Advertisement
E-Paper

‘রাস্তার আলোয় ঝলসে যাওয়া গাড়িও দেখেছি’

এদিকে সোমবার কলকাতা ফিরে অফিসে ঢোকার কথা। কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এক বার ভাবলাম বিমানে যাব। বাগডোগরা হয়ে ফেরার টিকিট কাটতে গিয়ে দেখি ভাড়ার পারদ ব্যাপক চড়েছে।

মন্দার দাস (ওষুধ সংস্থার কর্তা)

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৩৬

কাজের জন্য প্রতিমাসেই অন্তত এক বার উত্তরবঙ্গে যেতে হয়। এটাই আমার প্রায় সাড়ে চার বছরের রুটিন। গত সপ্তাহেও চালসা হয়ে কোচবিহারে গিয়েছিলাম। রবিবার নিউকোচবিহার স্টেশনে পৌঁছে যাই বিকেল তিনটের আগেই। উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের নির্দিষ্ট কামরায় বসে ট্রেন ছাড়ার অপেক্ষা করছিলাম। তখনই আচমকা ট্রেন বাতিলের ঘোষণা ভেসে আসে। আরও ভাল করে ঘোষণা বোঝার চেষ্টা করলাম। ঠিকই শুনেছি, আমাদের ট্রেনটিই বাতিল করা হয়েছে।

এদিকে সোমবার কলকাতা ফিরে অফিসে ঢোকার কথা। কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এক বার ভাবলাম বিমানে যাব। বাগডোগরা হয়ে ফেরার টিকিট কাটতে গিয়ে দেখি ভাড়ার পারদ ব্যাপক চড়েছে। তিন হাজার, সাড়ে তিন হাজারের টিকিট বেড়ে সাত হাজার। তাও বাগডোগরা-গুয়হাটি হয়ে ওই টিকিটই কাটতে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ সেটাই বেড়ে দেখাল ১৭ হাজার টাকা। অত টাকার টিকিট! তার উপর গুয়াহাটি হয়ে কলকাতা পৌঁছতে বিকেল হয়ে যাবে শুনে হাল ছেড়ে দিই। বাড়ি থেকে ফোন আসছিল। সকলেই চিন্তায়। অনেক ভেবেচিন্তে মোট ছ’জন আলোচনা করে ঠিক করি সড়কপথে ছোটগাড়ি ভাড়া করেই ফিরব। বাড়ি থেকে সড়কপথে আসতে বারণ করলেও তখন বিকল্প ছিল না। বাড়িতেও বিস্তারিত কিছু জানাইনি। কোচবিহারের পরিচিত হোটেলের কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় একটি গাড়ি ভাড়ার ব্যবস্থা হয়। কোচবিহার থেকে কলকাতা ২২ হাজার টাকা। রাত ১০টা নাগাদ শিলিগুড়ি পেরিয়ে গাড়ি ছুটছিল কিষাণগঞ্জের দিকে।

রাস্তায় অন্ধকার, খানাখন্দে ভরা। তার উপর ঘন কুয়াশা। প্রাণ হাতে করে যাওয়ার মতো অবস্থা! তারমধ্যেই গাড়ি এগোতে থাকে। রাস্তার আলোয় ঝলসে যাওয়া গাড়িও দেখেছি। ভয়ে আঁতকে উঠি, আচমকা কোনও ‘মব’ চলে এলে কোনদিকে পালাব। নানা জায়গায় ‘নেট’ নেই। মোবাইলের টাওয়ার নেই।

যানজট, ট্রাকের লম্বা লাইন কাটিয়ে যখন বাড়ি পৌঁছলাম তখন দুপুর। সেটাও সম্ভব হয় মাথা পিছু প্রায় চার হাজার টাকা খরচে।

আচ্ছা ট্রেনে ওঠার পর মাইকিং করে সেটির যাত্রা বাতিলের ঘোষণা কেন শুনতে হবে? একটা মেসেজ পাঠিয়েই দায় সেরে ফেলল রেল? এটা কেমন দায়িত্ববোধ? সাধারণ মানুষের কথা কেন ভাবা হবে না কেন? সাড়ে চার বছরের উত্তরবঙ্গ যাত্রায় এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা এই প্রথম। কোনদিন ভুলবনা। আমাদের আরও একটি দল রবিবার শিলিগুড়িতে ছিল। এ বার ওরাও সবাই ঠিকঠাক কলকাতায় পৌঁছে যাক!

Violence Citizenship Amendment Act Protest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy