Advertisement
E-Paper

স্কুল জলে, ক্লাস খামার বাড়িতেই

গত ১৩ সেপ্টেম্বর বন্যার জলের তোড়ে ওই স্কুলের চারটি ক্লাসঘর ও একটি শৌচাগার ভেঙে সংলগ্ন একটি জলাশয়ে মিশে যায়। নষ্ট হয়েছে স্কুলের একাধিক বেঞ্চ, চেয়ার ও টেবিলও। জেলায় বন্যা পরিস্থিতির জেরে গত ১৬ অগস্ট থেকে ২৩ অগস্ট পর্যন্ত সমস্ত সরকারি স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশিকা জারি করেছিল প্রশাসন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১০:২০
ভগ্ন: বন্যার জলে ভেঙেছে স্কুলবাড়ির একাধিক ঘর। নিজস্ব চিত্র

ভগ্ন: বন্যার জলে ভেঙেছে স্কুলবাড়ির একাধিক ঘর। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের ছ’টি ক্লাসঘরের মধ্যে চারটি বন্যার জলে ভেঙে গিয়েছে পুরোপুরি। বাকি দু’টি ক্লাসঘরের ছাদ ও দেওয়ালে অসংখ্য ফাটল। তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে গত দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এলাকার এক বাসিন্দা এক ব্যক্তির খামারবাড়ির উঠোনে খোলা আকাশের নীচে চলছে পড়াশোনা। এ ভাবেই পঠনপাঠন স্বাভাবিক রেখেছেন উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি ব্লকের পূর্ব রাঘবপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর বন্যার জলের তোড়ে ওই স্কুলের চারটি ক্লাসঘর ও একটি শৌচাগার ভেঙে সংলগ্ন একটি জলাশয়ে মিশে যায়। নষ্ট হয়েছে স্কুলের একাধিক বেঞ্চ, চেয়ার ও টেবিলও। জেলায় বন্যা পরিস্থিতির জেরে গত ১৬ অগস্ট থেকে ২৩ অগস্ট পর্যন্ত সমস্ত সরকারি স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশিকা জারি করেছিল প্রশাসন। এই স্কুলের যে দু’টি ক্লাসঘর দাঁড়িয়ে, সে দু’টিতে ফাটল ধরায় কোনও ঝুঁকিই নিতে চাননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। ১৫০ মিটার দূরে স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হামিদের খামার বাড়ির উঠোনে পড়ুয়াদের বসিয়ে পড়ানোর অনুমতি চান তাঁরা। অনুমতি মিলতেই ২৪ তারিখ থেকেই সেখানে শুরু হয় ক্লাস। খোলা আকাশের নীচে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ২১০ জন পড়ুয়াকে পড়াচ্ছেন স্কুলের ৮ জন শিক্ষক।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক আব্দুল হান্নান বলেন,‘‘ওই ব্যক্তি তাঁর খামার বাড়ির উঠোন ব্যবহারের অনুমতি না দিলে পড়ুয়াদের পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যেত।’’ তিনি জানিয়েছেন, খামারবাড়ির উঠোনের অন্য একটি অংশে মিডডে মিল রান্না করে পড়ুয়াদের খাওয়ানোর কাজও চলছে।

আব্দুল হামিদের বক্তব্য, ‘‘এলাকার পড়ুয়াদের পঠনপাঠন স্বাভাবিক রাখতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে খামার বাড়ির উঠোন ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছি।’’

জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক আমিনুল আহসানের দাবি, বন্যার জেরে জেলার ন’টি ব্লকের মধ্যে ওই প্রাথমিক স্কুলটিই সবথে‌কে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ ২৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, করণদিঘি, ইসলামপুর, চোপড়া, গোয়ালপোখর-১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে ৫৩২টি প্রাথমিক স্কুল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ২২ কোটি ৯৮ লক্ষ ৫৯ হাজার ৫৬৬ টাকা। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের কাছে ক্ষয়ক্ষতির সার্বিক রিপোর্ট পাঠিয়ে আর্থিক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। সেই বরাদ্দ মিললেই ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলি নতুন করে তৈরি বা মেরামতির কাজ শুরু করা হবে।’’

জেলাশাসক আয়েশা রানি জানিয়েছেন, পড়ুয়াদের কথা ভেবে প্রশাসনের তরফে আপাতত ওই স্কুল চত্বরে টিন দিয়ে কয়েকটি ক্লাসরুম তৈরি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Flood School বন্যা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy