Advertisement
E-Paper

জমি নিয়ে বিবাদ, গুলিবিদ্ধ স্কুলছাত্র

খাস জমির দখলকে কেন্দ্র করে গুলি ও বোমাবাজির ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের কালিয়াচকের পুরাতন ১৬ মাইল। গুলিতে জখম হয়েছে এক স্কুল ছাত্র। আহত আরও একজন। শনিবার দুপুরের এই ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে কালিয়াচক থানার পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৬ ০৭:১২
চিকিৎসা চলছে সিরাজের। —নিজস্ব চিত্র।

চিকিৎসা চলছে সিরাজের। —নিজস্ব চিত্র।

খাস জমির দখলকে কেন্দ্র করে গুলি ও বোমাবাজির ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের কালিয়াচকের পুরাতন ১৬ মাইল। গুলিতে জখম হয়েছে এক স্কুল ছাত্র। আহত আরও একজন। শনিবার দুপুরের এই ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে কালিয়াচক থানার পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধ ছাত্র সিরাজউদ্দৌল্লা শেখ কালিয়াচকের রাজনগর হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। তাঁর বাবা ইব্রাহিম শেখ পেশায় ভুটভুটি চালক। ডান পায়ে গুলি লেগেছে সিরাজউদ্দৌল্লার। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দিনের ঘটনায় আহত হয়েছে একবর শেখ নামে এক ব্যক্তিও। শ্রীলামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,‘‘জমির দখল নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদের জেরে এ দিনের এই ঘটনাটি ঘটেছে। দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

কালিয়াচক থানার বিন নগর ২ গ্রামপঞ্চায়েতের পুরাতন ১৬ মাইল গ্রামের রেল লাইন সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করেন ইব্রাহিম শেখ। তাঁদের বাড়িতে একটি মুদিখানার দোকানও রয়েছে। দোকানটি চালান তাঁর স্ত্রী তাজেনুর বিবি। তাঁদের পাঁচ ছেলে মেয়ের মধ্যে সিরাজউদ্দৌল্লা বড়। বাকিরাও স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের বাড়ির পেছনে একটি দু’বিঘার জলা জমি রয়েছে। যা রেলের সম্পত্তি হলেও এতদিন সেই জমি ইব্রাহিমদেরই দখলে ছিল। কিন্তু মাস খানেক আগে সেই জমির দখল নেয় ওই গ্রামেরই বাসিন্দা একবর শেখ ও ইসলাম শেখে। তাঁরা জোর করে ওই জমিতে পাট চাষ করে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে দু’পক্ষের গোলমালে থানা পুলিশও হয়েছিল।

এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ বাড়ি লাগোয়া দোকানের সামনে বসেছিল সিরাজউদ্দৌল্লা এবং তাঁর খুড়তুতো দাদা সইফুদ্দিন শেখ। অভিযোগ সেই সময় মোটরবাইকে করে দোকানের সামনে আসে একবর শেখ, ইসলাম শেখ সহ পাঁচ জনের একটি দল। সিরাজদের উদ্দেশ্যে গালিগালাজ করে তারা। সিরাজউদ্দৌল্লা প্রতিবাদ করতেই শুরু হয় বচসা। এরপরেই শুরু হয়ে যায় বোমাবাজি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পরপর প্রায় ১০টি বোমা ফাটানো হয়। সিরাজরা পালাতে গেলে তাঁদের লক্ষ্য করে দু’ রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। সিরাজের ডান পায়ের উপরে গুলি লাগলে লুটিয়ে পড়ে সে। এরপরেই স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ একবর শেখকে লক্ষ্য করে ইট পাথর ছোড়ে। ইটের আঘাতে আহত হয় একবর শেখ। পরে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় শ্রীলামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। স্কুল ছাত্র সিরাজউদ্দৌল্লা গুলিবিদ্ধ হওয়ায় তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

ঘটনার পরেই দুষ্কৃতী তাণ্ডবের প্রতিবাদে গ্রামবাসীরা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। পরে পুলিশ গেলে অবরোধ তুলে নেয় গ্রামবাসীরা। পুলিশ দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

আহত সিরাজউদ্দৌল্লা বলে, ‘‘আমরা দু’জন মিলে দোকানের বারান্দায় দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ করে আমাদের গালিগালাজ করতে শুরু করে একবর। দোকানের সামনে বোমাবাজি করা হয়। তারপরেই আমি লুটিয়ে পড়ে যাই।’’ তার বাবা ইব্রাহিম জানান, তাদের দখলে থাকা খাস জমি জোর করে দখল করে নেয় একবর শেখেরা। তারা নানান অসামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকায় জমি দখলের সময় কিছু বলেননি। ছেলের উপরে হামলার অভিযোগে তাঁদের দলবলের বিরুদ্ধে থানাতে অভিযোগ করবেন।

অপরদিকে একবর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি খাস জমি ইব্রাহিমরা দখল করে ছিল। এ দিন তার ছেলে আমাদের চোর বলে। এবং আমাদের উপরে হামলা চালায়। কে তাকে গুলি করেছে তা আমি বলতে পারব না।’’

School Student Police Land dispute
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy