ফাঁকা চেয়ার
ফের মেজাজ হারালেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। জলপাইগুড়িতে করলা সেতুর শিলান্যাস করতে এসে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি না দেখে রেগে যান মন্ত্রী। শুক্রবার জলপাইগুড়ি শহরের সমাজ পাড়ার দোলনা সেতু নামে পরিচিত করলা নদীর উপর সেতুর কাজের শিলান্যাস করতে এসে মন্ত্রী বলেন, ‘‘১০ কোটি টাকার কাজ অথচ ১০০ জন মানুষও উপস্থিত নেই। কেন? গ্রামে তো ২ কোটির টাকার উন্নয়নের কাজে প্রায় ৫০০০ মানুষ হাজির থাকেন। স্থানীয় কাউন্সিলর একাই এসেছেন। এলাকার মানুষদের তো নিয়ে আসতে পারতেন...।"
অনুষ্ঠান শুরুর প্রায় পনেরো মিনিট পরে মঞ্চে এসে মন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন জলপাইগুড়ির সহকারী সভাধিপতি দুলাল দেবনাথ। তাঁর উদ্দেশেও মন্ত্রী বলেন, ‘‘একা কেন? পাঁচ জন মানুষকে তো নিয়ে আসতে পারতেন।’’
এই প্রসঙ্গে এ দিনের অনুষ্ঠানে হাজির থাকা জলপাইগুড়ির সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন, জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু, পুরসভার চেয়ারম্যান পরিষদের সদস্য সন্দীপ মাহাতো, সহকারী সভাধিপতি দুলাল দেবনাথ সহ সকলেরই বক্তব্য—বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠানের কথা জানতে পেরেছেন। মানুষকে কখন জানাবেন?
জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, ‘‘মন্ত্রী ঠিকই বলেছেন। সত্যিই আমরা আগে খবর পেলে সবাইকে জানাতে পারতাম।’’ জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান পরিষদের সদস্য সন্দীপ মাহাতো বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময়ই বলেন মানুষকে সঙ্গে নিয়েই উন্নয়নের কাজ করতে হবে। অথচ আমারা এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারছি না। আমাকে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতর নির্বাচনী বিধি লাগু হওয়ার আগে শিলান্যাস করতে তড়িঘড়ি করেছে। আগে জানালে অবশ্যই আমরা ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে আসতে পারতাম।’’
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত জলপাইগুড়ি পুরসভার কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ সরকারও একই কথা বলেছেন। মন্ত্রী অনুষ্ঠান মঞ্চে বসেও কাউন্সিলরদেরকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করেন। কাউন্সিলরেরা মন্ত্রীকে জানান, ‘‘সময়ই তো পাইনি।’’ মন্ত্রী বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাত থেকে তো আজ সকাল পর্যন্ত সময় পেলেন। আসলে সদিচ্ছা থাকতে হয়।’’
এ দিন এই সেতুর শিলান্যাস করে মন্ত্রী বলেন, ‘‘৫৪.৯ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুর নির্মাণ কাজে ৯ কোটি ৩৯ লক্ষ ২ হাজার ১৮৫ টাকা খরচ করা হবে। ফরাসি এক সংস্থা সেতু তৈরির কাজ করবে। রাজ্যের মধ্যে এই প্রথম একটি মডিউলার সেতু আধুনিক প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে গড়া হচ্ছে। ৬ মাসের মধ্যেই এই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।’’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘এই সেতুর পাশে অস্থায়ী সেতুও গড়ে তোলা হবে। শীঘ্রই এই কাজ শুরু হবে। একই সঙ্গে সেতুর দু’ধারে সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের কাজও করবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy