বকেয়া মজুরি মেটানোর দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছেন ডানকান গোষ্ঠীর নাগেশ্বরী চা বাগানের শ্রমিকরা। বুধবার সকাল থেকে মেটেলির নাগেশ্বরী চা বাগানে শ্রমিক বিক্ষোভ শুরু হয়। বকেয়া মজুরি না মেটানো পর্যন্ত শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবেন না বলেও এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন। যার জেরে ফের অচলাবস্থার মুখে ডানকান গোষ্ঠীর একটি চা বাগান।
বেশ কয়েকমাস অচলাস্থা চলার পরে গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে নাগেশ্বরী বাগানে ফের স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হয়। বকেয়া মজুরিও মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে মালিকপক্ষের তরফে ঘোষণা করা হয়। প্রথা অনুযায়ী নাগেশ্বরী চা বাগানে প্রতি সপ্তাহে অগ্রিম মজুরি দেওয়া হয়। সেই মতো চলতি মাসে অগ্রিম মজুরি মেটানো হলেও, গত এপ্রিল মাসের মজুরি বকেয়া থেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ। শ্রমিকদের তরফে এ দিন হুমকি দেওয়া হয়েছে, আগামী দু’দিনের মধ্যে বকেয়া মজুরি না মেটানো হলে ফের কারখানাক গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। বাগানের মালিকপক্ষ অবশ্য এ দিনও আশ্বাস দিয়েছেন শ্রমিকদের মজুরি মেটানো হবে। বাগানের ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার প্রলয়প্রতিম বসু বলেন, ‘‘শ্রমিকদের বিক্ষোভের কথা শুনেছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে বাগানের সর্বত্র কাজ বন্ধ ছিল এমন নয়। একটি অংশে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে।’’
শ্রমিকদের দাবি, গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাগান খোলার সময়েই কী ভাবে বকেয়া মজুরি মেটানো হবে, তা নিয়ে চুক্তি হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ সেই চুক্তি মানছেন না বলে শ্রমিকদের অভিযোগ। কংগ্রেস প্রভাবিত চা শ্রমিক সংগঠন এনইউপিডব্লুর মেটেলি ব্লকের নেতা মানিক শীল বলেন, ‘‘গত এপ্রিলের বকেয়া মজুরি এখনো মিটছে না। বাগান খোলার সময় চুক্তিতে শ্রমিকদের বকেয়া যেভাবে মেটাবার কথা তাও মানছে না বাগান কর্তৃপক্ষ। সেকারনেই বাগানে কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের তরফেও এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন শ্রমিকেরা। তৃণমূলের শ্রমিক ইউনিটের নেতা রবি ওঁরাও বলেন, ‘‘শ্রমিকরা বাগানে নিয়মিত কাজ চালিয়ে গেলেও, মজুরি কবে মিটবে তাই জানে না শ্রমিকেরা। এভাবে অনিশ্চিতের মধ্যে পড়ে না থেকে অনেকেই বাইরে কাজ খুঁজছেন। দ্রুত বকেয়া না মিটলে আরও বড় আন্দোলনে আমরা নামতে একপ্রকার বাধ্যই হব।’’
নাগেশ্বরী চা বাগানের এই কর্মবিরতির খবর পৌঁছেছে ডানকান গোষ্ঠীর কর্তাদের কাছেও। গোষ্ঠীর সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট ম্যানেজার চন্দ্রপ্রকাশ কপুর জানিয়েছেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে নাগেশ্বরীতে স্বাভাবিক কাজ কর্ম শুরু হয়। এখনও পর্যন্ত শ্রমিক মজুরি বাবদ এখনো পর্যন্ত ৯০ লক্ষ টাকা দেনা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রপ্রকাশবাবুর দাবি, ‘‘একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে বকেয়া মেটানো হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের সদ্দিচ্ছাও নিশ্চই সকলেই বুঝতে পারছেন। আশা করব, শ্রমিকরাও একটু সংযত পদক্ষেপ করবেন।’’ দীর্ঘদিন অচলাবস্থা চলতে থাকার পরে মালবাজার মহকুমায় থাকা ডানকানের বাগরাকোট, কিলকোট এবং নাগেশ্বরী বাগানে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরে। তবে এ দিন নাগেশ্বরী চা বাগানে নতুন করে বিক্ষোভ-কর্মবিরতি শুরু হওয়ায় ফের আশঙ্কায় শিল্পমহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy