E-Paper

হিমালয় অঞ্চলে নির্মাণে ‘বিপদ’,  দাবি গবেষকদের

ফিনল্যান্ড, ইতালি, পেরু, নেপাল, নরওয়ে, সুইডেনের মতো বিভিন্ন জায়গা থেকেও অধ্যাপক, গবেষক তথা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কর্মরতেরা হাজির ছিলেন।

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৩২
নির্মাণ কাজে বিপদ বাড়ছে বাড়ছে হিমালয় অঞ্চলে।

নির্মাণ কাজে বিপদ বাড়ছে বাড়ছে হিমালয় অঞ্চলে। —ফাইল চিত্র।

নিরাপত্তার প্রয়োজনেই হোক বা যোগাযোগ ব্যবস্থা অথবা উন্নয়ন, ভারত-চিন সীমান্তে দুই দেশের তরফেই ব্যাপক নির্মাণ কাজে হিমালয় অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ, জলবায়, জীববৈচিত্র, বিভিন্ন জনজাতির জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলছে বলে দাবি গবেষকদের। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক এক আলোচনাসভায় বিষয়টি উঠে এসেছে। শুক্রবার থেকে দু’দিন ব্যাপী এই আলোচনার বিষয় ‘পরিবেশ, সংস্কৃতি এবং জাতিগত বৈচিত্র্য: হিমালয় এবং উপ-হিমালয় অঞ্চল থেকে তার বর্ণনা’। তাতে ফিনল্যান্ড, ইতালি, পেরু, নেপাল, নরওয়ে, সুইডেনের মতো বিভিন্ন জায়গা থেকেও অধ্যাপক, গবেষক তথা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কর্মরতেরা হাজির ছিলেন। সভায় সহযোগিতা করছে ল্যাপল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব সোশাল সায়েন্স রিসার্চ, অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি অর্গানাইজ়েশন।

আলোচনাসভার চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ব বিভাগের প্রধান সমরকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘মেরু অঞ্চল থেকে হিমালয় এলাকার পরিবেশ আদি বাসিন্দাদের সংস্কৃতি, সমস্যা আলোচনায় উঠে এসেছে। সীমান্ত এলাকার কারণে, কাশ্মীর হোক বা পাকিস্তান, চিন সীমান্ত যে দিকেই হোক, দুই দেশের রেষারেষিতে প্রকৃতিকে আমরা নষ্ট করছি। জলাধার, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, পাহাড় ভেঙে নির্মাণ, রেলপথ তৈরি সমস্ত কিছু হচ্ছে। তাতে প্রাকৃতিক ব্যবস্থা যেটা রয়েছে তা নষ্ট হচ্ছে। এই অঞ্চলে বা পাদদেশে যাঁরা বসবাস করেন, ওই সমস্ত আদি বাসিন্দা বিভিন্ন জনজাতির মানুষ ভয়ঙ্কর ক্ষতির মুখে
পড়তে পারেন।’’

ভারত-চিন সীমান্তের মতো হিমালয় এলাকায় যে ধরনের নির্মাণ কাজ হচ্ছে তা উদ্বেগের বলে জানা গবেষকেরা। ল্যাপল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আর্কটিক সেন্টার’-এর অধ্যাপক কামরুল হোসেন বলেন, ‘‘উষ্ণায়নে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যেমন বিপদ বাড়ছে, হিমালয় অঞ্চলও তাই। মেরু অঞ্চলের পরে বৃহত্তর হিমবাহ কিন্তু এই হিমালয় অঞ্চলেই। অনিয়মিত নির্মাণের ফলে উষ্ণায়ন বাড়ছে। হিমবাহ গলতে শুরু করলে, শুধু একটা দেশের নয়, অনেক দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। তাই এ সব নিয়ে আরও ভাবনাচিন্তা জরুরি।’’ ফিনল্যান্ডের উলু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আলেকজ়ান্দ্রা মিডলটন জানান, জনজাতিদের জীবনযাত্রা বিপন্ন হওয়া থেকে রক্ষা করা জরুরি। হিমালয় অঞ্চলেও কিন্তু সেটা দেখতে হবে।

গত ৩ অক্টোবর সিকিমের দক্ষিণ লোনাক হ্রদে ফেটে এবং জলস্ফীতির ফলে তিস্তা নদীর হড়পা বানে বিপর্যয় নেমে এসেছিল। সমর বিশ্বাসের কথায়, ‘‘আমরা উন্নয়নের বিরুদ্ধে নয়। অনিয়মিত নির্মাণ হলে, সে ক্ষতির থেকে কিন্তু নিস্তার মিলবে না। সেটা সকলকেই ভাবতে হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Siliguri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy