ইচ্ছাকৃত ভুল, না কি জেনেবুঝে চালাকি? এনুমারেশন ফর্ম জমা দিয়ে এমনই প্রশ্নের মুখে পড়েছেন অধুনা বিজেপি নেতা তথা তৃণমূলত্যাগী খগেশ্বর রায়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, এসআইআরের জন্য প্রয়োজনীয় এনুমারেশন ফর্মে (গণনাপত্রে) অন্যের বাবাকে নিজের ঠাকুরদা বলে পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
শিলিগুড়ির মাটিগাড়া-২ ব্লকে দীর্ঘ দিন ব্লক সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন খগেশ্বর। গত ১৩ নভেম্বর হঠাৎই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। এখন তিনিই জড়িয়েছেন এসআইআর-বিতর্কে। অভিযোগ, এক প্রতিবেশীকে নিজের ঠাকুরদা বলে দেখিয়েছেন গণনাপত্রে। খগেশ্বরের বাড়ি মাটিগাড়ার পাথরঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের বানিয়াখারিতে। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম নেই। এই প্রেক্ষিতে পড়শি তারকবন্ধু রায়কে কেন নিজের ঠাকুরদা বলে দেখাতে গেলেন, তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
তারকবন্ধুর পুত্র নরেশ রায় খগেশ্বরের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘খগেশ্বর রায়ের সঙ্গে আমাদের কোনও রক্তের সম্পর্ক নেই। আমার বাবার একমাত্র সন্তান আমি। পারিবারিক বন্ধুত্ব ছিল খগেশ্বরদের সঙ্গে। এই বিষয়টি যাতে ও চটজলদি মিটিয়ে নেয়, সেই আর্জি জানাব।’’
আরও পড়ুন:
কিন্তু খগেশ্বরের নিজের দাবি, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। তাঁর দাবি, ‘‘এক নামে একাধিক ব্যক্তি থাকতে পারেন। অনলাইনে এপিক নম্বরের সঙ্গে তারকবন্ধুর নামের এপিক নম্বরের মিল নেই। গোটা বিষয়টি নির্বাচন কমিশন দেখবে।’’ কিন্তু ভোটার তালিকা অনুযায়ী খগেশ্বর যে এপিক নম্বর ব্যবহার করেছেন তা নরেশ রায়ের বাবা তারকবন্ধুরই। ভোটার কার্ডের হিসাব অনুযায়ী, খগেশ্বরের বয়স এখন ৫৬ বছর। কিন্তু তারকবন্ধুর বয়স ৪৫। অন্য দিকে, ২০০২ সালের যে ভোটার তালিকাতেও তাঁর ঠাকুরদা সম্পর্কিত তথ্য নেই। এই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের নজরে আনতে চাইছে তৃণমূল। ওই দলের পাথরঘাটা অঞ্চল সভাপতি ভূপেন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘অন্যের বাবাকে ঠাকুরদা সাজিয়ে গণনাপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। এটা ঠিক নয়। এই কারণেই হয়তো তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন উনি।’’ বিজেপি জানাচ্ছে, বিতর্ক থাকলে তা পরিষ্কার করবে কমিশন।