কার্তিক মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।
বাবার দাহকার্যের পরে নদীতে স্নান করতে নেমে জলে ডুবে মৃতু হল ছোট ছেলের। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন বীরপাড়া এলাকায় কালজানি নদীতে। এ দিন সকালে মারা যান বীরপাড়া চৌপথি এলাকার বাসিন্দা প্রাণবল্লভ মজুমদার (৮০)। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ কালজানি নদীর পাড়ে শ্মশানে শেষকৃত্যের তোড়জোর শুরু করেন পরিজনেরা। সেই সময় স্নান করতে নেমে তলিয়ে যান প্রাণবল্লভবাবুর ছোট ছেলে কার্তিক মজুমদার (২৫)। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ জানান, এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃতুর মামলা রুজু করা হয়েছে।
মৃতদের আত্মীয় আলোক মজুমদার জানান, প্রাণবল্লভবাবুর ছয় ছেলে। এক ছেলে ভিন রাজ্যে থাকেন। এ দিন বাড়ি থেকে অন্য চার ভাইয়ের সঙ্গে বাবার মৃত দেহ শ্মশানে নিয়ে আসেন কার্তিক। বড় ভাই প্রবীর মজুমদার কালজানি নদীতে স্নান করে আসেন। সবাই তখন প্রাণবল্লভবাবুর দেহ চিতায় তোলার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। তখন একাই স্নান করতে নামেন কার্তিক। কিছু ক্ষণ করে সবার খেয়াল হয় কার্তিক নেই। শুরু হয় খোঁজ। শ্মশানযাত্রী থেকে স্নান করতে আসা সবাই নদীতে ঝাঁপান তাঁকে খুঁজতে। প্রায় ২০ মিনিট খোঁজাখুঁজির পরে তিনশো মিটার দূরে মাছ ধরার জন্য পোঁতা বাঁশে আটকে থাকতে দেখা যায় কার্তিককে। সঙ্গে সঙ্গে আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। একই শ্মশানে দাহ করা হয় কার্তিককেও।
ঘটনার পর কার্তিকের বৃদ্ধা মাকে দেখা যায় বার বার মূর্ছা যেতে। কার্তিকর দাদা, প্রবীরবাবু বলেন, “আগে আমি নদীতে স্নান করে এসেছি। ও বোধয় গভীর জলে চলে গিয়েছিল।” আর এক দাদা প্রণববাবু জানান, ভাই বাড়িতে কামারের কাজ করত। বিয়ে করেনি। কী ভাবে এই ঘটনা ঘটে গেল বুঝতে পারছি না।
অলোবাবুর কথায়, “এই সময় কালজানি নদীতে জল নেই। হেঁটেই নদী পার করা যায়। তবে শ্মশানের কিছু কাছে একটি জায়গায় প্রায় ১০-১২ ফুট গভীর রয়েছে। সেখানে চোরা স্রোত রয়েছে। ভুল করে সেই দিকেই চলে গিয়েছিল কার্তিক। ও সাঁতার জানত না। তাতেই মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy