Advertisement
E-Paper

মালিকদের চাপে কি পিছু হঠছে দফতর, প্রশ্ন

চাপের মুখে স্কুলবাসের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার অভিযান থেকে পরিবহণ দফতর পিছু হঠছে বলে অভিভাবক ফোরামের অভিযোগ। দু’দিন অভিযান চালানোর পরে স্কুলবাস নিয়ে আপাতত পরিবহণ দফতরের কয়েকজন আধিকারিক ‘ধীরে চলো’ নীতি নেওয়ার পক্ষপাতি বলে অভিভাবকদের দাবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৬ ০২:২২
স্কুলবাসের হাল। তার দিয়ে বাঁধা হেডলাইট — বিশ্বরূপ বসাক

স্কুলবাসের হাল। তার দিয়ে বাঁধা হেডলাইট — বিশ্বরূপ বসাক

চাপের মুখে স্কুলবাসের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার অভিযান থেকে পরিবহণ দফতর পিছু হঠছে বলে অভিভাবক ফোরামের অভিযোগ।

দু’দিন অভিযান চালানোর পরে স্কুলবাস নিয়ে আপাতত পরিবহণ দফতরের কয়েকজন আধিকারিক ‘ধীরে চলো’ নীতি নেওয়ার পক্ষপাতি বলে অভিভাবকদের দাবি। গত বৃহস্পতিবার এবং সোমবার শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় স্কুলবাস থামিয়ে অভিযান চালিয়েছিল পরিবহণ দফতর।

স্কুলবাসগুলি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা যথাযথ ভাবে মেনে চলচে কি না তা দেখতে শুরু করেছিল প্রশাসন। বেশ কয়েকটি বাস সংস্থাকে জরিমানা করা হয়, কয়েকটি বাসের কাগজপত্রও পরীক্ষার জন্য বাজেয়াপ্ত করা হয়। এতেই বাস মালিকদের একাংশ চাপের মুখে পড়ে যায় বলে দাবি। গত মঙ্গলবার বাস মালিকদের একাংশ জেলা পরিবহণ দফতরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। এআরটিও-এর (সহ পরিবহণ আধিকারিক) চেম্বারে ঢুকে বাস মালিকদের কয়েকজন দাবি করেন, হঠকারী ভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে বাস মালিকদের একাংশের বিক্ষোভের পরে সে দিন এবং এ দিন বুধবার পরিবহণ দফতর নতুন করে অভিযান চালায়নি। তাতেই অভিবাবকদের একাংশের প্রশ্ন, তবে কী চাপের মুখে নতিস্বীকার করল পরিবহণ দফতর।

পরিবহণ দফতরের তরফ থেকে অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। দফতরের আধিকারিকরা দাবি করেছেন, পরিবহণ দফতরের তরফে কোনক্ষেত্রেই নিয়মিত অভিযান হয় না। প্রথম অভিযানে সর্তক করা হয়, তারপরের অভিযান চালিয়ে ফের গাফিলতি দেখলে মামলা দায়ের অথবা আইনগত পদক্ষেপ হয়। কয়েকদিন অন্তর অভিযান চালানো হয়। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘পরপর অভিযান চললে অনেক ক্ষেত্রেই সাময়িক ভাবে সর্তকতা গ্রহণ করা হয়, ক’দিন পরেই পরিস্থিতি ফের যে কে সেই হয়ে যায়। পাকাপাকি ভাবে যাতে পদক্ষেপ হয় সে কারণেই ধাপে ধাপে অভিযান হয়।’’

পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের যুক্তি অবশ্য মানতে রাজি নন অভিভাবক ফোরামের সদস্যরা। তাদের দাবি, পরিবহণ দফতরে গিয়ে বাস মালিকদের একাংশের বিক্ষোভের পরে অভিযান থেমে যাওয়া যথেষ্ট অর্থবহ। এআরটিও নবীন অধিকারী অবশ্য দাবি করেন, ‘‘অভিযান থেমে যাওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়া এ সবই ভিত্তিহীন কথা। সরকারি একটি প্রক্রিয়া রয়েছে, সেই মতোই পদক্ষেপ হচ্ছে। স্কুলবাস যাতে যথাযথ নিয়ম মেনে চলাচল করতে পারে, সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এর থেকে পিছিয়ে আসার কোনও কারণ নেই।’’ পরিবহণ দফতর সূত্রে আরও দাবি করা হয়েছে, স্কুলবাস নিয়ে পদক্ষেপ স্থির করতে চলতি সপ্তাহেই বৈঠক রয়েছে।

চাপ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে স্কুলবাস মালিকদের সংগঠনও। তাদের দাবি, বাস ভাড়া নিয়ে অভিভাবক ফোরামের তরফে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। তার প্রতিবাদ জানিয়েই চলতি বছরের ভাড়ার হারের তালিকা সর্বসমক্ষে প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়েছে। পড়ুয়াদের সুরক্ষার স্বার্থেই স্কুলবাস চলাচল নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। বাসে কী পরিকাঠামো থাকবে কী ধরনের সর্তকতা নেওয়া হবে সে সব সেই নির্দেশিকায় উল্লেখ্য রয়েছে। বেশ কয়েকবার সুপ্রিম কোর্ট সেই নির্দেশিকায় রদবদলও করেছে।

তবে শিলিগুড়ির বিভিন্ন স্কুলবাসে সেই নির্দেশিকা যথাযথ ভাবে মানা হয় না বলে অভিভাবকদের অভিযোগ। গত বৃহস্পতি এবং সোমবারের অভিযানে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকরাও নির্দেশ মা মানার একের পর এক উদাহরণ দেখেছেন। এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের আতঙ্ক বাড়িয়েছে গত সপ্তাহে পরপর দু’বার মদ্যপ চালকের বিরুদ্ধে স্কুলবাস চালানোর অভিযোগ। এক চালককে হাতেনাতে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন অভিভাবকেরাই। এরপরে অভিভাবকরা প্রশ্ন তোলেন, শহরের বাসগুলিতে আদৌও পড়ুয়াদের সুরক্ষা রয়েছে তো? নির্দেশিকা মানা হচ্ছে না বলে নালিশ জানিয়ে খোদ সুপ্রিম কোর্টেই নালিশ জানিয়ে ই-মেল করেছিল অভিভাবক ফোরাম। তারপরেই নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। শুরু হয় অভিযানও। পরিবহণ বোর্ডের সদস্য মদন ভট্টাচার্যও জানিয়েছে, আপাতত বৈঠকের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। বৈঠকে বাস মালিকদের বক্তব্যও শোনা হবে। মদনবাবুর কথায়, ‘‘কোনও চাপ নেই। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এবং পরিবহণ আইন ভেঙে কোনও বাস চলাচল করতে পারবে না। বৈঠকেই তা ফের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

School bus Siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy