সতর্ক: কোচবিহারের বক্সিরহাটে অসমগামী সড়কে তল্লাশি। বুধবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
সীমান্তে যেন কার্ফু। পুলিশে ছয়লাপ। পাইলট নিয়ে মাঝে মধ্যেই পুলিশ কর্তারা ঢুকে পড়ছেন। গাড়ি আটকে চলছে তল্লাশি। খাতা-কলম হাতে নিয়ে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মী প্রশ্ন করছে অবিরত। অসমের বাসিন্দা শুনলেই বাংলার আসার কারণ জানতে চাইছেন। সেই সঙ্গে নথিবদ্ধ হচ্ছে তাঁর নাম-ঠিকানা। এমনকী অসমে কবে ফিরে যাবেন সেই তথ্য জানাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। অসমে নাগরিক পঞ্জির তালিকা ঝুলতেই অসম-কোচবিহার সীমানায় বসেছে এমনই কড়াকড়ি।
এ দিনই ওই সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে যান এডিজি সিআইডি সঞ্জয় সিংহ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা পুলিশের আধিকারিকরা। পুরো এলাকা ঘুরে দেখে জোড়াই মোড় হয়ে আলিপুরদুয়ার চলে যান এডিজি। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “বর্তমান পরিস্থতিতে অসম সীমান্তে কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। সবদিকে নজর রাখা হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, কোচবিহার থেকে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে বক্সিরহাট হয়ে অসম যাওয়ার প্রধান সড়ক। এর বাইরেও কতগুলি ছোট রাস্তা রয়েছে। যেগুলি দিয়ে ছোট গাড়ি যাতায়াত করে। প্রধান সড়ক তো বটেই, গলির রাস্তাগুলিতেও পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে। জোড়াই মোড়, মানসাই, লাঙলগ্রাম সহ ওই সাত জায়গায়াতেই নাম নথিবদ্ধ করার কাজ চলছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, গত এক দশেকের বেশি সময় ধরে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের একাধিক জায়গায় অসমের বাসিন্দাদের একটি অংশ জমি কিনে রেখেছেন। অনেকে বাড়ি তৈরি করেছেন। সেই বাড়ি ভাড়া দিয়েছেন। অস্থায়ী ভাবে বসবাস করছেন অনেকে। এই অবস্থায় সেই অংশ তো বটেই তার বাইরেও বাসিন্দাদের একটি অংশ নিরাপদ আস্থানার খোঁজে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে চলে আসতে পারে। সে আশঙ্কা করেই পুলিশের পাহারা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অসম সীমান্তে। অসম থেকে যদি কেউ এ রাজ্যে চলে আসেন, সেক্ষেত্রে তাঁর পুরো বিবরণ রাখার চেষ্টা করবে প্রশাসন। সে জন্যেই গাড়ি ধরে ধরে সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকেও নামিয়ে দেওয়া হয়েছে সীমান্তে। তাঁরাও তাঁদের মতো করে খোঁজ রাখছেন।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “অসম থেকে এই রাজ্যে আসার একাধিক পথ রয়েছে। সে জন্যে সাদা পোশাকের পুলিশের নজরদারি রাখা হয়েছে। গ্রামে কোথাও খোঁজ পেলেও পুলিশ যাচ্ছে।”
এ দিনই তুফানগঞ্জের একটি এলাকায় কিছু ‘বহিরাগত’ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বলে পুলিশ জানতে পারে। তাঁরা অসমের কি না তা খোঁজ করতে পুলিশ পৌঁছয় ওই গ্রামে। পরে অবশ্য বিষয়টি ঠিক নয় বলে জানা যায়। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “সরাসরি তল্লাশির পাশাপাশি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাতেও নজরদারি চলছে। একাধিক পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy