Advertisement
E-Paper

সব হারিয়েও স্কুলকে জমি

শনিবার সকালে সেই জমি পরিদর্শণে গিয়ে ভাঙন পীড়িত মানুষদের স্কুল নিয়ে আবেগ দেখে আপ্লুত হয়ে গেলেন জেলা শিক্ষা সংসদ ও প্রশাসনের কর্তারা। গ্রামবাসী এবং পড়ুয়াদের আবেগ দেখে দ্রুত স্কুল ভবন নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান আশিস কুণ্ডু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১৪
পরিদর্শন: পার অনুপনগরে গিয়ে ভাঙনে তলিয়ে যাওয়া পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলছেন প্রশাসনের কর্তারা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

পরিদর্শন: পার অনুপনগরে গিয়ে ভাঙনে তলিয়ে যাওয়া পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলছেন প্রশাসনের কর্তারা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

গঙ্গার গ্রাসে ভিটে-মাটি হারিয়ে ঠাঁই হয়েছে ত্রিপলের তলায়। তবুও নিজেদের শেষ সম্বলের একাংশ স্কুল ভবন নির্মাণের জন্য তুলে দিতে উদ্যোগী হলেন মালদহের বৈষ্ণবনগরের পার অনুপনগরের বাসিন্দা দুই ভাই ধনঞ্জয় ও অমর রায়।

শনিবার সকালে সেই জমি পরিদর্শণে গিয়ে ভাঙন পীড়িত মানুষদের স্কুল নিয়ে আবেগ দেখে আপ্লুত হয়ে গেলেন জেলা শিক্ষা সংসদ ও প্রশাসনের কর্তারা। গ্রামবাসী এবং পড়ুয়াদের আবেগ দেখে দ্রুত স্কুল ভবন নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান আশিস কুণ্ডু। তিনি বলেন, “নিজেরা সব হারিয়েও শেষ সম্বলটুকু স্কুলের জন্য আমাদের হাতে তুলে দিতেও প্রস্তুত ওঁরা। আশা করছি খুব শীঘ্রই খুদেদের জন্য নিজস্ব স্কুল ভবন গড়ে দিতে পারব।’’

গত মাসের শুরুতেই গঙ্গার গ্রাসে চলে যায় কালিয়াচক-৩ ব্লকের শোভাপুর-পারদেওনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পার অনুপনগর গ্রামের একাংশ। ভিটেমাটি হারিয়ে ধনঞ্জয়, অমরবাবুদের মতো প্রায় ২০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছিলেন পার অনুপনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। যদিও গঙ্গা থেকে স্কুল ভবনের দূরত্ব ছিল ২০০ মিটার। গঙ্গার গ্রাসে তলিয়ে যায় সেই স্কুলও। ফলে স্কুল ভবন ছেড়ে পারলালপুরে খোলা আকাশের নিচে ত্রিপলের তলায় সংসার পাতেন ধনঞ্জয় ও অমরবাবুরা। এখন চরম সমস্যায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। ধনঞ্জয়বাবু পার অনুপনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়েরই পার্শ্বশিক্ষক। ১৯৮৩ সালে স্কুল ভবনের জন্য ১৮ শতক জমি দিয়েছিলেন ধনঞ্জয়বাবুর বাবা মদনমোহন রায়। বছর দশেক আগে তিনি মারা গিয়েছেন। স্কুলটিকে ঘিরে আবেগ রয়েছে রায় পরিবারের। তাই ফের ৩৩ শতক জমি দিতে উদ্যোগী ওই পরিবারের সদস্যেরা।

গঙ্গা নদী থেকে দু’কিলোমিটার দূরে স্কুল ভবনের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। যাতে স্কুল ভবন ফের গঙ্গার গ্রাসে না চলে যায়। ধনঞ্জয়বাবু বলেন, “আমাদের ঘর-বাড়ি সব এখন নদীতে রয়েছে। সবকিছু হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছিলাম আমরা। তবুও আমরা চাই ফের স্কুল হোক। গ্রামের ছেলে-মেয়েরা স্কুলে পড়াশোনা করুক। তাই আমাদের অবশিষ্ট দু’বিঘা জমির মধ্যে ৩৩ শতক প্রশাসনের হাতে তুলে দেব।” এ দিন শিক্ষা দফতর, প্রশাসনের প্রতিনিধিরা গিয়ে জমি দেখেন। সেই সঙ্গে পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের সঙ্গে কথাও বলেন তাঁরা। স্কুলের প্রধানশিক্ষক মিলন দাস বলেন, “ধনঞ্জয়বাবুদের দেওয়া জমিতে ফের নতুন করে স্কুল ভবন পাওয়ার আশায় দিন গুনছি।”

Malda Erosion মালদহ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy