প্রস্তুতি: এই ঘুড়ি নিয়েই বেচতে যাবে তিন ভাই। নিজস্ব চিত্র।
শীতের আকাশে উড়ছে রঙ-বেরঙের ঘুড়ি। খোলা আকাশের নীচে সেই ঘুড়ি বিক্রি করেই এখন দিন কাটছে তিন খুদে ভাইয়ের। তাদের কেউ সপ্তম, কেউ বা আবার ষষ্ঠ কিংবা দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া। স্কুল না থাকায় দিনভর ঘুড়ি বিক্রেতা হয়েই এখন সময় কাটছে পুরাতন মালদহের সাহাপুর সেতু মোড়ের শুভ, অভিজিৎ চৌধুরীদের। ছেলেদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে ফের স্কুল খোলার দাবি পরিবারের।
শহরতলি হলেও সাহাপুর সেতু মোড়ের সিংহভাগ পরিবারই সাধারণ। মাত্র তিন কিলোমিটারের মধ্যেই সাহাপুর হাই স্কুল রয়েছে। মহানন্দা নদী পার হলেই ইংরেজবাজার শহরের একাধিক স্কুল। স্থানীয়দের দাবি, করোনা আবহে দীর্ঘ সময় পড়াশোনা বন্ধ থাকায় গ্রামে স্কুল ছুটের সংখ্যা বেড়েছে। তৃতীয় ঢেউয়ের আগে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হলেও স্কুলে গরহাজির ছিল গ্রামের বহু পড়ুয়া। তাদের অনেকেই এখন রোজগেরে হয়ে উঠেছে। এখন রোজগেরের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে গ্রামের খুদে পড়ুয়াদেরও।
রাস্তার ধারেই বাস শুভ, অভিজিৎ চৌধুরীদের। শুভ সাহাপুর হাই স্কুলের সপ্তম এবং অভিজিৎ শহরের ধীরেন সাহা হাই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। তারা খুড়তুতো ভাই। তাদের সঙ্গে ঘুড়ি বিক্রিতে যোগ দিয়েছে তাদেরই অপর খুড়তুতো ভাই, দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া সোনা চৌধুরী। তিন জনেরই বাবা দিনমজুরি করেন। সকাল হতেই ঘুড়ি কিনতে শহরে যায় শুভরা। তার পরে নিজেরাই হয়ে ওঠে ঘুড়ি বিক্রেতা। শুভ জানায়, “একটি ঘুড়ি বিক্রি করলে পাঁচ টাকা লাভ হবে। দিনভর ঘুড়ি নিয়ে বসে থাকলে দু’শো টাকা লাভ হবেই।” আর পড়াশোনা? অভিজিৎ জানায়, “এখন তো স্কুল নেই। স্কুল খুললে ফের পড়াশোনা করব।” তার মা তরিতা চৌধুরী বলেন, “করোনা থাকলেও এখন সবই খুলে যাচ্ছে। স্কুল কেন খুলছে না, বুঝতে পারছি না। স্কুল বন্ধ থাকায় আমাদের মতো সাধারণ পরিবারের ছেলেমেয়েদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।” মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) শম্পা হাজরা বলেন, “সচেতনতার কাজ ফের শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy