Advertisement
E-Paper

সুস্থ থাকতে ব্যারিকেড বনবস্তিতে

বক্সার জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় অনেকগুলি বনবস্তি রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারা কেউ পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, কেউ আবার শহরে ছোটখাটো নানা কাজ করেন।

পার্থ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২০ ০৫:২৪
রুদ্ধ: রাজাভাতখাওয়ার গারো বনবস্তিতে ঢোকার রাস্তা বাঁশ দিয়ে আটকে দিয়েছেন বাসিন্দারা। পালা করে চলছে নজরদারিও। ছবি: নারায়ণ দে

রুদ্ধ: রাজাভাতখাওয়ার গারো বনবস্তিতে ঢোকার রাস্তা বাঁশ দিয়ে আটকে দিয়েছেন বাসিন্দারা। পালা করে চলছে নজরদারিও। ছবি: নারায়ণ দে

বাইরের লোকের প্রবেশ তো দূরের কথা, লকডাউনের সময় এক পাড়ার লোককে অন্য পাড়ায় যেতে দিতেও রাজি নন ওঁরা। আর তাই ব্যারিকেডে মুড়ে দেওয়া হয়েছে বক্সার জঙ্গল লাগোয়া বিভিন্ন বনবস্তির রাস্তা। এলাকার বাসিন্দারা নিজেরাই বাঁশ, কাঠ— যে যেটা পেয়েছেন তা দিয়েই তৈরি করেছেন ব্যারিকেড। তাঁদের একটাই কথা, ‘‘গোটা সমাজকে সুস্থ রাখতে গেলে আগে নিজেকে সুস্থ রাখতে হবে। আর সেই কারণেই এই ব্যবস্থা।’’

বক্সার জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় অনেকগুলি বনবস্তি রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারা কেউ পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, কেউ আবার শহরে ছোটখাটো নানা কাজ করেন। কাউকে আবার নির্ভর করে থাকতে হয় একশো দিনের কাজের উপরেও। বনবস্তির বহু বাসিন্দা ভিন্‌রাজ্যে কাজের সন্ধানেও যান। লকডাউন শুরুর মুহূর্তে তাঁদের বাড়ি ফিরে আসা নিয়ে চিন্তা বেড়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। বাড়িতে ফেরা ওই শ্রমিকেরা যাতে চোদ্দো দিন কোয়রান্টিনে থাকেন, পালা করে সেদিকেও নজর রাখছিলেন বস্তিবাসীরা।

তার পরে শুরু হয় অন্য চিন্তা। সরকারি নির্দেশ সত্বেও আলিপুরদুয়ার শহরের নানা জায়গায় সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে না বলে নানা মহল থেকে বেশ কিছুদিন থেকেই অভিযোগ তোলা হচ্ছে। রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলের পাশে বাজার পাড়া এলাকার বাসিন্দা গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘লকডাউন সত্বেও আলিপুরদুয়ার শহর ও জেলার নানা প্রান্তের মানুষ প্রায়ই এদিকে ঘুরতে চলে আসেন। ঘুরতে ঘুরতে ডিমা নদীর সেতুর পাশাপাশি বিভিন্ন সময় বনবস্তিতেও যান তাঁরা। আর সে জন্যই এই ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছেন বিভিন্ন বনবস্তির বাসিন্দারা।’’

বাজারপাড়ার ঠিক কাছেই অবস্থিত গাড়ো বনবস্তি। সেখানকার বাসিন্দা কালু লামা বলেন, ‘‘গোটা সমাজকে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচাতে হলে আগে নিজেকে সুস্থ রাখতে হবে। সেই জন্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা খুবই জরুরি। কিন্তু আমাদের এখানে প্রতিদিনই নানা কাজে অনেক মানুষ বাইরে থেকে আসেন। আর সেই কারণেই আমাদের এই ব্যারিকেড। এই মুহূর্তে আমাদের এখানে এক পাড়ার লোককেও অন্য পাড়ায় যেতে দেওয়াও হচ্ছে না।’’

রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ববি লামা বলেন, ‘‘বনবস্তিতে থাকেন বলে অনেকেই আমাদের এখানকার মানুষদের দূরে সরিয়ে রাখেন। কিন্তু তাঁরা যে অনেক শিক্ষিত মানুষের চেয়েও বেশি সচেতন, তা তাদের এই পদক্ষেপগুলিই প্রমাণ করে।’’ বক্সার জঙ্গল লাগোয়া বিভিন্ন বনবস্তির এই পদক্ষেপ থেকে শহরের মানুষেরাও শিক্ষা নেবেন বলে আশা আলিপুরদুয়ার জেলার স্বাস্থ্য দফতরেরও।

Buxar Coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy