E-Paper

বাল্যবিবাহ, স্কুলছুট রুখতে পথে সীমান্তের গ্রামের ছাত্রীরা

স্বেছাসেবী সংস্থাটি জানিয়েছে, ওই স্কুলের ছাত্রীরা শুধু প্রচার নয়, গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক বা প্রশাসনের একাধিক অফিসে স্মারকলিপি দিয়েও এ সব বিষয়ে নজর দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৩
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

কেউ দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী, কেউ একাদশের। কেউ দশম বা নবম শ্রেণিরও। বাল্যবিবাহ বা স্কুলছুটের কথা শুনলেই সেখানে হাজির হচ্ছে তারা। ওই পড়ুয়াদের চেষ্টায় বন্ধ হয়েছে একাধিক বাল্যবিবাহ। স্কুলেও ফিরেছে কেউ কেউ। কোচবিহারের বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া একাধিক গ্রামে ওই ‘গার্ল চাইল্ড টিম’ নজর কেড়েছে সবার।

বামনহাটের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘আমরা স্কুলের বন্ধুবান্ধব থেকে প্রতিবেশী প্রত্যেকের কাছেই বাল্যবিবাহের মতো বিষয় নিয়ে সচেতনতামূলক কথা বলি। তাতে অনেক কাজ হয়। এমন ঘটনার কথা জানলে, অনেকেই আমাদের খবর দেন। আমরা তা নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দিই। এমন ভাবে অনেক বাল্যবিবাহ রুখতে পেরেছি।’’ মাস ছয়েক আগেই বামনহাটের সীমান্ত সংলগ্ন একটি এলাকায় এক নাবালিকার বিয়ে ঠিক করে তার পরিবার। সে কথা জানতে পেরেই ওই ছাত্রী তা একটি স্বেচ্ছাসেবী স‌ংগঠনের নজরে আনে। প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে ওই বিয়ে বন্ধ করা হয়। সেই সংগঠনের তরফে সাজিদা পারভিন বলেন, ‘‘একাধিক গ্রামেই ছাত্রীদের নিয়ে এমন দল তৈরি করা হয়েছে। তারা নিজেদের মতো করে প্রচার করছে। তার সুফল আমরা পেয়েছি। এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’’

দেওয়ানহাটের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, তার দিদির অল্প বয়সে বিয়ে হয়। তার পরিণতি খুব একটা ভাল হয়নি। এমন অনেক ঘটনাই ছোটবেলা থেকে দেখে তার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির প্রয়োজন রয়েছে বলে সে মনে করে। তার পরেই ওই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ শুরু করে। ওই ছাত্রীর কথায়, ‘‘প্রত্যেকটা মানুষেরই এই বিষয়ে এগিয়ে আসা উচিত। আমরা বয়সে অনেক ছোট। তার পরেও মনে হয়েছে, সচেতনতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। সেই চেষ্টাই করছি।’’

স্বেছাসেবী সংস্থাটি জানিয়েছে, ওই স্কুলের ছাত্রীরা শুধু প্রচার নয়, গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক বা প্রশাসনের একাধিক অফিসে স্মারকলিপি দিয়েও এ সব বিষয়ে নজর দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে।

মাতালহাটের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীও বাল্যবিবাহ থেকে স্কুলছুটের বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। তার কথায়, ‘‘আমার এক পিসি অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। তিনি ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য। তাঁকে দেখেই আমি ওই কাজে যুক্ত হয়েছি। করোনা-কালে আমাদের এলাকায় অনেকেই স্কুলছুট হয়েছিল। আমরা প্রচারের মাধ্যমে তাদের স্কুলে ফেরানোর চেষ্টা করি।’’

আরও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও ওই ছাত্রীদের নিয়ে কাজ করছে। সেই সংগঠনের সম্পাদক মইনুল হুক বলেন, ‘‘গ্রামগঞ্জে এখনও বাল্যবিবাহের মতো ঘটনা ঘটছে। সে সব বন্ধ করে আমরা শিশুবান্ধব
গ্রাম গড়তে চাই। ওই ছাত্রীরাও সেই কাজই করছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cooch Behar Child Marriage

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy