামী একটি লরি ওই পুলিশ আধিকারিককে পিষে দিয়ে পালিয়ে যায়। মালদহ থেকে কলকাতা যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়েছিল রামচন্দ্র বাবুর। ঘটনাস্থল থেকে এবার মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে কালিয়াচকের নওদা যদুপুরে পুলিশের নাকা তল্লাশির সময় মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল মহম্মদ মহিউদ্দিন মোমিন(৩০) ও আব্দুল বারিক(২৪) নামে দুই চর্ম ব্যবসায়ীর। একই সঙ্গে সামেদ শেখ নামে আরও এক ব্যবসায়ী আশঙ্কাজনক রয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে তল্লাশির জন্য মালদহ গামী একটি ট্রাক দাঁড় করায় পুলিশ। সেই গাড়ির পেছনে দুটি মোটর বাইকে ছিলেন মহিউদ্দিন, আব্দুল বারিক ও সামেদ শেখ। ঠিক সেই সময়ই মালদহ গামী আরও একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁদের ধাক্কা মারে। ঘটনায় দুটি গাড়ির মাঝে পড়ে ঘটনাস্থলে মহিউদ্দিনের মৃত্যু হয়। আর মেডিক্যাল কলেজে মারা যান আব্দুল বারিক।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নওদা যদুপুর বাজার থেকে ৫০০ মিটার দূরে নির্জন জায়গায় নাকা তল্লাশি করছিল পুলিশ। আর সেই অন্ধকারের সুযোগে তল্লাশি নামে পুলিশ তোলাবাজি করে বলে অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। একই নাকা তল্লাশির ধরন নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। নির্জন অন্ধকারের পরিবর্তে কেন মোড় গুলিতে তল্লাশি হয় না। এছাড়া জাতীয় সড়কে ডিউটি করার সময় ট্রাফিক পুলিশেরা লুমিনার জ্যাকেট পড়ে থাকেন। রাতের বেলা সেই জ্যাকেট জ্বলজ্বল করে। যদিও সেই জ্যাকেট নাকা তল্লাশির সময় ব্যবহার করা হয় না বলে অভিযোগ তুলেছেন সাধারন মানুষ। পুলিশের এক কর্তা বলেন, জনবহুল এলাকায় তল্লাশির ফলে অপরাধীরা সক্রিয় হয়ে যায়। তাই অপরাধীদের ধরার জন্য নির্জন এলাকায় বেছে নেওয়া হয়। এছাড়া তিনি এও বলেন, কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগরে হেলমেট পড়ার প্রবণতা নেই। এমনকী, বহু মোটর বাইকের বৈধ কাগজও নেই। তাই পুলিশকে ফাঁকি দিতে গিয়েই দুর্ঘটনা গুলি ঘটছে। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) দীপক সরকার বলেন, “তল্লাশির নামে তোলাবাজির অভিযোগ ঠিক না। তবুও খতিয়ে দেখা হবে।”

ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতের পরিবারের লোকেরা। মৃত আব্দুল বারিকের ভাই সামের মামুন জানায়, “রোজকার মতো এদিনও দাদা জামাই বাবুর সঙ্গে কাজে বের হয়েছিল। আমাদের দুটি পরিবারই শেষ হয়ে গেল।”

Accident Police Searching
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy