Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

শিলিগুড়িতে কর্মীস্বার্থে সিটু, আইএনটিটিইউসি পাশাপাশি

কর্মীদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে নোটিস দিয়ে হোটেল বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে একযোগে আন্দোলনে নামল বাম এবং তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন-সিটু এবং আইএনটিটিইউসি। রবিবার শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে ‘সালুজা পরিবার’ হোটেলের ঘটনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৬ ০২:০৪
Share: Save:

কর্মীদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে নোটিস দিয়ে হোটেল বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে একযোগে আন্দোলনে নামল বাম এবং তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন-সিটু এবং আইএনটিটিইউসি। রবিবার শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে ‘সালুজা পরিবার’ হোটেলের ঘটনা। কর্মী স্বার্থে কোনও রাজনীতি নয়, স্লোগান দিয়ে একযোগে অবস্থান আন্দোলনে নেমেছে তারা। দেওয়ালির দিন হোটেল বন্ধ যাওয়ায় বিপাকে অন্তত ৮০ জন কর্মী। হোটেলেই তাঁরা দু’বেলা খেতেন। এদিন হোটেল বন্ধ যাওয়ায় দুপুরে খাওয়াও জোটেনি। তাই দুই পক্ষই একযোগে সেখানে কর্মীদের জন্য খিচুড়ি রান্নার আয়োজন করেন রাতে।

একযোগে দুই বিরোধী শিবিরের শ্রমিক সংগঠনের এই আন্দোলন নিয়ে সাড়া পড়েছে। বিশেষ করে যেখানে শিলিগুড়ি মডেল নিয়ে রাজ্যে হইচই পড়েছিল।

শাসক দলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের একজোট করে শিলিগুড়িতে ভোট লুঠ ঠেকানোর ডাক দিয়েছিলেন অশোক ভট্টাচার্য। এদিনের আন্দোলনের কথা শুনে তিনি বলেন, ‘‘দিল্লিতে এসেছি। বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। এ ভাবে হোটেল বন্ধ হলে সকলকে মিলেই আলোচনা করে মেটাতে হবে।’’ হোটেলটি যে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সেখান থেকেই জিতে মেয়র হয়েছেন অশোকবাবু। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তৃণমূলের প্রার্থী অরূপ রতন ঘোষ। অরূপবাবু আইএনটিটিইউসি’র জেলা সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘তেমন ব্যাপার নয়। আসলে পুজোর দিনে কর্মীদের এই পরিস্থিতি দুঃখজনক। নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই কর্মীরা মিলে আন্দোলন করছেন।’’ তাঁর দাবি, হোটেলের সামনে জায়গাটি ছোট। আলাদা ভাবে আন্দোলন হলেও এক মনে হচ্ছে।

হোটেলের আইএনটিটিইউসি’র নেতা নরেশচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘পুজোর বোনাস এখনও মেলেনি। আর কয়েকদিন পর এই মাসের বেতন। তার আগে এ ভাবে মিথ্যে অভিযোগ তুলে হোটেল বন্ধ করায় পরিবার নিয়ে সকলেই বিপাকে পড়েছেন। এর বিরুদ্ধে একযোগেই আন্দোলন হচ্ছে। আগে আমাদের কর্মীদের স্বার্থ। মালিক তো চাইছে শ্রমিকদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে আলাদা করে দিতে। আমরা একয়োগেই আন্দোলন করছি।’’

সিটুর দার্জিলিং জেলা হোটেল রেস্টুরেন্ট কাম বার ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক মোহন শর্মা জানান, মালিকপক্ষ নানা অজুহাতে এই কর্মীদের তাড়াতে চাইছেন। অথচ কেউ ২০ বছর কেউ ২৬ বছর ধরে কাজ করছেন। অথচ এত বছরেও বেতন বৃদ্ধি ঠিক মতে হয়নি। কেউ ৭ হাজার টাকা, কেউ চার হাজার বা আরও কম পাচ্ছেন। মোহনবাবু বলেন, ‘‘হোটেল বন্ধ হলে কর্মীরা যাবেন কোথায়? সকলেই তাই একযোগে আন্দোলন করছে। কে সিটু, কে বিরোধী সংগঠন সে সব ব্যাপার নেই।’’

হোটেলের মালিক গুরমিৎ সিংহ সালুজার স্ত্রী রমিন্দর কাউর এবং ছেলে কুলদীপ-ই এখন হোটেল দেখভাল করেন। কুলদীপবাবু বলেন, ‘‘কর্মীরা নিজেদের ইচ্ছে মতো চলছে। অনেকে ঠিক মতো কাজ করছেন না। দুই বেলা নানা ভাবে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। তাঁরা কথা না শুনলে আমাদের পক্ষে হোটেল চালানো সম্ভব নয় বলেই হোটেল বন্ধ করেছি।’’ কর্মীদের দাবি, ২০১৫ সালের জুলাই মাসে পুরনো চুক্তির মেয়াদ ফুরলেও মালিকপক্ষ নতুন চুক্তি করছে না। তা নিয়ে শ্রম দফতরে একাধিকবার বৈঠক ডাকা হয়েছে। অধিকাংশ বৈঠকেই মালিকপক্ষ যায়নি।

কুলদীপবাবু অবশ্য জানান, শ্রম দফতরে সমস্ত জানানো রয়েছে। উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে থাকা জয়েন্ট লেবার কমিশনার সমীর বসু বলেন, ‘‘ওই হোটেলের সমস্যা নিয়ে শিলিগুড়িতে ডেপুটি লেবার কমিশনারের দফতরে আলোচনা চলছিল। বিষয়টি খোঁজ নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Benefits of Workers CITU INTTUC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE