E-Paper

শিক্ষকের সঙ্কটে বিঘ্ন পড়াশোনায়

গোয়ালপোখরের কিচকটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ১৫০ জন ছাত্রছাত্রীর দায়িত্বে তিন শিক্ষক। তিন জনই বিএলও হিসেবে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে নিযুক্ত।

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৩৪
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরু হতেই উত্তর দিনাজপুরে পড়ুয়াদের পাঠদান কার্যত বন্ধের মুখে। উত্তর দিনাজপুর জেলায় বহু স্কুলের শিক্ষকদের ব্লক লেভেল অফিসার (বিএলও) হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। শিক্ষকশূন্যতায় ভুগছে স্কুলগুলো, ব্যাহত হচ্ছে পঠনপাঠন। উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা।

গোয়ালপোখরের কিচকটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ১৫০ জন ছাত্রছাত্রীর দায়িত্বে তিন শিক্ষক। তিন জনই বিএলও হিসেবে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে নিযুক্ত। আর কোদালগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১২০ পড়ুয়ার জন্য রয়েছেন তিন জন শিক্ষক। সকলেই বিএলও। ওই দুই স্কুলকে জেলা শিক্ষা দফতরের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, স্কুল বন্ধ রাখা যাবে না। সকালে স্কুল চালাতে হবে। মঙ্গলবার ওই দুই স্কুলের শিক্ষক সকালে স্কুল সামলে দুপুরে বেরিয়ে পড়েন এসআইআরের নানা কাজে। কিচকটোলা স্কুলের সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গির আলম বলেন, “খুদেদের পড়াশোনার উপরে প্রভাব পড়ছে। কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে, অন্তত দু’জন শিক্ষক স্কুলে রাখা হোক। নইলে স্কুল চালানো কঠিন হবে।” কোদালগাঁওয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক চঞ্চলকুমার সরকার বলেন, “সকালে স্কুল করার নির্দেশ দিয়েছে জেলা শিক্ষা দফতর। মিডডে মিল, প্রশ্নপত্র তৈরি, খাতা দেখা—সব দায়িত্ব শিক্ষকদের। এসআইআরে সময় দেওয়া কঠিন হবে।”

দুশ্চিন্তায় অভিভাবকেরাও। স্থানীয় এক অভিভাবক আসফাক আলম বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়েদের পড়া বন্ধ হলে সেটা মারাত্মক সমস্যা। বাড়তি ক্লাসের সুযোগ কম। একমাত্র স্কুলই ভরসা।” আর এক অভিভাবক সাবিনা খাতুনের বক্তব্য, “গ্রামের স্কুলগুলোতে এমনিই শিক্ষক কম। এখন সবাই যদি এসআইআরের কাজে চলে যায়, আমাদের বাচ্চাদের পড়াবে কে?” গোয়ালপোখর চক্রের স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) ইন্দ্রজিৎ দাস বলেন, “সমস্যা সম্পর্কে জানি। ওই দুই স্কুল শিক্ষকদের বলা হয়েছে, সকালে স্কুল করে কাজে বেরোতে। স্কুল যাতে বন্ধ না হয়, সেটাই লক্ষ্য। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

শুধু প্রাথমিক নয়, জেলার বহু হাই স্কুলেও একই অবস্থা। বহু শিক্ষক বিএলও-র দায়িত্বে থাকায় ক্লাস ফাঁকা। টেস্ট পরীক্ষার আগে সিলেবাস শেষ করা নিয়ে হাই স্কুলগুলিতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। চাকুলিয়ার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “যে ভাবে শিক্ষক সঙ্কট চলছে, তাতে পড়াশোনার ক্ষতি হবে।” এসআইআর যেমন প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই পড়াশোনার স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখাও জরুরি। সেই ভারসাম্য কতটা রক্ষা করা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষকদের একাংশ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

North Dinajpur Goalpokhar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy