মারুতি ভ্যানের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক স্কুল ছাত্রের। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদহের আট মাইল এলাকায়। দুর্ঘটনার পর মারুতি ভ্যানটি পালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি ফাঁকা জমিতে। তারপরেই ওই গাড়িতে আগুন লেগে যায়। ঘটনার প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। এর জেরে ঘণ্টাখানেকের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় জাতীয় সড়কে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও দমকলের একটি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নেভায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ছাত্রের নাম মতিলাল মুর্মু (১৬)। তার বাড়ি পুরাতন মালদহের ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের শিমুলঢাপ গ্রামে। মতিলাল ওই এলাকারই রাম মার্ডি হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। তাঁর বাবা শিবু মুর্মু পেশায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘গাড়ির ধাক্কায় এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। ওই গাড়িটি উল্টে গেলে আগুন লেগে যায়। ছাত্রটির মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। গাড়ির চালকের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ পুরাতন মালদহের আট মাইল হাট থেকে বাজার করে সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিল দশম শ্রেণির পড়ুয়া মতিলাল। তারা দুই ভাই ও এক বোন। তাদের মধ্যে মতিলালই বড়ো। অনেক সময় মতিলালও দিন মজুরের কাজ করতেন। বাজার করে বাড়ি ফেরার পথে আট মাইল এলাকার কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে উপরে পিছন দিক থেকে ধাক্কা মারে মালদহগামী একটি মারুতি ভ্যান। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মতিলালের। ঘটনার পর পালাতে গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ১০০ মিটার দুরে মারুতি ভ্যানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়।
ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা মৃতদেহ রাস্তায় ফেলে রেখে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেন। তাঁদের দাবি, ওই ছাত্র রাস্তার বাঁ দিক দিয়েই আসছিল। ওই মারুতি ভ্যানটি বেআইনি ভাবে তাকে ধাক্কা মারে। ক্ষতিপূরণের দাবিতে চলে জাতীয় সড়ক অবরোধ। পরে দমকলের একটি ইঞ্জিন গিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির আগুন নেভায়। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিজেপি চম্পাই বেসরা বলেন, ‘‘ছাত্রটিকে ওই গাড়িটি ভুল রুটে গিয়ে ধাক্কা মেরেছে। আর এই এলাকায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলাচল করে। পুলিশের কোনও নজরদারি নেই। যার ফলে এমন দুর্ঘটনা ঘটছে এলাকায়। এদিন পুলিশকে পুরো বিষয়টি লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।’’ পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, গ্রামবাসীদের দাবি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।