প্রস্তুতি: বড়দেবীর প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হবে। নিজস্ব চিত্র
যূপছেদনের এক মাসের মাথায় আজ মঙ্গলবার পাল্কিতে করে দেবীবাড়ি মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হবে প্রায় ১১ ফুট লম্বা ময়না কাঠের দণ্ড। ওই দণ্ডটিকেই কাঠামোর উপরে শক্তিদণ্ড হিসেবে বসানো হবে। করা হবে ধর্মপাঠ পুজো। নিয়ম মেনে দু’দিন ‘হাওয়া খাওয়া’র পরে শুক্রবার থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হবে। প্রাচীন সমস্ত রীতি মেনে এ বারেও কাজ এগোচ্ছে। বংশানুক্রমিক ভাবে ওই প্রতিমা গড়ছেন প্রভাত চিত্রকর। এ বার ওই প্রতিমা তৈরিতে নিজের ছেলের হাতেখড়ি করানোরও পরিকল্পনা নিয়েছেন তিনি।
চিত্রকর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রভাতবাবুর ছেলে বাবলা কলেজের গণ্ডি পেরিয়েছেন। পারিবারিক সূত্রে শিখেছেন মৃৎশিল্পের কাজ। তবে বড়দেবীর মতো প্রতিমা তৈরিতে হাত লাগাননি। এ বার হাতেকলমে সেই কাজ শিখবেন বাবার কাছে।
প্রভাতবাবু বলেন, “বাবা ভবেন্দ্র চিত্রকর, জ্যাঠা শিশির চিত্রকররা আগে বড়দেবীর প্রতিমা করতেন। আমি দায়িত্ব সামলাচ্ছি তাও প্রায় দুই দশক। এ বার ছেলেকে এই কাজে যুক্ত করব। এতে পারিবারিক পরম্পরা বজায় থাকবে। সময় থাকতে ছেলেকে কাজ শেখালে কোনও সমস্যা হলেও সে সামাল দিতে পারবে।’’ তিনি জানান, শুক্রবার ২১ দিনের মধ্যে প্রতিমা তৈরির লক্ষ্যে কাজ শুরু করবেন তিনি। প্রতিমা তৈরির জন্য ওই ক’দিনই দেওয়া হয়। দেবোত্তরের এক কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “উনি ওই আগ্রহের কথা আমাদেরও বলেছেন। সত্যিই ভাল ভাবনা।”
দেবোত্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জনশ্রুতি রয়েছে, মহারাজ নরনারায়ণের স্বপ্নে দেখা দেবীরূপই প্রতিমায় ফুটিয়ে তোলা হয়। বড়দেবী এখানে রক্তবর্ণা। দেবীর এক দিকে থাকে সাদা সিংহ, অন্য দিকে রয়েছে বাঘ। দু’পাশে কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী নেই। দেবীর সঙ্গে থাকেন জয়া ও বিজয়া।
একসময় ওই পুজোয় নরবলির রেওয়াজ ছিলও কথিত রয়েছে। এখনও নররক্ত ভেজানো পুতুল বলি দেওয়ার রীতি চালু রয়েছে।
দেবোত্তর সূত্রের খবর, প্রায় সাড়ে ১১ ফুট উঁচু বিশালকায় বড়দেবীর প্রতিমা গড়তে ৪ কুইন্টাল মাটি লাগে। এ ছাড়াও ৫০কেজি রশি, ২৫টি বাঁশ, কাঠ, দু’হাজার আঁটি খড় দরকার হয়। রঙেও ভাল খরচ হয়। দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্য তথা কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক অরুন্ধতী দে বলেন, “প্রাচীন রীতি মেনে বড়দেবীর পুজোর সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ওই পুজোয় আমরা কোনও খামতি রাখতে চাইছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy