Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Railway

গভীর রাতে পুড়ল যন্ত্র

সেবক-রংপো রুটের কাজে দেরি নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠেছে।

ভস্মীভূত: পুড়ে গিয়েছে এই যন্ত্রটিই। নিজস্ব চিত্র

ভস্মীভূত: পুড়ে গিয়েছে এই যন্ত্রটিই। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:২৩
Share: Save:

সেবক-রংপো রুটে রেললাইন পাতার কাজে পাহাড়ের গায়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়তে হচ্ছে। সেই কাজের জন্য দু’একদিন আগে বাইরে থেকে এনে কাজে লাগানো হয়েছিল একটি দামী যন্ত্র। সেটিই জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে কার্শিয়ং থানার কালীঝোরার ঘটনা। রেল সূত্রের দাবি, ওই যন্ত্রটির মূল্য কয়েক কোটি টাকা। পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে রেলের তরফে।

সেবক-রংপো রুটের কাজে দেরি নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে এই ঘটনায় কাজ আরও কিছুদিন পিছিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন রেলের ইঞ্জিনিয়ারদের একটি অংশ। রবিবার রাতে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে রেল। দার্জিলিং জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত করে

দেখা হচ্ছে।’’ আপাতত কাজ বন্ধ রাখা হবে বলে ঠিকাদার সংস্থার তরফে জানান হয়েছে।

রেল তথ্য

• দূরত্ব: প্রায় ৪৫ কিলোমিটার।
• প্রস্তাবিত খরচ: প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা।
• কাজ শুরু: ২০১৭ সালে।
• শেষ হবে: ২০২১ সালে।
• সুড়ঙ্গ: ১৪টি।
• সেতু: ১৪টি।

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেবক-রংপো প্রস্তাবিত রুটে কালীঝোরার কাছে সুড়ঙ্গ কেটে লাইন পাতার কাজের জন্য আনা হয়েছিল যন্ত্রটি। কার্শিয়ং থানার সেবক ফাঁড়ির অধীনে রয়েছে কালীঝোরা। সেখানে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে প্রায় তিনশো মিটার দূরে ৩ ও ৪ নম্বর সুড়ঙ্গের কাজ চলে শনিবার সন্ধের আগে পর্যন্ত। অভিযোগ, রাতে কাজের পরে রবিবার ভোরবেলা ঠিকাদার সংস্থার নির্মাণকর্মীরা যন্ত্রের ওই অবস্থা দেখে রেলকর্তাদের খবর দেন। পরে পুলিশ এবং রেলকর্তাদের কয়েকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জনসংযোগ আধিকারিক সুষেণ কুমার ওঝা বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ পুলিশ সূত্রের দাবি, গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটে থাকবে। সেবক ফাঁড়ি থেকে ঘটনাস্থলটি প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার দূরে।

এর আগে ওই রুটের বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ হলেও রেলের সম্পত্তি নষ্ট করার ঘটনা ঘটেনি। তাই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই পুলিশকে দেখার আর্জি জানাবে রেল। রেল গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, চিনের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সেনা মোতায়েনের বিষয়টি মাথায় রেখেই এই ট্রেন রুটের নির্মাণ চলছে। এই ঘটনার সঙ্গে সাধারণ অপরাধীরা যুক্ত নাকি পিছনে কোনও বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে তা তদন্তে উঠে আসা জরুরি বলে মনে করছে রেলের একটি অংশ।

প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রস্তাবিত ওই রেলপথের কাজ শুরু হওয়ার পর দীর্ঘ সময় ধরে বনবস্তি এলাকার বাসিন্দাদের আপত্তি ও বিক্ষোভের জেরে মাঝেমধ্যেই কাজ বন্ধ হয়ে প্রকল্প পিছিয়ে গিয়েছিল। পরে সেসব বাধা কাটিয়ে কাজে গতি আনে রেল। পরিবেশবিদদের দাবি, প্রায় ৮০০ পরিবারকে সরতে হয়েছে রেলপথের কাজের জন্য। দীর্ঘ টানাপড়েন এবং বিক্ষোভ কাটিয়ে কাজ চলছিল জোরকদমেই।

রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় এই প্রকল্প অনুমোদিত হয়। নাথুলা থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে রংপো পর্যন্ত রেলপথ যোগাযোগ স্থাপন করে সেনাকর্মীদের পরিবহণ সহজ করাই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Railway Miscrants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE