একই এপিক নম্বরে দু'টি ভোটার কার্ড। এক জন কোচবিহারের নাটাবাড়ির বাসিন্দা, অন্য জন অসমের গোলকগঞ্জের। তৃণমূলের দাবি, ভোটার তালিকা থেকে কোচবিহারের ভোটারদের একটি অংশের নাম কেটে দেওয়ার জন্য একই এপিক নম্বরে উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, রাজস্থান, গুজরাত ও অসম থেকে ভুয়ো নাম তোলা হয়েছে। বিজেপিশাসিত রাজ্যে এটা পরিকল্পিত ভাবে করা হয়েছে। অভিযোগ মানেনি বিজেপি।
নাটাবাড়ির প্রাক্তন বিধায়ক তৃণমূলের রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘পাশের রাজ্য অসম বিজেপিশাসিত। কোচবিহার লাগোয়া ওই রাজ্য। স্বাভাবিক ভাবেই একাধিক সুবিধা নিতে এ সব করেছে বিজেপি।’’ বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, ‘‘রাজ্যের শাসক দল নানা ভাবে ভুয়ো ভোটারের নাম তালিকায় রেখেছিল। এখন ধরা পড়ার ভয়ে উল্টো কথা বলছে।’’ মাথাভাঙায় এ দিন ভুয়ো ভোটার কাণ্ডে বিজেপির যোগ রয়েছে দাবি করে শহরের পশ্চিমপাড়ায় বিক্ষোভ আন্দোলনে নামে রাজ্যের শাসক দল। সেখানে ছিলেন জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ।
আলিপুরদুয়ারে বিয়ে অথবা কর্মসূত্রে যাঁরা অন্যত্র পাড়ি দিয়েছেন তাঁদের অনেকেই ভোটার তালিকা থেকে নিজেদের নাম অন্যত্র সরাতে তৎপর হয়েছেন। বিরোধীদের কটাক্ষ, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই 'জ্যান্ত' মানুষকে 'ভূতুড়ে' বলছেন। তাই অনেকেই ভয় পাচ্ছেন ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার। তৃণমূল অবশ্য সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
আলিপুরদুয়ার জেলা জুড়ে তৃণমূলের নেতারা ভুয়ো ভোটারের খোঁজে অভিযান চালাচ্ছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে তৃণমূলের নেতারা যখন ভোটার তালিকা নিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন, সেই সময় ভিন্ রাজ্যে কর্মসূত্রে থাকা মানুষজন এবং বিয়ের সূত্রে যাঁরা অন্য জায়গায় থাকছেন তাঁদের অনেকে নাম অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছেন। যার ফলে অনেককে অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে।
বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সাধারণ সম্পাদক মিঠু দাস বলেন, ‘‘ভূতুড়ে ভোটারের কথা বলে তৃণমূল সাধারণ ভোটারদের মনে ভয় ঢোকাচ্ছে এটা আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। এর জবাব আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল পাবে।’’ রাজ্য তৃণমূলের সম্পাদক মৃদুল গোস্বামীর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি কী বলছে আমাদের তাতে কিছু যায় আসে না। ভূতুড়ে ভোটার যে রয়েছে এটা দিল্লি এবং বালুরঘাটের নির্বাচনে স্পষ্ট হয়েছে। যাঁরা ভোটার নাম অন্যত্র তুলতে চাইছেন তাঁদের স্বাগত। সমস্ত প্রক্রিয়া নির্বাচন কমিশনের আইন মেনেই করা হয়ে থাকে। এখানে বিজেপি ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)